নাটোরে প্রশান্তির রং ছড়াচ্ছে মরুর এডেনিয়াম

প্রকাশ : ০৭ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নাটোর প্রতিনিধি

আফ্রিকার মরুভূমি এবং আরব উপদ্বীপের এডেনিয়াম ফুলের এক রাজ্য গড়ে তুলেছেন নাটোরের সৌখিন ফুলপ্রেমি আশরাফুন নেছা সুমনা। বর্তমানে তার বাগানে এডেনিয়ামের নানা রঙের ফুল মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে। সুমনার বাগানে এখন শোভা পাচ্ছে তাইওয়ান, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড আর ফিলিপাইনের ৫০০ ভ্যারাইটির এডেনিয়াম।

তার ছাদবাগানে সিংগেল লেয়ার, তাইওয়ান-২, ম্যাপল, পারপেল ওয়াইন্ডমিল, ইয়োলো ইমপেরর, ব্লাক লাভার, এঞ্জেলা, সুগার ম্যাপল, জলি, গোল্ডফিশ, অ্যাডাম, ক্রিসপাম, পার্পেল স্টর্ম, ডাবল স্টার, পমিগ্রানেটসহ অসংখ্যক ফুল শোভা পাচ্ছে। এডেনিয়াম ফুল ‘মরু গোলাপ’ নামে পরিচিত। ২০০৭ সালে সুমনা নাটোরের এক বৃক্ষমেলায় গিয়ে মুগ্ধ হয়ে একটি এডেনিয়াম ফুলের গাছ ক্রয় করেন। এরপর বাড়িতে এনে পরম মমতায় পরিচর্যা করেন। তারপর অনলাইনে বিভিন্ন ভিডিও চিত্র দেখে এ ফুল গাছের প্রেমে পড়েন। এরপর শুরু করেন এডেনিয়াম গাছ সংগ্রহ।

দুই বছর আগে শহরের নারায়ণকান্দি এলাকায় একটি এডেনিয়ামের বাগান গড়ে তোলেন সুমনা। ওই বাগানে এখন অসংখ্য এডেনিয়াম গাছের ফুল সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে। সুমনার বাগান ও ছাদে এখন শোভা পাচ্ছে, তাইওয়ান, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড আর ফিলিপাইনের ৫০০ ভ্যারাইটির এডেনিয়াম। নানার রঙের এডেনিয়াম গাছের সংখ্যা কয়েক হাজার ছাড়িয়েছে। বাগানে বাণিজ্যিকভাবে সিড আর গ্রাফটিংয়ের মাধ্যমে নতুন চারাও তৈরি করছেন। এসব চারা তিনি সারাদেশে বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করছেন। প্রতি পিস চারা ৫০০ থেকে ২ হাজায় বিক্রি করছেন। ফুলপ্রেমি আশরাফুন নেছা সুমনা বলেন, এক বৃক্ষমেলায় গিয়ে এডেনিয়াম গাছ দেখে মুগ্ধ হই আমি। সেখান থেকে একটি এডেনিয়াম গাছ ক্রয় করি। এরপর সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে চিন্তা করি বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করতে। বর্তমানে আমার বাগান ও বাড়ির ছাদে প্রায় ৫০০ ভ্যারাইটি রয়েছে।

বাগানে হাজারের ওপরে এডেনিয়ামের গাছ রয়েছে। সারাদেশে এ গাছের চারা বিক্রি করছি। আমি বাণিজ্যিকভাবে চারা তৈরির কার্যক্রম শুরু করেছি। আমার এ কাজে জেলা কৃষি অফিস সব ধরনের পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। নাটোর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নীলিমা জাহান বলেন, নাটোরে নতুন উদ্যোক্তা সুমনা একজন সৌখিন নারী। তিনি প্রথমে শখ করে এ ফুল গাছ চাষ করেন। পরবর্তীতে কৃষি অফিসের পরামর্শে তিনি বাণিজ্যিকভাবে এডেনিয়াম ফুলের গাছ উৎপাদন শুরু করেন। এটা মরুভূমির ফুল গাছ হলেও এটা বাংলাদেশে বর্তমানে চাষ হচ্ছে। ভবিষতে বড় পরিসরে এ চাষ বাড়বে বলে আশা করছি।

উল্লেখ্য, ১৭৫২ সালে সর্বপ্রথম কেনিয়াতে খুঁজে পাওয়া যায় এডেনিয়াম। মরুভূমিতে উৎপত্তিস্থল হলেও বর্তমানে পৃথিবীর সর্বত্র এডেনিয়ামের দেখা পাওয়া যায়। ফুলের রঙের বৈচিত্র্যতা, অদ্ভুত সুন্দর বনসাই আকার আর অতিমাত্রায় খরা সহনশীলতার কারণে বিশ্বব্যাপী এটি সমাদৃত। সব পরিবেশে এ গাছ আপন ইচ্ছা বেড়ে ওঠে।