মেহেরপুরের মাঠজুড়ে সোনালি আঁশের সমারোহ থাকলেও কৃষকের কপালে চিন্তার ভাঁজ। বৈরী আবহাওয়ায় এ বছর সময়মতো বৃষ্টি হয়নি। তাপমাত্রাও বেশি। এতে লম্বা হয়নি পাটগাছ। একইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে ক্ষেতে হানা দিয়েছে পোকা। ফলে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। কীটনাশক ছিটিয়েও মিলছে না প্রতিকার। ফলে ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন তারা। কৃষকরা জানান, অতিরিক্ত সেচ, সার ও কীটনাশক প্রয়োগের কারণে পাট আবাদের খরচ বেড়েছে কয়েক গুণ। কিন্তু পোকার আক্রমণ ঠেকানো যাচ্ছে না। এ বছর বিঘা প্রতি পাঁচ-ছয় মণ পাট উৎপাদন হবে। যা গত বছরেরও অর্ধেক। মেহেরপুর সদর উপজেলার ফতেপুর গ্রামের কৃষক মিলন বলেন, এ বছর তিন বিঘা জমিতে পাটের চাষ করেছি। প্রচণ্ড রোদে পাট যে পরিমাণ বৃদ্ধি হওয়ার কথা তা হয়নি। পাশাপাশি পাটের জমিতে শুরু হয়েছে তিড়িং পোকা ও আঁচা পোকা আক্রমণ। এই পোকা পাটের পাতা খেয়ে ঝাঁঝরা করে দিচ্ছে। ফলে পাটের যে পরিমাণ ফলন হওয়ার কথা হবে না। তাই পাট কেটে অন্য ফসল চাষ করার চিন্তা করছি। মেহেরপুর সদর উপজেলার ফতেপুর গ্রামের আরেক কৃষক নিজাম উদ্দীন বলেন, প্রচণ্ড রোদে পাট বাড়ছে না। পাটের জমিতে শুরু হয়েছে তিড়িং ও আঁচা পোকার আক্রমণ। এ পোকা পাটের পাতা খেয়ে ঝাঁঝরা করে দিচ্ছে। কীটনাশক ছিটিয়েও করে কাজ হচ্ছে না। এতে পাট মরেও যাচ্ছে। একই গ্রামের আরেক কৃষক ফজলুল হক বলেন, অনাবৃষ্টির কারণে একদিকে পাট শুকিয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে পোকার আক্রমণে পাট ঝাঁঝরা হয়ে যাচ্ছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর পাটের ফলন অর্ধেক হবে। যে কারণে পাট চাষ করে আমরা লোকসানে আছি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শঙ্কর কুমার মজুমদার বলেন, বৈরী আবহাওয়া, সেমি লুপার (তিড়িং পোকা), সোয়া লুপার (আঁচার) আক্রমণ থেকে পাটক্ষেত বাঁচাতে কৃষকদের অনুমোদিত কীটনাশক প্রয়োগের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
পাশাপাশি পাটক্ষেতে দড়ি দিয়ে কেরোসিন তেল প্রয়োগ করলে ভালো ফল পাবেন কৃষকরা। কী পরিমাণ পাটক্ষেত ক্ষতি হয়েছে তা নিয়ে কাজ চলছে। তিনি আরো বলেন, এ বছর ২২ হাজার হেক্টর জমিতে পাটচাষের লক্ষ্যমাত্রা আছে। যা থেকে ৩ লাখ ৮ হাজার বেল পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা আছে।