মাধবপুরে ড্রাগন চাষে কৃষকের সফলতা

প্রকাশ : ২২ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  হীরেশ ভট্টাচার্য্য হিরো, মাধবপুর (হবিগঞ্জ)

ড্রাগন ফলের নাম শুনে চাইনিজ মনে হলেও এটি মূলত সেন্ট্রাল আমেরিকার প্রসিদ্ধ একটি ফল। দক্ষিণ এশিয়া বিশেষ করে মালয়েশিয়াতে এ ফলের প্রবর্তন করা হয় বিংশ-শতাব্দীর শেষে। বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে ভিয়েতনামে এ ফলের সর্বাধিক চাষ করা হয়। ইউটিউবে দেখে এই ড্রাগন ফল চাষে উদ্বুদ্ধ হন হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার শাহজাহানপুর ইউনিয়নের শাহপুর গ্রামের কৃষক মো. আব্দুর রউফ খলিফা। তিনি ৫৬ শতাংশ জমিতে করেন বিদেশি এই ফলের বাগান। স্থানীয়ভাবে সম্পূর্ণ অপরিচিত এ ফলের বাগান করতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন তিনি। এ সময় পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন উপজেলা কৃষি বিভাগ। মো. আব্দুর রউফ খলিফা জানান, ইউটিউবে ড্রাগন ফল চাষের ভিডিও দেখে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রথমে জমির মাটি পরীক্ষা করি। তারপর জমি প্রস্তুত করে ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে নাটোর থেকে ১ লাখ ৫৪ হাজার টাকা দিয়ে ২২০০ চারা এনে রোপণ করি। সেই বছরই জুন থেকে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত ১ লাখ টাকার ফল বিক্রি করি। পরের বছর ২ লাখ টাকার ফল বিক্রি করেছি। চলতি বছরে ছত্রাকের আক্রমণে প্রচুর ফল নষ্ট হয়ে গেছে। কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ নিয়ে ওষুধ দেওয়ার পর ঠিক হয়েছে। এ বছর এখন পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ টাকার ফল বিক্রি করেছি । গাছে আরো ফুল ও ফল আছে, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত বিক্রি করতে পারব। আস্তে আস্তে ফলের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি জানান, ৫৬ শতাংশ জমিতে বাগান করতে তার ১৭ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। খরচের টাকা উঠতে ৫ থেকে ৬ বছর লাগতে পারে। ১৮ থেকে ২০ বছর এই গাছে ফল আসবে বলে আশা করছেন তিনি। এখন তিনি নিজেই চারা উৎপাদন করতে পারেন। তাই ভবিষ্যতে বাগানে নতুন চারা রোপণের জন্য বাড়তি কোনো খরচ হবে না। নতুন করে কেউ বাগান করতে চাইলে কম খরচে চারা উৎপাদন করে দিতে পারবেন বলে জানান তিনি। উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোহন লাল নন্দী জানান, প্রথম থেকেই তিনি আমাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। সঠিক সার ব্যবস্থাপনা, পানি দেওয়ার সঠিক পদ্ধতিসহ সব ধরনের পরামর্শ দিয়েছি।

এছাড়া কিছুদিন আগে ছত্রাকের আক্রমণে ফল কালো হয়ে ফেটে নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল, আমাদের পরামর্শে ওষুধ ব্যবহার করায় এখন আর সেই সমস্যা নেই। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন হাসান জানান, এখন শিক্ষিত যুবকরা ড্রাগন ফলসহ বিভিন্ন চাষাবাদে এগিয়ে আসছে। মাধবপুরে এর মধ্যেই ৫ থেকে ৬টি ড্রাগন ফলের বাগান হয়েছে। আরো অনেক শিক্ষিত যুবক আসছেন পরামর্শের জন্য। আমরা চেষ্টা করেছি, আমাদের মাধ্যমে ড্রাগন ফল বিদেশে রপ্তানি করার জন্য।