চিকিৎসার নামে ২৩ লাখ টাকা প্রতারণা, মৃত্যু শয্যায় মিজানুর

প্রকাশ : ৩১ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  সাগর আহম্মেদ, কালিয়াকৈর (গাজীপুর)

জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে এক রোগীর ২৩ লাখ টাকার উপরে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছে একটি দালাল চক্র। চিকিৎসার নামে তাকে পাশের রাষ্ট্র ভারতে ফেলে পালিয়ে দেশে ফিরে দালাল চক্রটি। এ ঘটনায় ওই রোগীর স্ত্রী বাদী হয়ে গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানায় একটি অভিযোগ করেন। তবে বিনাচিকিৎসায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন ওই রোগী। আর প্রতারণার শিকার হয়ে সর্বস্ব হারিয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন অসহায় পরিবার। বাবলু, নাসরিন মুক্তি, ইয়াছিন আলী, ফিরোজ, তানভীর ও খাজা মোহাম্মদ আলী মিলে ভারতে লিভার অপারেশনের জন্য তার সঙ্গে সাড়ে ২৮ লাখ টাকা চুক্তি হয়। এর মধ্যে ভারতে চিকিৎসাসহ যাবতীয় খরচের দায়বার নেন ওই দালাল। নিজের জীবন বাঁচাতে ব্যক্তিগত গাড়ি ও জমি বিক্রি করে মিজানুর। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টার দিকে উপজেলার সফিপুরে চাচা-চাচির বাসায় বসে চুক্তি অনুয়ায়ী প্রথম ধাপে সাড়ে ৬ লাখ টাকা নেয় দালাল চক্র। এরপর চক্রটি দ্বিতীয় ধাপে ১২ মে ১৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা নেয়। গত ১৫ মে ওই রোগী ও তার স্ত্রীকে নিয়ে ভারতের দিল্লিতে নিয়ে যান দালাল বাবলু। সেখানে নিয়ে একটি হাসপাতালে ভর্তি এবং থাকার ব্যবস্থা করেন ওই দালাল। এরপর তৃতীয় ধাপে ১৫ জুন ব্যাংকের মাধ্যমে ৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। সর্বমোট ২৩ লাখ ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে বাকি টাকা অপারেশনের পরে নেবেন বলেও জানায় দালাল বাবলু। কিন্তু ওই দালাল বাবলু হাসপাতালে কোনো টাকা জমা না দিয়ে কৌশলে দেশে চলে আসে। অপর দালাল তানভীর সেখানে গেলেও শিরিন নামে আরেকজনকে দায়িত্ব দিয়ে কৌশলে চলে আসেন। ওই শিরিনকেও আরো দেড় লাখ টাকা দিতে বাধ্য হন অসুস্থ মিজানুর। তখন ওই শিরিন তাকে আরো ২১ হাজার ডলার জমা দিলে তার অপারেশন হবে জানালে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন রোগীসহ তার পরিবার। আর টাকা না থাকায় চিকিৎসা না নিয়ে গত ১৭ জুলাই তারা দেশে ফিরেন মিজানুর। প্রধান অভিযুক্ত বাবলু মিয়া এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে কথা বলতে অস্বীকার করে জানান, মিজানুরের সঙ্গে কোনো কথা হয়নি। অপর অভিযুক্ত নাসরিন মুক্তি মুঠোফোনে জানান, কালিয়াকৈর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. রাফসান মোল্লা জানান, এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।