ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

শ্রীনগরে অবৈধ ড্রেজারে সয়লাব

আড়িয়াল বিলসহ কৃষি জমি হুমকির মুখে

আড়িয়াল বিলসহ কৃষি জমি হুমকির মুখে

নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে এক শ্রেণির অসাধু ভূমিদস্যু সিন্ডিকেট সদস্যরা অবৈধ ড্রেজার ও ড্রাম ট্রাক দিয়ে বালু ভরাটের মাধ্যমে গিলে খাচ্ছে আড়িয়াল বিলসহ উপজেলার কৃষিজমি। ড্রেজার ও ড্রাম ট্রাক দিয়ে কৃষি ও সরকারি খাস জমিসহ খাল, জলাশয়, পুকুর ভরাটের ফলে আড়িয়াল বিলের পানি আসতে না পারায় বিলের মৎস্য ও শস্য ভাণ্ডার পুরোপুরি হুমকিতে পড়েছে এবং ছোট বড় খাল, জলাশয় ও পুকুর ভরাটে জলাবদ্ধতার সৃষ্ট হয়ে বিপাকে পড়েছেন হাজার হাজার কৃষকসহ সাধারণ মানুষ। কৃষি জমি ভরাট করে ভূমিদুস্যুরা গড়ে তুলেছে আবাসনের নামে অবৈধ হাউজিং প্রকল্প। এর ফলে দেশের কৃষি উৎপাদনের বিরাট একটি অংশ দেশের কৃষি খাদ্য উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে। অবৈধ ড্রেজার ও ড্রাম ট্রাক দিয় কৃষি ও খাস জমি ভরাট হচ্ছে। এতে অল্প সময়ের ব্যবধানে আড়িয়াল বিলসহ উপজেলার বেশিরভাগ অংশের কৃষি জমিই আর থাকবে না বলে জানান স্থানীয় কৃষকরা। অবৈধ ড্রেজারের পাশাপাশি বালুভর্তি বড় বড় ড্রাম ট্রাক দিয়ে দিনরাত কৃষিজমি ভরাট করা হচ্ছে সমান তালে। এই ড্রাম ট্রাক চলাচলে গ্রামীণ কাঁচা-পাকা সড়কসহ সরকারের হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মহাসড়ক, আন্তঃসড়কগুলোও পড়েছে হুমকির মুখে। নির্মাণ বা সংস্কারে বছর না পেরুতে সড়কগুলো এবড়োখেবড়ো হয়ে সড়কের পাশ ভেঙে জনচলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। ঢাকা মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে, স্বপ্নের পদ্মা সেতু ও রেলওয়ে নির্মাণে এই অঞ্চলের জমির মূল্যে বেশ কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ায় এখানে গড়ে উঠেছে ছোট-বড় শতাধিক হাউজিং কোম্পানির অপরিকল্পিত নগরায়ন। আড়িয়াল বিলে গড়ে তুলেছে রয়েল প্রপারটিস, ধরিত্রী এবং এক্সপ্রেসওয়ের পূর্ব পাশে ঠিকানা, প্রিমিয়াম ভ্যালি, কৃষ্ণচূড়া নামে পরিবেশের ছাড়পত্রহীন নামে-বেনামে হাউজিং কোম্পানি। পরিবেশের ছাড়পত্রহীন এসব হাউজিং প্রকল্পে ছাড়পত্রহীন বহুতল বিল্ডিং উত্তোলনে নেই কোনো ড্রেনেজ ব্যবস্থা। সচেতনমহল মনে করেন, এভাবে যদি আবাদি জমি অকৃষি খাতে চলে যেতে থাকে এবং কৃষি জমি অনাবাদি হয়, তবে বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে- যা আমলে নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের কোনো বিকল্প থাকতে পারে না। বিভিন্ন কোম্পানি প্রায় সারা দেশেই শত শত বিঘা জমি কিনছে। এতে কৃষকরা ভূমিচ্যুত হচ্ছে। কোম্পানিগুলো প্রথম দিকে কৃষি কাজের নাম করে কেনা জমিতে গাছপালা রোপণ বা বপন করে। পরে জমিটিতে মাটি ভরাট করে অন্য কাজে লাগায়। সরেজমিন আড়িয়াল বিল এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শুষ্ক মৌসুমে ভূমিদস্যুরা স্থানীয় কৃষকদের লোভ দেখিয়ে তাদের কৃষি জমি থেকে মাটি কেটে বিশালাকৃতির স্তূপ রেখে বর্ষা মৌসুমে বড় বড় ট্রলার যোগে দেশের বিভিন্ন ইট ভাটা নিয়ে বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছি এসব সিন্ডিকেটের সদস্যরা। পরিবেশ অধিদপ্তর, মুন্সীগঞ্জ উপ-পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, আড়িয়াল বিলে এ পর্যন্ত কোনো আবাসন প্রকল্পের অনুমতি আমরা দেইনি। অন্যগুলোর বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত