ঢাকা ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কেশবপুরে সরকারি হাসপাতালে প্রাইভেট ক্লিনিক মালিক সমিতির কমিটি গঠন!

কেশবপুরে সরকারি হাসপাতালে প্রাইভেট ক্লিনিক মালিক সমিতির কমিটি গঠন!

যশোরের কেশবপুরে সরকারি হাসপাতালে প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক সমিতি গঠন করা নিয়ে নানা গুঞ্জন উঠেছে। গত শনিবার উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার আলমগীরের উপস্থিতিতে সরকারি হাসপাতালের হলরুমে ওই ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক মালিক সমিতির কমিটি গঠন করা হয়। এই মালিক সমিতি গঠনের পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।

জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চাকরিজীবীদের কারো কারো রয়েছে ব্যক্তিমালিকানা ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। ব্যক্তিমালিকানা প্রতিষ্ঠানের কমিটি গঠনে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার উপস্থিতি ও হাসপাতালের হলরুমে এমন অনুষ্ঠান দেখে অনেকেই কেশবপুরের চিকিৎসাসেবার মান নিয়ে চিন্তিত। কেননা এরইমধ্যে কেশবপুরে ব্যাঙের ছাতার মতো যত্রতত্র নামে-বেনামে বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার গড়ে উঠেছে। যেখানে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার নামে প্রতিনিয়ন রোগীর জীবন নিয়ে খেলা করা হয়। এসব বেসরকারি ক্লিনিক, হাসপাতালের একচেটিয়া ব্যবসা সিজারিয়ানের আপারেশন করা। অন্যদিকে ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো আল্ট্রাসনোগ্রাফি, ইসিজি, এক্সে, রক্ত, প্রসাবের পরীক্ষাসহ বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা করে থাকে।

তবে সব প্রতিষ্ঠানে নেই দক্ষ জনশক্তি, পরীক্ষা-নিরীক্ষার আধুনিক যন্ত্রপাতি। যে কারণে অধিকাংশ ক্ষেত্রে রোগীদের ভোগান্তির শিকার হতে হয়। এসব ব্যক্তিমালিকানা প্রতিষ্ঠানে অকর্ষণীয় মূল্য প্যাকেজে অবাধে চলে সিজারিয়ানের কাজ। ডাক্তারের অনুপস্থিতিতে অনেক ক্ষেত্রে খরচ বাঁচাতে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ অদক্ষ জনবল দিয়ে সিজারিয়ানের কাজ করে থাকে। যে কারণে অনেক প্রসূতির অকাল মৃত্যুপথের যাত্রী হতে হয়। পরিবারে নেমে আসে চরম ভোগান্তি।

নবজাতক শিশু হারায় তার মাতৃস্নেহ। এমন নানাবিধ অভিযোগ, অনিয়মের জের ধরে কেশবপুরের হাতে গোনা দুয়েকটি ব্যক্তিমালিকানা প্রতিষ্ঠান বাদে প্রায় সব কয়টি প্রতিষ্ঠানে জেলা সিভিল সার্জন, উপজেলা প্রসাশন বিভিন্ন সময়ে অভিযান পরিচালনা করে প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে। অদৃশ্য শক্তি বলে বা স্বাস্থ্য বিভাগের অসৎ ব্যক্তির দ্বারস্থ হয়ে বন্ধ হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো রাতারাতি চালুও হয়ে থাকে। এমন সব প্রতিষ্ঠান একত্রিত হয়ে কমিটি গঠন করা মানে সংঘবদ্ধভাবে অনিয়ম চালিয়ে যাওয়া বলে ধারণা করছেন অনেকেই। এ ব্যাপারে কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আলমগীর হোসেনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি বলেন, ক্লিনিক মালিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জায়গা দেয়া হয়েছে। তিনি অনুষ্ঠান শেষের দিকে হল রুমে গিয়েছিলেন, মালিকদের আগে কোনো কমিটি ছিলো না। কমিটি হওয়াতে তাদের অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সহজ হবে। তিনি তাদের বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। সরকারি হাসপাতালের হল রুমে বেসরকারি ব্যক্তিমালিকানা ক্লিনিকের মালিক সমিতি গঠন করা কতটুকু যুক্তিযুক্ত জানতে চাইলে যশোর জেলা সিভিল সার্জন ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এটা ঠিক করেনি, এরকম হওয়ার কথা না। বিষয়টি সত্যিই দুঃখজনক।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত