ভাঙনঝুঁকিতে গ্রামবাসী

সুন্দরবন সংলগ্ন নদী-খাল থেকে বালু উত্তোলন

প্রকাশ : ০১ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি

সাতক্ষীরার শ্যামনগরের মালঞ্চ নদীর মাধবখালী খাল ও পশুরতলা নদী থেকে ড্রেজার মেশিন ব্যবহার করে অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে। এসব বালু বাল্কহেডে পার্শ্ববর্তী কদমতলা ফরেস্ট অফিসের পাশে স্তূপ করে রাখা হচ্ছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, কদমতলা ফরেস্ট অফিসের অদূরে উপকূল রক্ষা বাঁধ সংস্কারের কাজ চলছে। এ প্রকল্পের ঠিকাদারকে সরবরাহের জন্য স্থানীয় দুই বালু ব্যবসায়ী সুন্দরবন সংলগ্ন নদী-খাল থেকে অবৈধভাবে বালু তুলছেন। এদিকে ভাঙনকবলিত উপকূল রক্ষা বাঁধ সংস্কারের জন্য নিকটবর্তী নদী-খাল থেকে বালু তোলায় আপত্তি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। স্থানীয় গ্রামবাসী জানায়, ভাঙন শঙ্কায় থাকা সুন্দরবন সংলগ্ন এসব এলাকা থেকে বালু তুলতে নিষেধ করা সত্ত্বেও প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ীরা তা শুনছে না। ভাঙনকবলিত উপকূল রক্ষা বাঁধের পূর্ব কালীনগর এলাকার বাসিন্দা শচীন্দ্র নাথ সরকার বলেন, মালঞ্চ নদী তীরবর্তী বাঁধ প্রায় প্রতি বছরই ভাঙছে। এমন ভাঙনপ্রবণ এলাকার বাঁধ সংস্কার কাজে একই নদীর বালু তুলে বরং ভাঙনকে ত্বরান্বিত করা হচ্ছে। বালু উত্তোলনকারীদের নিষেধ করা সত্ত্বেও প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের ভয় দেখিয়ে তারা দিব্যি বালু তোলা অব্যাহত রেখেছে। একই গ্রামের সহকারী অধ্যাপক স্বপন কুমার মণ্ডল জানান, বালু ব্যবসায়ীরা নদী থেকে বালু তোলা অব্যাহত রাখায় তারা ভাঙন আতঙ্কে ভুগছেন। বাল্কহেডের চালক মিলন হোসেন জানান, তিনি সুন্দরবনের পার্শ্ববর্তী দুটি স্থান থেকে থেকে বালু তুলছেন। সেখান থেকে বালু তোলার অনুমতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বাল্কহেডের মালিক হাবিবুর রহমানের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। হাবিবুর রহমান জানান, বাঁধ মেরামতের জরুরি কাজের জন্য জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী জাকারিয়া সাহেব ও স্থানীয় চেয়ারম্যান বাল্কহেডটি ভাড়ায় নিয়েছেন। বালুমহাল ইজারা নেওয়া ব্যক্তিরা সেখান থেকে বালু তোলার অনুমতি দিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী জাকারিয়া হোসেন জানান, মেসার্স অলি এন্টারপ্রাইজ কদমতলা এলাকায় ১২৫ মিটার ভাঙনকবলিত অংশে জিও টিউব স্থাপনের কাজ করছে। ঠিকাদার কার মাধ্যমে কোথা থেকে বালু সংগ্রহ করছেন, সে বিষয়ে তার জানা নেই। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাবেক সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল জানান, অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলার ফলে জীব ও প্রাণবৈচিত্র্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়তে পারে।