পরিবেশবান্ধব চিমনি স্থাপন

ঘুরে দাঁড়াচ্ছে ঠাকুরগাঁওয়ের হাস্কিং মিল

প্রকাশ : ১৭ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

বিগত বছরগুলোতে অটো রাইস মিলের দৌরাত্ম্যে ঠাকুরগাঁওয়ের হাস্কিং মিলগুলো বন্ধের উপক্রম হলেও বর্তমানে ইএসডিও’র বাস্তবায়নে পরিবেশবান্ধব চিমনি স্থাপনের মাধ্যমে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে মিলগুলো। এতে কর্মসংস্থানেরও প্রসার হওয়ার পাশাপাশি ফুল গ্রেইন চাল উৎপাদনে সুদিন ফিরছে মিলারদের। আর এসব মিলের উৎপাদিত পুষ্টি গুণ সমৃদ্ধ ফুল গ্রেইন চাল স্থানীয়সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হচ্ছে ও এর চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। জেলা খাদ্য অধিদপ্তরের উচ্চমান সহকারী শামীম সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের জুলাই মাসে ঠাকুরগাঁও জেলায় লাইসেন্সধারী হাস্কিং মিল ছিল ১ হাজার ৭৬৯টি ও অটোরাইস মিল ছিল ২৩টি। বর্তমান চলিত বছরের জুলাই পর্যন্ত জেলায় লাইসেন্সধারী হাস্কিং মিলের সংখ্যা ৮৮৯টি ও অটো মিল চালু আছে ১৮টি। মাত্র ৩ বছরের ব্যবধানে ৮৮০টি মিলের লাইসেন্স বাতিল হয়েছে অর্থাৎ ৮৮০টি হাস্কিং মিল বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া পাঁচটি অটোরাইস মিলেরও লাইসেন্স বাতিল হয়েছে। হাস্কিং মিলের এই ক্রান্তিলগ্নে মিল মালিকদের পাশে দাঁড়িয়ে বিশ্ব ব্যাংক ও পল্লী সহায়ক ফাউন্ডেশনের সহায়তায় সাসটেইনেবল এন্টারপ্রাইজ প্রজেক্টের বাস্তবায়নাধীন উপ-প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বেসরকারি সংস্থা ইকো সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ইএসডিও)। এই প্রকল্পের আওয়তায় হাস্কিং মিলগুলোতে পরিবেশবান্ধব চিমনি স্থাপন, পরিবেশের দূষণ কমানোর মাধ্যমে সাধারণ মানুষের প্রচলিত খাবার হিসেবে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে ফুল গ্রেইন চাল উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাত করে সরবরাহ করা হচ্ছে। মিল ম্যানেজার হারুনুর রশিদ বলেন, রোদ হলে একেকটি মিলে মাত্র দুই দিনে পুষ্টি ও ভিটামিন সমৃদ্ধ চাল প্রায় ২০০ বস্তা উৎপাদিত ও প্রস্তুত হয়। প্রস্তুতকৃত চালের মধ্যে ফুলে গ্রেইন, গাঞ্জিয়া, বিয়ার ২৮, বিয়ার ২৯, বিয়ার ৮৪ ও জিংক চাল প্রস্তুত করা হয়।

জাহাঙ্গীর আলম নামে এক হাস্কিং মিল মালিক বলেন, আমরা আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারছি শুধু ইএসডিও’র সহয়োগিতায়। জিংক ও ফুল গ্রেইন চাল উৎপাদনে এবং বাজারজাতকরণেও সহযোগিতা করছেন তারা। প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান ইএসডিও’র নির্বাহী পরিচালক ড. মুহম্মদ শহীদ উজ জামান বলেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে একদিকে মানুষের যেমন স্বাস্থ্যসম্মত ও পরিবেশসম্মত নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত হচ্ছে তেমনি অন্যদিকে নিরাপদভাবে শ্রমিকদের কাজ করার ও কর্মসংস্থানেরও সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আর এর সুফল সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। আগমীতে শুধু ঠাকুরগাঁও দিনাজপুর জেলায় নয়, এটি সারাদেশে ছড়িয়ে পড়বে বলে আশা করছেন তিনি। ইএসডিও’র এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে ঠাকুরগাঁও সদরের খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা খন্দকার আবুল বাসার বলেন, ইএসডিও কর্তৃক হাস্কিং মিলগুলোতে পরিবেশবান্ধব চিমনি স্থাপন, পরিবেশের দূষণ কমানোর মাধ্যমে সাধারণ মানুষের প্রচলিত খাবার হিসেবে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে ফুল গ্রেইন চাল উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকণের উদ্যোগটি প্রশংসনীয়। এতে যেমন পরিবেশ দূষণ রোধ হবে, তেমিন স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যও নিশ্চিত হবে। আমরা চাই তারা সকল হাস্কিং মিলগুলো এই প্রকল্পের আওতায় আনুক।