ঢাকা ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বড়াইগ্রামের সাহাবুল ১৬ বছর পর স্বজনদের ফিরে পেলেন

বড়াইগ্রামের সাহাবুল ১৬ বছর পর স্বজনদের ফিরে পেলেন

নাটোরের বড়াইগ্রামে হারিয়ে যাওয়ার ১৬ বছর পর নিজ বাড়িতে ফিরে এসেছেন সাহাবুল নামে এক যুবক। সাহাবুল উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের মৃত আশরাফ হোসেনের ছেলে। দেশের বিভিন্ন স্থানে বছরের পর বছর অনেক খোঁজ করেও না পাওয়ায় নিরাশ হয়ে পড়েছিলেন তার পরিবার। অবশেষে হারানো ছেলেকে কাছে পেয়ে মা সায়েরা বেগম আনন্দের অশ্রুতে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন। সাহাবুলকে এক নজর দেখার জন্য এলাকার নারী পুরুষরা তার বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন। মাত্র ৫ বছর বয়সে মারা যায় বাবা। সংসারের অভাব ঘোচাতে কাজের উদ্দেশ্যে সাহাবুল ২০০৮ সালে প্রথমে মানিকগঞ্জ ও পরে চট্টগ্রামে যান। সেখানে জেলেদের সাথে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার কাজে কাটে তার জীবন। বাড়ি ফিরতে চাইলেও জেলেদের বাধার মুখে আর ফেরা হয়নি তার। হঠাৎ একদিন ট্রলারে মাছ নিয়ে সমুদ্র তীরে ফেরার পর পালিয়ে আসার সময় সড়ক দুর্ঘটনায় মানসিক ভারসাম্য হারায় সে। এরপর থেকে ফরিদপুরে বসবাস করতে থাকে সাহাবুল। গত এক মাস আগে ফরিদপুরের আটরশি এলাকায় সাহাবুলের ফুপাতো ভাই আবুল কালাম কাজের উদ্দ্যেশ্যে যান। সেখানে সাহাবুলকে দেখে চিনতে পারেন তিনি। সেখান থেকে বাড়িতে খবর দিলে মা ভাই বোন ফরিদপুর গিয়ে তাকে বাড়ি নিয়ে আসেন। ১৬ বছর পর তার ফিরে আসায় এলাকায় এখন আনন্দের আমেজ বইছে। সাহাবুল ইসলাম বলেন, মা ও ভাই বোনের জন্য মন কাঁদতো, কিন্তু কোথায় বাড়ি, কোথায় তারা থাকেন ঠিকভাবে মনে করতে পারতাম না। এ কারণেই এতো বছর মা-সহ স্বজনদের আদর-ভালবাসা থেকে বঞ্চিত হয়েছি। এখন আমি সবাইকে ফিরে পেয়ে দারুণ খুশি।

তার ভাই মুরাদ হোসেন জানান, দেশের বিভিন্ন জেলায় আমার ভাইকে খুঁজেছি। কিন্তু দীর্ঘ দিনেও না পেয়ে তাকে পাওয়ার আশা এক প্রকার ছেড়েই দিয়েছিলাম। কিন্তু অবশেষে তাকে ফিরে পেয়ে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি। মা সায়েরা বেগম আনন্দে অশ্রু মুছতে মুছতে বলেন, সন্তান হারানোর বেদনা কাউকে বোঝানো যাবে না। আমার ছেলেটা বেঁচে আছে না মরে গেছে এ দুশ্চিন্তা সব সময় তাড়িয়ে বেড়াতো। এতো বছর পর হলেও আমার ছেলেকে ফিরে পেয়ে আমার কলিজা ঠান্ডা হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত