ঢাকা ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

জিআই স্বীকৃতির বছরেই আশ্বিনা আমের দরপতন

জিআই স্বীকৃতির বছরেই আশ্বিনা আমের দরপতন

বাজারে দরপতন চলছে জিওগ্রাফিক্যাল ইনডিকেশন (জিআই) স্বীকৃতি পাওয়া চাঁপাইনবাবগঞ্জের আশ্বিনা আমের। এতে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন আম চাষিরা। আশ্বিনা আম বিক্রি করে উৎপাদন খরচ তো দূরের কথা, সংসার চালানোর খরচও উঠছে না তাদের। আম্রপালিসহ বিভিন্ন জাতের আমের দাপটে আশ্বিনার দরপতন হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

জেলার বিভিন্ন আশ্বিনা আম বাগান ঘুরে দেখা যায়, এখনো থোকায় থোকায় ঝুলছে শত শত মণ আশ্বিনা আম। তবে দাম না থাকায় আম নামিয়ে বিক্রি করছেন না ব্যবসায়ীরা। আম বিক্রি করে উৎপাদন খরচে উঠছে না আম চাষিদের। এদিকে দেশের বড় আমের বাজার কানসাটে গিয়ে দেখা যায়, সারি সারি ভ্যানে ডালিতে আশ্বিনা আম সাজিয়ে বসে আছেন চাষিরা। তবে প্রত্যাশিত দামে তারা আম বিক্রি করতে পারছেন না। প্রতি মণ আশ্বিনা আম বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে হাজার টাকা মণ দরে। এতে উৎপাদন খরচই উঠছে না বলে দাবি চাষিদের।

কানসাট ইউনিয়নের আম চাষি রফিকুল ইসলাম বলেন, এ বছরের আমের মৌসুম ছিল চাষিদের জন্য সর্বোচ্চ খরচের বছর। খরার কারণে সেচও লেগেছে অনেক বেশি। একই সঙ্গে বেড়েছে সার, কীটনাশক ও শ্রমিকের মজুরি। অথচ সীমাহীন খরচের এই মৌসুম আমের কাঙ্ক্ষিত দাম পাচ্ছি না। আমার আম উৎপাদনে মণপ্রতি খরচ হয়েছে ১ হাজার ২০০ টাকার বেশি। অথচ আম বিক্রি করতে হচ্ছে ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা মণ দরে। আমি ঋণ নিয়ে ফ্রুড ব্যাগিং করেছি, এ টাকা আমি কোথায় থেকে পরিশোধ করব।

শিবগঞ্জ ম্যাংগো প্রোডিউসার কো-অপারেটিভ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল খান বলেন, কয়েক বছর আগে আগস্ট মাসে আশ্বিনা ছাড়া অন্য কোনো আম থাকত না। এজন্য আশ্বিনা আমের দাম পেতেন চাষিরা। তবে এ বছর এই মাসেও আম্রপালি, বারি-৪, গৌড়মতিসহ বিভিন্ন জাতের আমের বাজারে চলে এসেছে। আর এ আমগুলোর মিষ্টি অনেক বেশি।

এজন্যই আশ্বিনা আমের দরপতন হয়েছে। শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, এখানে প্রায় ৪০ শতাংশ আশ্বিনা আম উৎপাদন হয়। এ আমগুলোর ৩০ শতাংশ ফ্রুড ব্যাগিং। ফ্রুড ব্যাগিং, কীটনাশকসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।

এতে এক মণ আম উৎপাদনে খরচ হয়েছে প্রায় ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা মণ। কিন্তু আম বিক্রি করতে হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা মণ। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন চাষিরা। ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকার নিচে আম বিক্রি করলে চাষিদের লোকসান হবে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় এবার ৩৭ হাজার ৮৫৫ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে। আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত