দুই দশক পর ঠাকুরগাঁওয়ের রেশম কারখানা চালু

প্রকাশ : ০৫ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান ঘটিয়ে দুই দশকেরও বেশি সময় পর চালু হলো ঠাকুরগাঁওয়ের রেশম কারখানা। গত বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে কারখানাটি চালু করা হয়। কারখানাটি চালু হওয়ার মাধ্যমে রেশমশিল্পে সুদিন ফিরবে বলে আশা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। রেশম বোর্ড সূত্রে জানা যায়, বেসরকারি সংস্থা আরডিআরএস ১৯৭৫-৭৬ সালে স্থানীয় বেকার নারী-পুরুষদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে ঠাকুরগাঁও শহরের গোবিন্দনগর এলাকায় ৩ দশমিক ৩৪ একর জমির ওপর রেশম কারখানাটি স্থাপন করে। পরে ১৯৮১ সালের ৩০ জুন সরকারি সিদ্ধান্তে ঠাকুরগাঁও রেশম কারখানাটি রেশম বোর্ডের কাছে হস্তান্তরিত হয়। কারখানাটিতে ২০টি রিলিং বেসিন, ৩টি শক্তিচালিত তাঁত, ১৯টি হস্তচালিত তাঁত ও আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি সংস্থাপিত ছিল। কারখানাটির চলতি মূলধন না থাকায় কারখানা পরিচালনার যাবতীয় অর্থ বোর্ডের উন্নয়ন তহবিল থেকে ঋণ হিসেবে প্রদান করা হয়। ১৯৯৬ থেকে ১৯৯৯ সালে ১৬৩.৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে বিএমআরই প্রকল্পের অধীনে কারখানাটির ভবন বর্ধিতকরণসহ অতিরিক্ত ২০টি শক্তিচালিত তাঁতসহ কিছু আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি সংস্থাপিত হয়। কিন্তু আবর্তক তহবিলের অভাবসহ নানাবিধ কারণে কারখানাটি পরিচালনা সম্ভব হয়নি। ২০০২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ১০ মাস শ্রমিকদের মজুরি প্রদান সম্ভব হয়নি। একপর্যায়ে ২০০২ সালের ৩০ নভেম্বর কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করে কর্মরত ৮৬ জন জনবলকে গোল্ডেন হ্যান্ডসেকের মাধ্যমে চাকরি হতে অব্যাহতি প্রদান করা হয় সুপ্রিয় গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বাবলুর রহমান বাবলু বলেন, গত মে মাসে আমরা এই রেশন কারখানাটি লিজ নিয়েছি। কারখানাটি চালু করতে পেরে আমরা খুব আনন্দিত। কারখানাটি চালু হওয়ার ফলে প্রায় শতাধিক মানুষের কর্মস্থল হবে। এতে করে ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন হবে। রংপুর অঞ্চলের উৎপাদন কর্মকতা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ৮ লাখ ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে পাঁচ বছরের জন্য সুপ্রিয় এন্টারপ্রাইজকে লিজ দেওয়া হয়েছে। তারা শুধু ভবন এবং যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে পারবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্য ও স্থানীয় সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা ঠাকুরগাঁওয়ের রেশম কারখানাটি অবশেষে চালু হলো। কারখানাটি চালুর ফলে এখানে প্রায় ১০০ জন মানুষের কর্মসংস্থার সৃষ্টি হবে। দেশ ও দেশের বাইরে ঠাকুরগাঁওয়ের উৎপাদিত রেশমের বেশ চাহিদা রয়েছে। সেই চাহিদা মেটানোর ক্ষেত্রে ঠাকুরগাঁও রেশম কারখানা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। কারখানা চালুর খবরে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার চাষি নতুন উদ্যোমে রেশম চাষ শুরু করেছেন। চাষির সংখ্যা আরো বাড়বে। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ঠাকুরগাঁও জেলার পুলিশ সুপার উত্তম প্রসাদ পাঠক, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুহা. সাদেক কুরাইশী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট অরুণাংশু দত্ত (টিটো), সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মাহবুব উল হক প্রমুখ।