ধামরাইয়ে ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতু : উঠতে লাগে মই

প্রকাশ : ১৪ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  শওকত হোসেন সৈকত, ধামরাই

ঢাকার ধামরাইয়ে সুতিপাড়া ইউনিয়নের নওগাঁও বাজার সংলগ্ন গাজীখালী নদীর উপর নির্মিত ৪ কোটি টাকা মূল্যের সেতু কয়েকটি গ্রামের জনসাধারণের জন্য অভিশাপে রুপ নিয়েছে। ৪ কোটি টাকায় নির্মিত সেতুর দুই পাড়ে সংযোগ সড়ক না থাকায় এ ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। সরেজমিন দেখা যায়, নওগাঁও বাজার ঘেসে রয়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও আশরাফ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়। ফলে এপার ওপারের শত শত শিক্ষার্থী ও কয়েকটি গ্রামের মানুষ এ বাজারে এবং স্কুলে আসা যাওয়া করতে ব্রিজের প্রয়োজন হয় গাজীখালী নদীতে। জনগণের আশা পুরণে নদীতে ব্রিজ নির্মাণ করলেও দুই পারে সড়ক নির্মাণ না করায় ব্রিজে উঠতে হয় বাঁশের মই দিয়ে। ফলে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি কোনো কাজে আসছে না। বৃহত্তম ঢাকা গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প-৩ এর আওতায় ২০১৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি গাজীখালী নদীর উপর ৪৫ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু করেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স জয়েন্ট ব্রিকস ট্রেডার্স। ২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ব্রিজটি নির্মাণ সমাপ্তির সময় নির্ধারণ করা হয়।

এতে ব্যয় ধরা হয় ৪ কোটি ২১ লাখ ৫৪ হাজার ২৭১ টাকা। এ বিষয়ে সুতিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রমিজুর রহমান রোমা বলেন, আমি চেয়ারম্যান হওয়ার পর উপজেলা প্রসাশনকে বিষয়টি জানিয়েছি যে ব্রিজটির সংযোগ সড়ক না থাকায় মানুষ যাতায়াত করতে পারছে না, আমাকে প্রশাসন জানিয়েছে, তারা ব্রিজটির সংযোগ সড়ক নির্মাণের ব্যবস্থা নিচ্ছে। ব্রিজের দক্ষিণ পাড়ে স্থানীয় হায়াত আলী বলেন, ‘দুই বছর হলো আমার বাড়ির পাগার কেটে রেখে গেছে, কিন্তু মাটি ভরাটের কোনো খবর নাই, এই ব্রিজটি এখন আমাগো কোনো উপকারে লাগতেছে না বরং এটা আমাদের অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে, খাল পারাপারের জন্য আগে নৌকা ব্যবহার করা হতো। নৌকায় করে ঘরবাড়ির মলামালসহ বাইসাইকেল মোটরসাইকেল পরাপার করতে পারতাম। ব্রিজ হওয়ার পর সে পারাপারও বন্ধ হয়েছে।

এখন নদীতে পানি বাড়লে ব্রিজে উঠতে মই ব্যবহার করতে হয়। মালামাল আনতে কয়েক মাইল ঘুরে যাতায়াত করতে হয়। ধামরাই উপজেলা প্রকৌশলী সালেহ হাসান প্রামাণিক আলোকিত বাংলাদেশকে জানান, নওগাঁও গাজীখালী নদীর উপর ব্রিজটির অ্যাপ্রোচের কাজ (স্কুলের সাইটে) চলমান আছে। এটা এই মুহূর্তে লেয়ার বাই লেয়ার বালি কম্পোকেশন করে কাজ হচ্ছে এবং অপর পাশে ডেন্ডার হয়ে ওয়ার্ক অর্ডার সম্পূর্ণ হয়েছে। টিকাদারকে ফাইল বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে টিকাদার কাজ শুরু করে দেবে। সুতিপাড়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার শফিউদ্দিন স্বপন বলেন নওগাঁও গ্রামের গাজীখালী নদীর উপর নির্মিত রাস্তা সংযোগহীন দণ্ডায়মান ব্রিজটি এখন এলাকাবাসী অভিশাপের ব্রিজ বলে নামকরণ করেছে।