চলতি সালের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর উচ্চ শিক্ষা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার ১ হাজার ২৪২ শিক্ষার্থীর। এসব শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অকৃতকার্য ও জিপিএ ৩ দশমিক ৫-এর নিচে ফলাফলে এমন আশঙ্কা করছেন সচেতন নাগরিক মহল। তারা মনে করছেন, এমন ফলাফলে শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষা অর্জনে কাঙ্ক্ষিত কলেজে ভর্তি নিয়ে অনিশ্চিত হয়ে উঠতে পারে। সরেজমিনে জানা যায়, তেঁতুলিয়া উপজেলার সিপাইপাড়া দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়, বোয়ালমারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, শালবাহান দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়, হারাদিঘী দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও গিটালগছ উচ্চ বিদ্যালয়ে এবারের পরীক্ষার ফলাফল বিপর্যয় ঘটেছে। এসব স্কুলসহ বিভিন্ন স্কুলের মানবিক বিভাগ, গণিত, ইংরেজি ও বাণিজ্য বিভাগে শিক্ষার্থীরা ফলাফল খারাপ করেছেন। ২০২৩ সালের এসএসসি/সমমান পরীক্ষায় দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পাসের হার ৭৬ দশমিক ৮৭ শতাংশ। পঞ্চগড় জেলায় পাসের হার ৭৪.৯৫ শতাংশ। তেঁতুলিয়ায় পাসের হার ৭৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ। এ উপজেলায় ১ হাজার ৮০৭ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে ১ হাজার ৩৪৫ জন। সবচেয়ে ফলাফল খারাপ হয়েছে মানবিক বিভাগে। এ বিভাগ থেকে ১ হাজার ২২৯ শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ৮২৪ জন। অকৃতকার্য হয়েছে ৪০৫ জন। সর্বমোট অকৃতকার্য হয়েছে ৪৬২ শিক্ষার্থী। মানবিক বিভাগ থেকে একজন নারী শিক্ষার্থী পেয়েছে জিপিএ ৫। জিপিএ ৫ সহ ৩ দশমিক ৫ অর্জন করেছে ১৩৮ জন। ৩ দশমিক ৫ এর নিচে রয়েছে ৬৮৬ জন শিক্ষার্থী। বিজ্ঞান বিভাগে ৫৬২ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে ৫১০ জন। এদের মধ্যে জিপিএ ৫সহ ৩.৫ পেয়েছে ৪২৩ শিক্ষার্থী। এ বিভাগে জিপিএ ৩ দশমিক ৫-এর নিচে ৮৭ জন এবং ফেল করেছে ৫২ জন। বাণিজ্য বিভাগে ১৬ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে ১১ জন। অকৃতকার্য পাঁচজন। জিপিএ ৩ দশমিক ৫ এর নিচে অর্জন করেছে সাতজন। সব মিলে ১ হাজার ২৪২ জন শিক্ষার্থী জিপিএ ৩ দশমিক ৫-এর নিচে পাস করায় উচ্চ শিক্ষা যেমন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে তেমনি এসব শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যেও হতাশা দেখা দিয়েছে। হারাদিঘী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আতিয়ার রহমান জানান, ঠিকমতো ক্লাসে আসে না শিক্ষার্থীরা।
প্রতি ক্লাসে ৪০ শিক্ষার্থী ভর্তি করার কথা থাকলেও শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি। সেই তুলনায় শিক্ষক কম। অনেক বিদ্যালয়ে শাখা নেই। শাখা খুলতে নানা জটিলতা। শিক্ষার্থীরা টিফিনের পর ক্লাসে আসে না। অভিভাবকরা শিক্ষার্থীদের নানা কাজে ব্যস্ত রাখে। শিক্ষার্থীরা আয় উপার্জনের দিকে ধাবিত হচ্ছে। মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দেয়া হয়।
তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহাগ চন্দ্র সাহা বলেন, পরীক্ষা রেজাল্ট খারাপ হয়েছে এটা সঠিক। তবে যারা পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছে তাদের জন্য বিশেষ ক্লাসের উদ্যোগ নেয়া হবে। ফলাফল ভালো করার জন্য উপজেলা প্রশাসন কাজ করছে।