ঢাকা ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

চাকরি ছেড়ে ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদনে সফল নাঈম

চাকরি ছেড়ে ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদনে সফল নাঈম

শ্রম অনুযায়ী কাঙ্ক্ষিত বেতন না পাওয়ায় প্রকৌশলীর চাকরি ছেড়ে নিজ বাড়িতেই কেঁচো সার বা ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন শুরু করে সফল হয়েছেন দিনাজপুরের নাঈম। উৎপাদিত সার নিজের কৃষিকাজে ব্যবহারের পর অতিরিক্ত সার বিক্রি করে প্রতিমাসে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা আয় করছেন তিনি।

আবার কেঁচো বিক্রি করেও প্রতিমাসে অতিরিক্ত ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা আয় করেছেন তিনি। কিছু দিনের মধ্যেই তাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। এখন প্রতিমাসে কেঁচো সার ও কেঁচো বিক্রি করে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় করে সবার অনুকরণীয় হয়ে উঠেছেন দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউপির বৈকুণ্ঠপুর গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে মো. নাঈম হুদা। নাঈম হুদা ২০১৬ সালে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে স্নাতক শেষ করেন।

মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক শেষ করে নাঈম হুদা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান উত্তরা ইপিজেডে চাকরি শুরু করেন। চাকরিকালে অনুধাবন করেন চাকরিতে যে সময় আর শ্রম দিতে হচ্ছে, সে অনুযায়ী বেতন পাচ্ছেন না। সিদ্ধান্ত নেন চাকরি ছেড়ে দিয়ে বাড়িতে কেঁচো সার বা ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন করবেন। ২০১৯ সালে চাকরি ছেড়ে বাড়ির কৃষিতে মনোযোগ দেন। বাড়িতে কমলা, মাল্টা ও মিশ্র ফলের বাগান করেন। বাড়ির পুকুরে মাছ চাষ শুরু করেন। বাগান করতে গিয়ে দেখেন ফলবাগানে রাসায়নিক সারের পাশাপাশি জৈব সারের প্রয়োজন হচ্ছে। তখন কৃষি অফিসের পরামর্শক্রমে দুই শতক জমিতে কেঁচো সারের একটা প্রজেক্ট করেন। এ ব্যাপারে নাঈম হুদা বলেন, কেঁচো খামারে ভালো মুনাফা আসায় আমি এই সার ও কেঁচো নিয়ে গবেষণা শুরু করি। দেশে সাধারণত চেম্বার ও রিং পদ্ধতিতে কেঁচো কম্পোস্ট সার তৈরি হয়। আমি দেশে প্রথম ক্যারেট পদ্ধতিতে কেঁচো কম্পোস্ট সার তৈরি করছি।

হাউস ও রিং থেকে ট্রেতে এই সার উৎপাদন শুরু করেছি। এখন পরীক্ষামূলক বস্তার মধ্যেও শুরু করেছি কেঁচো সার উৎপাদন। ফলও ভালো পাচ্ছি। এখন ৬ শতক জমিতে কেঁচো সারের খামার সম্প্রসারণ করেছেন। এ খামার থেকে প্রতিমাসে ৪ থেকে ৫ টন কেঁচো সার উৎপাদিত হচ্ছে। প্রতিটন সার ১২ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন। আর এ সার খুচরা প্রতিকেজি ১৬ থেকে ১৮ টাকা দরে বিক্রি করছেন। তাকে দেখে অনেক বেকার যুবক তার কাছ থেকে কেঁচো নিয়ে বাড়িতে ক্ষুদ্র পরিসরে কেঁচো সার উৎপাদন করছেন। এ ব্যাপারে চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জোহরা সুলতানা বলেন, উপজেলায় এনএটিপি প্রকল্পের আওতায় কয়েকটি ভার্মি কম্পোস্ট প্রকল্প চালু করেছি। তবে নাঈম হুদা উদ্যোক্তা হিসেবে অত্যন্ত ভালো করছেন। তিনি এরই মধ্যে সার ও কেঁচো বিক্রি করে নিজের ভালো অবস্থা তৈরি করেছেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত