এবছর এসএসসি পাস করেছে ইমরান আহামেদ। নবম শ্রেণিতে পড়ার সময়ই সারা দেশে অনলাইনে বিক্রি করেছে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ধরনের ফুলের চারা। বাড়ির ছাদে চাষ করা এসব ফুলের চারা বিক্রি করে প্রতি মাসে ৫০ থেকে ১ লাখ টাকা আয় করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে বাণিজ্য বিভাগের এই শিক্ষার্থী। ইমরান আহামেদের দাবি তার সংগ্রহে ‘ফরমোসা ব্ল্যাক পায়েল’ নামের কালো জবাসহ বিদেশি কয়েক প্রকার ফুলের চারার সংগ্রহ রয়েছে, যা দেশে আর কারও কাছে নেই।
সম্প্রতি শরীয়তপুর সদর পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের শাবনুর মার্কেট এলাকায় ইমরানের ছাদবাগানে দেখা যায় দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ১ হাজার ৫০০ প্রকার ফুলের চারা রয়েছে। এসব চারার অধিকাংশ ইমরান আহাম্মেদ ভারত থেকে সংগ্রহ করেছে বলে জানিয়েছে।
শরীয়তপুরের মজিদ জরিনা ফাউন্ডেশন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী ও প্রবাসী আবুল বাসার কাজী ও শিউলি আক্তার দম্পতির একমাত্র ছেলে ইমরান আহাম্মেদের লক্ষ্য বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জবা ফুলের প্রজেক্ট করা। খুদে এই উদ্যোক্তা বলেন, হাত খরচ যোগানোর জন্য ‘আল ইমরান নার্সারি শরীয়তপুর’ নামে একটি ফেসবুক পেজ তৈরি করে চারা বিক্রি করা শুরু করেছিলাম। চারা বিক্রি থেকে আমার অনেক টাকা আয় হয়। এছাড়া আমি গ্রাফটিং করে চারা উৎপাদন করি। গ্রাফটিং থেকে চারা উৎপাদন হতে সময় লাগে ৩ থেকে ৫ মাস। দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় লক্ষ্য করলাম বাংলাদেশে জবা ফুলের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি চাহিদা হলো অস্ট্রেলিয়ান, আমেরিকান, ব্যাঙ্গালেরু, ট্রপিক্যালসহ অন্যান্য জবা ফুল। কিন্তু দেশে তখন এসব ফুলের চারা পাওয়া যেত না। দেশে জবার চাহিদা বেশি থাকায় আমি আমার পরিচিত এক ভাইয়ের মাধ্যমে ভারতের কলকাতা থেকে জবার বিদেশি এসব প্রজাতির খয়েরি, হলুদ, লাল, কালো, গোলাপীসহ প্রায় তিন শতাধিক রঙের জবার চারা সংগ্রহ করি। পড়াশোনার পাশাপাশি অবসর সময়ে নিজে পরিচর্যা করে চারা উৎপাদন করে দেশের ৬৪ জেলায় এসব চারা বিক্রি করেছি দশম শ্রেণিতে পড়ার সময়।
শরীয়তপুর পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর ব্যাপারী বলেন, সদ্য মাধ্যমিক পাস করা একটি ছেলে ফুলের চারা বিক্রি করে লাখ টাকা আয় করে, এটা সত্যিই আশ্চর্যের বিষয়। কেউ যদি ভালো কাজে সময় ব্যয় করে তাহলে সাফল্য আসবেই। দেশের শিক্ষার্থী ও বেকার যুবকদের জন্য অনুকরণীয় হতে পারে ছোট্ট ইমরান। আমি ইমরানের সাফল্য কামনা করছি।