ঢাকা ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

১০ বছর পর পরিত্যক্ত জমিতে আমন ধান চাষ

কৃষকদের আনন্দ
১০ বছর পর পরিত্যক্ত জমিতে আমন ধান চাষ

দীর্ঘ ১০ বছর পর আবাদের আওতায় এলো ২ হাজার একর জমি। বর্ষকালে কৃষক এখন আমন চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন বিস্তীর্ণ পরিত্যক্ত জমিতে। দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার গোয়ালডিহি ইউনিয়নের দুবলিয়া গ্রামের ৩২ বছর বয়সি কৃষক গৌতম চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ১০ বছরের বেশি সময় ধরে আমাদের জমিগুলো পরিত্যক্ত হিসেবে পড়ে থাকত। এবারই প্রথম আমন চাষের আওতায় আসল। ‘নিজেও অবাক হচ্ছি, তবে এখন চাষাবাদ করতে পেরে খুব ভালো লাগছে’। জানা যায়, আবর্জনা ও কচুরিপানায় ভরাট হয়ে বর্ষাকালে পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে যায় নলবাড়ী বিল থেকে দুবলিয়া গ্রাম পর্যন্ত প্রায় ৬-৭ কিলোমিটার জায়গা। এতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে প্রায় দশ বছর ধরে দুই হাজার একর জমি বর্ষাকালে অনাবাদি হয়ে পড়ে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিলেন ওই এলাকার কৃষকরা। বিপুল পরিমাণ জমি পরিত্যক্ত হওয়ায় ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে চাষাবাদের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টিতে ক্যানেল সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়। এক মাস আগে ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে কৃষক সমাবেশে ৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ১৫ ফুট প্রশস্ত করে ক্যানেল খননের পরিকল্পনা করা হয়। এরপর শুরু হয় কাবিখা প্রকল্পের আওতায় নলবাড়ী মাটিয়ালের ব্রিজ থেকে পুষুপাড়া পর্যন্ত প্রায় ১ কিলোমিটার এই ক্যানেল সংস্কারের কাজ। কাজের উদ্বোধন করেন গোয়ালডিহি ইউপি চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন লিটন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ইউপি সদস্য-সদস্যা এবং ওই এলাকার কৃষকরা। এতে জলাবদ্ধতা নিরসনের মাধ্যমে ওই এলাকার কৃষিজমি চাষাবাদের উপযোগী হবে শুনে আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠেন ওই এলাকার চাষিরা। দীর্ঘদিন পর তাদের জমিতে আবারো ফসল ফলবে জেনে হাসি ফুটেছে কৃষকদের চোখে মুখে। স্থানীয় কৃষকরা জানান, প্রায় দশ বছর ধরে বর্ষা আসলেই জলাবদ্ধতা তৈরি হয়ে ক্যানেলের দুই পাশে শত শত একর জমি অনাবাদি থেকে যেত। যার ফলে বর্ষা মৌসুমে আমাদের কষ্টে দিনযাপন করতে হতো।

ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে ক্যানেল সংস্কার করা হয়েছে এখন আমরা আবারো চাষাবাদ করতে পেরেছি এটা ভেবেই খুব আনন্দ লাগছে। এজন্য কৃষকরা আমরা ইউনিয়ন পরিষদকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন লিটন বলেন, ওই এলাকায় জলাবদ্ধতা ছিল একটি অভিশাপস্বরূপ। এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি রাখা যাবে না- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই নির্দেশনাকে বাস্তবায়ন করতে এবং দীর্ঘদিন ধরে এ জলাবদ্ধতায় কৃষকদের দুঃখ দুর্দশার কথা উপলব্ধি করে ক্যানেল সংস্কার করা জরুরি মনে করি। জনগণের ভোগান্তি লাঘবে দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করে যাচ্ছিলাম এমনকি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে বহুবার যোগাযোগও করেছি। পার্শ্ববর্তী জমির মালিক ও সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সহযোগিতায় এই কাজ সফল করতে পেরেছি। এখন ওই এলাকার কৃষকরা আমন চাষ করতে সক্ষম হয়েছে এবং তাদের মুখে হাসি ফুটেছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত