জিপিএ-৫ পেয়েও আয়েশার কলেজে ভর্তি অনিশ্চিত

প্রকাশ : ২১ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

বিধবা মা অন্যের বাড়িতে কাজ করে মেয়ের পড়াশোনা চালিয়েছেন। মায়ের স্বপ্ন তার মেয়ে পড়াশোনা করে ডাক্তার নয়তো ইঞ্জিনিয়ার হবে, দেশের জন্য কাজ করবে। মায়ের স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় ভালো ফল অর্জন করেছে মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকা। তারপরও কপালে চিন্তার ভাঁজ মা রুমি আক্তারের। অর্থের অভাবে মেধাবী এই ছাত্রী এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেলেও কলেজে ভর্তি নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা। আয়েশা নীলফামারী সদর উপজেলার পঞ্চপুকুর ইউনিয়নের গোবড়ার ডাঙ্গা গ্রামের মৃত আইয়ুব আলীর মেয়ে। সে পঞ্চপুকুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে প্রত্যাশিত ফলাফল অর্জন করে। মেধাবী শিক্ষার্থী আয়েশা সিদ্দিকা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলে, টাকার অভাবে আমি কি কলেজে ভর্তি হতে পারব না? আমার স্বপ্ন কি স্বপ্নই থেকে যাবে? গরিব হয়ে জন্মেছি বলেই হয়তো টাকার অভাবে লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে। আজ অবধি প্রাইভেট-কোচিং কাকে বলে জানি না। ওপরের ক্লাসের আপা-ভাইয়াদের বই, আর হাতে লেখা নোট ছিল আমার একমাত্র ভরসা। এছাড়া সরকারের দেওয়া বিনামূল্যে বই ও উপবৃত্তি টাকা পেয়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের লেখাপড়া শেষ করতে পেরেছি। আয়েশা বলে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুদান না পেলে কিংবা কোনো হৃদয়বান ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এগিয়ে না এ আমার উচ্চ শিক্ষা লাভের ইচ্ছা একবারেই চিরতরে নষ্ট হয়ে যাবে। আয়েশা সিদ্দিকার মা রুমি আক্তার বলেন, আমার স্বামী মৃত্যুর পর আমার তিন কন্যা সন্তানের ভরণ-পোষণ কীভাবে চালাবো কূল-কিনারা পাচ্ছিলাম না। আমার মেয়ে জিপিএ-৫ পেয়ে মেট্রিক পাস করল। আর দ্বিতীয় মেয়ে পঞ্চম শ্রেণি ও তৃতীয় মেয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে লেখাপড়া করছে। আমার বড় মেয়ে আয়েশার পড়াশোনা জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও হৃদয়বান ব্যক্তিদের সহযোগিতা কামনা করছি। পঞ্চপুকুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আশরাফুজ্জামান জুয়েল বলেন, আয়েশা সত্যিই একজন মেধাবী ছাত্রী। তার পরিবারের আর্থিক সামর্থ্যরে কথা বিবেচনা করে তাকে বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ দিয়েছিলাম। এখন তার লেখাপড়ায় কেউ সহযোগিতা না করলে, হয়তো তার ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার দিকে যেতে পারে। তাই এমন মেধাবীদের লালন করতে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসা প্রয়োজন। পঞ্চপুকুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওয়াহেদুল ইসলাম বলেন, আয়েশার বাবা গত ৩ বছর আগে মারা গেছেন। তার বাবার অবর্তমানে আমরা স্থানীয়ভাবে তাকে লেখাপড়ায় সাহায্য করে এসএসসি পর্যন্ত এগিয়ে নিয়েছি। কিন্তু মেয়েকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য দেশবাসীর কাছে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন বিধবা মা। তার মায়ের পাশাপাশি আমিও এই মেধাবী ছাত্রীর জন্য লেখাপড়ার খরচ চালাতে দেশবাসীর কাছে অনুরোধ জানাই।