ঢাকা ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

দামুড়হুদায় মালচিং পদ্ধতিতে মরিচ চাষে স্বাবলম্বী সামাদ

দামুড়হুদায় মালচিং পদ্ধতিতে মরিচ চাষে স্বাবলম্বী সামাদ

আধুনিক মালচিং পদ্ধতিতে কাঁচামরিচ চাষ করে অল্প সময়ে স্বাবলম্বী হয়েছেন টকবগে যুবক মরিচ চাষি আব্দুস সামাদ (৩৫)। সে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার চিৎলা টাওয়ারপাড়া গ্রামের বজলুর রহমান খোকনের ছেলে। মালচিং পদ্বতিতে মরিচ চাষাবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্বাবলম্বী হয়ে উঠবে অনেক অস্বচ্ছল পরিবার। গ্রামীণ অর্থনীতি দ্রত চাঙা হয়ে। মালচিং পদ্ধতিতে মরিচ ক্ষেতে প্রায় সারা বছরেই খেটে খাওয়া মানুষগুলো হাতের নাগালে বেঁচে থাকার অবলম্বন খুঁজে পাবে তিনি বলেন, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দেউলী গ্রামের কবর স্থান নামক মাঠে চলতি বছরের ১০ কাঠা জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে মরিচ চাষের পরিকল্পনা করে মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করি। সুদুর বগুড়া থেকে লাগা ফায়ার নামের মরিচে শিকড় যুক্ত জাতের ১৫০০ চারা সংগ্রহ করি। এই চারার তখন বাজার দর ছিল ৩ হাজার টাকারও বেশি। মালচিং খরচ হয়েছে ৩ হাজার টাকা। নিজের মেধা আর ইউটিউবের তথ্য আমাকে পৌঁছে দেয় এই চাষের দোরগোড়ায়। চলতি বছরের ফ্রেরুয়ারি মাসে জমিতে চারা রোপণ শুরু করি। নিবিড় পরিচর্চার মাধ্যমে মাত্র ৫ মাসের মধ্যে ফলনের মুখ দেখি। বাজারে কাঁচামরিচের আকাশচুম্বি দরের ৬০০ টাকা থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে পাইকারি এই মরিচ বিক্রি করতে শুরু করি। যা বর্তমান এখনও ভরপুর ফলন হচ্ছে। একটি গাছে ১৫ দিন অন্তর দুই কেজির বেশি মরিচ ধরছে। জমিতে এখন ১২০০টি ফলন্ত মরিচ গাছ রয়েছে। অল্প সময়ে অধিক লাভজনক আধুনিক পদ্ধতিতে মরিচ চাষ করে স্থানীয় মাঠ পর্যায়ে চাষিদের মাঝে সাড়া পড়েছে। প্রতিদিন এগিয়ে আসছে বলাই নাশক কোম্পানির জনবল। মাঠ পর্যায়ে সরাসরি তদারিকের ফলে ফসলে রোগ প্রতিরোধে সব সময় চাষিদের দোরগোড়ায় দেখা মেলে। আবার এখন আগাম জাতের ফসলাদি উৎপাদনে কোথায় কোনো বীজ ও চারা পাওয়া যায়, তার ও সন্ধান দিচ্ছেন। তাদের সার্বিক পরামর্শ আর নিজের আগ্রহকে কাজে লাগিয়ে মালচিং পদ্ধতিতে মরিচ চাষে সফল হয়েছি। আর এই ব্লকের কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কর্মকর্তাকে মাঠে ঘাটে দেখা মেলে না কালে ভাদ্রে। এই আগাম জাতের এই মরিচ চাষে রোগ মুক্ত ও বেশি ফলন যুক্ত এবং বলাই নাশক ব্যবহার কম। অল্প সময়ে আধুনিক মালচিং পদ্ধতিতে মরিচ চাষ এ জনপদে ব্যাপক সাড়া জাগাতে সক্ষম। এ পদ্ধিতে মরিচ চাষ করেতে আগ্রহী হয়ে প্রতিদিন উপজেলার দেউলী, মুক্তারপুর, হাতিভাঙ্গা, বদনপুর, নাপিতখালি, চিৎলা, হাউলীসহ বিভিন্ন গ্রামের চাষিরা মরিচ ক্ষেত দেখতে আসছে। আধুনিক মালচিং পদ্ধতিতে মরিচ চাষ করলে মরিচের চারা কোনোক্রমে বৃষ্টি পানিতে নষ্ট হয় না। আগাছার উৎপাত নেই, সার কম লাগে, পচন লাগে না, এই পদ্ধতিতে মরিচ চাষ করলে খরার তীব্রতা অতি বৃষ্টি কবলেও পড়লেও সময়মতো ফলনের কোনো ঘাটতি হয় না। বিদেশ থেকেই আমদানিনির্ভর না হয়ে দেশের মাটিতে নানা জাতের এমন উচ্চ ফলনশীল মরিচ চাষাবাদের জন্য সম্মিলিতভাবে এগিয়ে এলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব। উৎসাহি চাষিরা এগিয়ে এলে তাদেরকে সব ধারনের সহযোগিতা করতে আগ্রহী রয়েছি।

অল্প সময়ে অধিক ফলন শীল এ জাতের আবাদ করলে আর বাজার দর চাঙা থাকলে গ্রামীণ অর্থনীতি দ্রুত চাঙা হয়ে উঠবে। আমার মতো অনেক মরিচ চাষি অর্থনৈতিক স্বাবলম্বী হবে। আর মরিচ ক্ষেতে প্রায় সারা বছরেই খেটে খাওয়া মানুষগুলো বেঁচে থাকার অবলম্বন খুঁজে পাবে দামুড়হুদা কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ী সামসুল বলেন, বাজারে কাঁচামরিচের দর এবার সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। বাজারে কাঁচা মরিচের চাহিদাও ব্যাপক। চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম হবার ফলে বাজার দর বেশি হয়েছিল। উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে মরিচের বাজার দর দিন দিন কমের দিকে। উপজেলা কৃষিবিদ ও কৃষি কর্মকর্তা শারমিন আক্তার বলেন, অল্প সময়ে অধিক ফলন শীল জাতের মরিচ আবাদ করে অধিক লাভবান হওয়া যায়। চাষিদের সার্বিক পরামর্শের জন্য কৃষি বিভাগের দরজা সব সময় খোলা রয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত