অবৈধ ক্লিনিকে সয়লাব শ্যামনগর

প্রতারিত হচ্ছেন সহজ সরল মানুষ

প্রকাশ : ১৬ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলমগীর সিদ্দিকী, শ্যামনগর (সাতক্ষীরা)

শ্যামনগরে বেসরকারি ক্লিনিক, ডেন্টাল ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও প্যাথলজিগুলো নিয়ন্ত্রণহীন ও ফ্রি-স্টাইলে চলছে। সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য-চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দেয়ার নামে গ্রামে-গঞ্জে, হাট-বাজারে এবং শহরের অলিগলি, পাড়া-মহল্লায় ব্যাঙের ছাতার মতো ছোট-বড় অসংখ্য ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার গজিয়ে উঠছে। গজিয়ে উঠা ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অধিকাংশই অবৈধ এবং লাইসেন্স না থাকলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হচ্ছে না তেমন কোনো পদক্ষেপ। এছাড়াও এগুলোর অধিকাংশেরই নেই বৈধ কাগজপত্র। কয়েকটির থাকলেও তা নবায়ন না। শ্যামনগরে সুন্দরবন অ্যাপোলো হাসপাতাল, রিডা প্রাইভেট হাসপাতাল, সুন্দরবন ক্লিনিক, সেবাক্লিনিক, নগর প্রাইভেট হাসপাতাল, মডার্ন ক্লিনিক, কাশিমাড়ী ক্লিনিক, শামিমা ক্লিনিক, প্রযুক্তি প্যাথলজি, বিসমিল্লাহ প্যাথলজি, তট প্যাথলজি, পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, শান্তি ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ডিজিটাল প্যাথলজি অ্যান্ড এক্স-রে, অসীমের প্যাথলজি সেন্টার, ডর্ক্টসডোর ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মেডিকেল সাইন্স ল্যাবসহ ৩০টির মতো প্রাইভেট ক্লিনিক ও প্যাথলজি সেন্টার রয়েছে। এক দশকে শ্যামনগরে বিপুলসংখ্যক ক্লিনিক ও ডেন্টাল ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরি স্থাপিত হলেও এগুলো সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণে কার্যকর আইন ও প্রয়োগকারী সংস্থা নেই। তিন দশকের পুরোনো ‘দি মেডিকেল প্রাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ল্যাবরেটরিজ রেগুলেশন অর্ডিন্যান্স ১৯৮২’-এর ভিত্তিতে এসব প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে জাতীয় স্বাস্থ্য নীতি ২০১১ পাস করে।

কিন্তু কিছু সুবিধা ভোগীদের কারণে স্বাস্থ্য নীতির সঠিক বাস্তবায়ন এখন সম্ভব হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, এসব ক্লিনিকের মালিকানার সঙ্গে বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তি, চিকিৎসক নেতারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত। তাদের মধ্যে কেউ সদিচ্ছা নিয়ে ব্যবসা করেন না, তারা দ্রুত বিপুল অর্থ-বিত্তের মালিক হতে বাণিজ্যিকভাবে ক্লিনিক চালান।

এসব বিষয়ে শ্যামনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. জিয়াউর রহমান বলেন, উপজেলায় যেসব ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার অবৈধ এবং লাইসেন্স নেই তার তালিকা করে কয়েকবার জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হয়েছে। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। তিনি আরো বলেন, এসব ক্লিনিক যখন খোলা হয় বা নবায়ন করা হয়, তখন এর মান যাচাই করা হয়। সে সময় মান ঠিক থাকলেও পরবর্তীতে সঠিক মান ধরে রাখতে পারে না ক্লিনিক মালিকরা। যেসব ক্লিনিকে সার্বক্ষণিক ডাক্তার বা নার্স থাকে না, সেগুলো আবার কিসের ক্লিনিক। সেগুলো বন্ধ করে দেয়া উচিত। তবে বন্ধ করার ক্ষমতা আমাদের হাতে না, প্রশাসনের হাতে।