নাটোরে ব্ল্যাকমেইল করে নারীকে ধর্ষণ

কারাগারে হাসপাতালের পরিচালক

প্রকাশ : ১২ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মো. আব্দুর রাজ্জাক লাকি, নাটোর

নাটোরে গোসলের ভিডিও দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে টানা ২ বছর এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে উজ্জল মৃধা (৩২) নামে এক হাসপাতাল পরিচালককে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গত বৃহস্পতিবার বিকালে নাটোর সদর আমলি আদালতের বিচারক মো. রওশন আলমের আদালতে আত্মসমর্পণ করলে উজ্জলকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। এর আগে ভুক্তভোগী নারী নাটোর সদর থানায় মামলা করেন। অভিযুক্ত উজ্জ্বল মৃধা (৩২) নাটোর শহরের কানাইখালি এলাকার বিসমিল্লাহ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি নলডাঙ্গা উপজেলার পূর্ব মাধনগর গ্রামের আক্তার হোসেনের ছেলে। ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ৪ বছর আগে এক রোগীকে ক্লিনিকে চিকিৎসা দিতে গিয়ে অভিযুক্ত উজ্জলের সঙ্গে ওই নারীর পরিচয় হয়। তখন উজ্জল নির্দিষ্ট কমিশন প্রদানের শর্তে ভুক্তভোগী নারীকে ওই ক্লিনিকে রোগী পাঠাতে বলেন। এভাবে ধীরে ধীরে উজ্জলের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে ওঠে তার। এক পর্যায়ে উজ্জল ওই নারীকে ক্লিনিকের মাঠকর্মী হিসেবে কাজের প্রস্তাব দিলে তিনি রাজি হন। তখন থেকে হাসপাতালে চাকরির পাশাপাশি রোগী বেশি থাকলে বা কোনো রোগীর রাতে অপারেশন হলে ভুক্তভোগী নারী রাতে হাসপাতালে অবস্থান করতেন। ২০২১ সালের মাঝামাঝি রোগীর চাপের কারণে একদিন তিনি হাসপাতালে অবস্থান করেন। ওইদিন বাথরুমে গোসলের সময় উজ্জল গোপনে সেই ভিডিও ধারণ করেন। ভিডিওর কথা গোপন রেখে কথাবার্তার মাধ্যমে বন্ধুত্ব গড়ে তোলেন। এক পর্যায়ে অবৈধ শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেন উজ্জল। রাজি না হওয়ায় গোপনে ধারণ করা গোসলের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেবার হুমকি দেন। ফোন থেকে গোসলের ভিডিওটি ডিলিট করার আশ্বাস দেন উজ্জল। বিশ্বাস করে ওই নারী বিকালে হাসপাতালে কাজে যোগ দিতে গেলে হাসপাতালের ৬ তলায় উজ্জলের শোবার ঘরে ডেকে নিয়ে যান ও রাতভর তাকে ধর্ষণ করেন। এই ধর্ষণের ভিডিও গোপন ক্যামেরায় ধারণ করে রাখে উজ্জল। পরে এই ভিডিও ছড়িয়ে দেবার হুমকি দিয়ে টানা ২ বছর উজ্জল তার শোবার ঘরে নিয়ে ওই নারীকে ধর্ষণ করেন। এই সময়ের মধ্যে ওই নারী গর্ভধারণ করলে উজ্জল জোরপূর্বক গর্ভপাত ঘটাতে বাধ্য করে। সর্বশেষ গত ২ জুন উজ্জল আবারও ওই নারীকে হাসপাতালে তার কক্ষে আটকে ধর্ষণ করে। পরে সইতে না পেরে ওইদিন সে নাটোর থানায় মামলা দায়ের করেন। ভুক্তভোগী নারী বলেন, গোপন ছবি ও গোসলের ভিডিও ধারণের পর ব্ল্যাকমেইল করে উজ্জল শহরের একাধিক নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেছেন। তার এই কাজে বিসমিল্লাহ হাসপাতালের অন্য পার্টনাররা জড়িত আছেন। তাদের সহযোগিতায় সে আমাকে ২ বছর ধরে ধর্ষণ করেছে। তার মোবাইল, ল্যাপটপ ও অন্য ডিভাইসে এসব ছবি ও ভিডিওর প্রমাণ পাওয়া যাবে। আমি এ ঘটনায় বিচার চাই। নাটোর সদর থানার কর্মকর্তা (ওসি) নাসিম আহমেদ বলেন, ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে ভুক্তভোগী নারী থানায় মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ গুরুত্বের সঙ্গে মামলাটি নিয়েছে। আদালতের নির্দেশে অভিযুক্ত উজ্জলকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।