ঢাকা ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

রাইসমিলের ছাই ও বিষাক্ত ধোঁয়ায় হাইটেক পার্কের কাজে বিঘ্ন

রাইসমিলের ছাই ও বিষাক্ত ধোঁয়ায় হাইটেক পার্কের কাজে বিঘ্ন

জামালপুর শহরের মুকন্দবাড়ী এলাকায় নির্মাণাধীন হাইটেক পার্কের পাশে একটি অটো রাইসমিল থেকে উড়ে আসা ছাই ও বিষাক্ত ধোঁয়া প্রকল্পের কাজে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। অনবরত বাতাসে ভেসে আসা এ ছাই ও ধোঁয়া নির্মাণ কাজে ব্যস্ত কর্মীদের চোখে গিয়ে সৃষ্টি করছে মারাত্মক প্রদাহ। এছাড়াও আশপাশের বাড়িঘরসহ প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকায় এ ছাই ও বিষাক্ত ধোঁয়া বাতাসের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে বলেও অভিযোগ করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী ও সেখানে নির্মাণকাজের কর্মীরা। এতে বিপাকে পড়ছেন ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাসহ পথচারীরাও। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গণপূর্ত অফিসের পূর্বপাশে চলছে ১৫৩ কোটি টাকা ব্যয়ে হাইটেক পার্কের নির্মাণকাজ। চারপাশে বেষ্টনী দিয়ে ভেতরে পুরোদমে চলছে প্রকল্পের নানা কর্মযজ্ঞ। এর উত্তরপাশে রয়েছে পার্কের সীমানা ঘেঁষা স্কার্ফ এগ্রো প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি অটো রাইসমিল। মিলের চিমনি দিয়ে বাতাসে অনবরত ভেসে আসছে পরিত্যক্ত ছাইয়ের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণা ও বিষাক্ত ধোঁয়া। ছাইয়ের এসব কণা ছড়িয়ে পড়ছে চারপাশে। উড়ে এসে লাগছে হাইটেক পার্কের কর্মীদের চোখে-মুখে। এতে অস্বস্তিতে ভুগছেন কর্মীরা। ছাইয়ের কণা গিয়ে কারো কারো চোখে সৃষ্টি হয়েছে মারাত্মক প্রদাহ। এতে নির্মাণকাজে ব্যাপক বিঘ্ন তার সৃষ্টি হচ্ছে। অন্যদিকে সরকারের এত বড় উন্নয়ন প্রকল্প ছাই ও বিষাক্ত ধোঁয়ার কারণে যেন বিলম্বিত না হয়, সে জন্য কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করা হয়েছে। হাইটেক পার্কের নির্মাণ কাজের দায়িত্বরত কাওসার হোসাইন বলেন, নির্মাণ কাজের পাশেই একটি রাইসমিল থেকে প্রতিনিয়ত ছাই ও বিষাক্ত কালো ধোঁয়া উড়ে এসে চোখে-মুখে লাগে। এর কারণে আমাদের কাজ করার সময় খুবই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। যদি ছাই চোখে ঢুকে যায়, তাহলে চিকিৎসা করাতে অনেক খরচ হয়ে যাবে। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সৃদুষ্টি কামনা করেন তিনি। স্কার্ফ এগ্রো প্রাইভেট লিমিটেড রাইস মিলের স্বত্বাধিকারী একে এম শফিকুল ইসলাম জুলহাস বলেন, এই ধরনের অভিযোগের কারণে পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মোতাবেক ৩ লাখ টাকা খরচ করে ছাই ও কালো ধোঁয়ার প্রতিরোধক লাগানো হয়েছে। এরপরও যদি সমস্যা হয়, তাহলে রাইস মিলটির জায়গা অধিগ্রহণ করুক, আমার কোনো আপত্তি নেই। জামালপুর পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন ও সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন জামালপুর জেলা শাখার সভাপতি জাহাঙ্গীর সেলিম জানান, জামালপুরে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন হাইটেক পার্কটির সংলগ্ন অটোরাইস মিলের কারণে চরম ঝুঁকির সৃষ্টি হয়েছে। হাইটেক পার্কের নির্মাণ শ্রমিকরা শব্দ দূষণ এবং স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছে। স্থানীয় এ রাইচ মিল থেকে নির্গত ছাঁই এবং বিকট শব্দ শুধু নির্মাণ শ্রমিকদেরই না এলাকাবাসীর চোখের, কানের এবং শ্বাস কষ্টের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা অনতিবিলম্ব আবাসিক এলাকা থেকে অটোরাইস মিলটির স্থানান্তর দাবি করছি। দাবি আদায়ে প্রয়োজনে এলাকাবাসীদের নিয়ে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলব। জামালপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের পরিদর্শক মুহাম্মদ হেদায়েতুল ইসলাম বলেন, চলমান হাইটেক পার্ক প্রকেল্পর পাশেই একটি রাইসমিল থেকে ছাই উড়ে নির্মাণকাজ ব্যহত হচ্ছে, এ সম্পর্কে একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগপত্রটি আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য হেড অফিসে পাঠিয়েছি। হেড অফিসের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী সময়ে কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত