ঢাকা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নেত্রকোণার ভারতীয় সীমান্তে চোরাচালান বাড়ছে

নেত্রকোণার ভারতীয় সীমান্তে চোরাচালান বাড়ছে

নেত্রকোণার দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা উপজেলার ভারতীয় সীমান্তে চোরাচালানি ভয়াবহ রূপ ধারণের অভিযোগ উঠেছে। এই দুই উপজেলার কোনো না কোনো গোপন পথে প্রায় প্রতিদিনই এক শ্রেণির ব্যবসায়ী শুল্ক ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন প্রকার পণ্য আমদানি করছেন বলে অভিযোগে জানা গেছে। এসব মালামাল অনেকটা প্রকাশ্যেই বারহাট্টা, নেত্রকোণা সদর, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হচ্ছে। সরবরাহকালে মাঝেমধ্যে ধরাও পড়ছে বিজিবি ও পুলিশের হাতে। তবুও থামছে না এই চোরাচালন। সীমান্তবর্তী বিভিন্নজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, ভারত থেকে অবৈধপথে পণ্য আমদানিকে কেন্দ্র করে ওইসব এলাকায় এক গোপন শ্রমিক শ্রেণি তৈরি করা হয়েছে। তারা ওপার থেকে পাহাড়ের চোরা-গুপ্তা পথে মাথায় বা কাঁধে করে চিনি, কাপড়, প্রসাধনী, মশলা ও মদসহ বিভিন্ন প্রকার পণ্য বাংলাদেশের অভ্যন্তরে নিয়ে আসে। এসব পণ্য উপজেলা দুইটির সদরসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে গুদামজাত করা হয়। পরে সেখান থেকে ট্রাক, লরি, অটোরিক্সা, মাইক্রোবাস এমনকি এম্বোল্যান্সে করে পৌঁছে যায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। চোরাচালান বন্ধে বিজিবি ও পুলিশ তৎপর রয়েছে। তবে তাদের হাতে যে পরিমাণ মালামাল ধরা পড়ে, তা চোরাচালানির তুলনায় অতি সামান্যই। সর্বশেষ গত সোমবার দুপুরের দিকে চোরাচালানির ভারতীয় চিনির একটি বড় ধরনের চালান ধরা পড়েছে বারহাট্টা থানা পুলিশের হাতে। বারহাট্টা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খোকন কুমার সাহা বলেন, গত সোমবার পৌনে ৩টার দিকে অত্র বারহাট্টা উপজেলার দেউলী জামে মসজিদের নিকট থেকে ৮ হাজার ২৫০ কেজি ভারতীয় চিনিসহ বহনকারী দুইটি পিকআপ জব্দ করা হয়। এসব চিনি কলমাকান্দা থেকে আনা হয়েছে বলে পিকআপের চালকরা জানিয়েছে। এর আগে, গত ১৫ জুলাই দুইটার দিকে বারহাট্টা উপজেলা সদরের গোপালপুর বাজারের মোখলেছ মিয়ার মালিকানাধীন ভাড়াটিয়া আমিরুল ইসলাম রনির গোদাম থেকে ৩ হাজার ৫০০ কেজি ভারতীয় চিনি জব্দ করা হয়। এই চিনিও দুইটি লরিতে করে কলমাকান্দা থেকে আনা হয় বলে জানা যায় নেত্রকোণা পুলিশের মিডিয়া সেল থেকে প্রকাশিত তথ্যে জানা যায়, দুর্গাপুর থানা পুলিশ কর্তৃক গত ২৩ জুলাই ৫ হাজার ৪০০ কেজি ভারতীয় চিনি, ২০জুলাই ১৬৩ কোতল ভারতীয় মদ, ১৭ জুলাই ভারতীয় ১৩০ পিস কম্বল ও ২ বোতল মত, ১০ জুলাই ৬৭ বোতল ভারতীয় মদ, ১৬ জুলাই জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ৫ হাজার ৫০০ কেজি ভারতীয় চিনি জব্দ করা হয়। পূর্ববর্তী মাসগুলোয়ও চোরাই পথে আসা ভারতীয় অনেক মালামাল জব্দ করা হয়েছে। বিভিন্ন সূত্রের অভিযোগ, সীমান্তের বাজারগুলোতে অনেকটা প্রকাশ্যেই অবৈধপথে আসা ভারতীয় মালামাল যানবাহনে লোড-আনলোড করা হয়। তারা প্রশ্ন করে বলেন, সীমান্ত থেকে বারহাট্টা বা ঠাকুরাকোণার দূরত্ব প্রায় ৪০ কিলোমিটার। ভারতীয় চিনির মূল প্যাকেট নিয়ে গাড়িগুলো এতদূর আসে কেমনে? এই রহস্যের উন্মোচন ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে চোরাচালানি রোধ করা সম্ভব হবে না।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত