ঢাকা ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ফেনী-পরশুরাম সড়ক যোগাযোগ বন্ধ

৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দি
ফেনী-পরশুরাম সড়ক যোগাযোগ বন্ধ

টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ফেনীর মুহুরী নদীর বাঁধের তিনটি স্থানে ভেঙে অন্তত ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ফুলগাজীর বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলেও পরশুরাম উপজেলায় অবনতি হয়েছে। ফুলগাজীর বন্যাকবলিত কিছু গ্রাম থেকে পানি নামলেও পরশুরামে নতুন করে অনেক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ফেনী-বিলোনিয়া সড়কে পানি থাকায় ফেনীর সঙ্গে পরশুরামের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

দুই উপজেলার প্রায় ৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। তিনদিনের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গ্রামীণ সড়ক, মৎস্য খাত ও কৃষি। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, গতকাল বুধবার দুপুরে মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ১৪১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বেড়িবাঁধের তিনটি স্থানে ভেঙে ফুলগাজী ও পরশুরামের অন্তত ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বেশ কিছু জায়গায় সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এদিকে টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার অন্তত ৮২৫ হেক্টর আমনের জমি পানির নিচে তলিয়ে আছে। বাঁধভাঙা পানিতে অন্তত ৩ শতাধিক পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মৎস্য চাষিদের অবকাঠামো। কৃষি বিভাগ জানায়, সহসাই পানি না নামলে এসব জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এছাড়াও জেলায় ১০ হেক্টর আমন বীজ তলা ও ১৫ হেক্টর সবজি খেত পানিতে ডুবে আছে? গতকাল সকালে পরশুরামের উত্তর ধনিকুন্ডা থেকে ফুলগাজীর আনন্দপুর বোর্ড অফিসে যাচ্ছেন বৃদ্ধ জোহরা বেগম।

মূল সড়কে পানি জমে গাড়ি চলাচল না করায় তিনি প্রায় ৫ কিলোমিটার পানিতে হেঁটেছেন। কোমর পর্যন্ত ভেজা কাপড়ে তিনি সারাদিন কীভাবে থাকবেন, এ নিয়ে উদ্বিগ্ন। ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানিয়া ভূঁইয়া ও পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দা শমসাদ বেগম জানান, দুই উপজেলায় প্রায় ৫০ হাজারেও বেশি মানুষ পানিবন্দি। বানভাসি মানুষদের জন্য শুকনো খাবার দেওয়া হচ্ছে। ফেনী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বলেন, বন্যার পানিতে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় ৩৭৫টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষিদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে কোনো ধরনের সহায়তা পেলে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের প্রদান করা হবে। ফেনীস্থ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাশেদ শাহরিয়ার জানান, উজানে বৃষ্টি হওয়ার কারণে মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। উজানে বৃষ্টি বন্ধ হলে এদিকেও প্লাবন বন্ধ হয়ে যাবে। পানির অতি গতির কারণে বাঁধগুলোতে সংস্কার কাজ করা যাচ্ছে না। তিনটি স্থানে পানির গতি কমে গেলে বাঁধ সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত