ঢাকা ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নদীতে বাড়ছে দূষণ

মৌসুমেও পদ্মায় মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশ

মৌসুমেও পদ্মায় মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশ

নোনা জলের ইলিশ ডিম পাড়তে নদীর উজান ঠেলে আসে মিঠা পানিতে। ডিম ছেড়ে আবার ভাটিতে গা ভাসিয়ে ধরে সাগরের পথ। এর জন্য প্রয়োজন হয় পর্যাপ্ত পানিপ্রবাহের। তবে দূষণের প্রভাবে নদীতে এসে নানা প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ছে ইলিশ। বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যা নদীর দূষিত পানি মেঘনা নদীর মোহনা পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়ায় ভরা মৌসুমেও পদ্মায় কাঙ্ক্ষিত ইলিশ মাছ মিলছে না। এ ছাড়া মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার মেঘনা নদীর পারে গড়ে উঠেছে একাধিক শিল্প কারখানার বর্জ্য সরাসরি ফেলা হচ্ছে মেঘনা ও এর শাখা নদীগুলোতে। ফলে বৃদ্ধি পেয়েছে নদী দূষণ যার কারণে কমেছে ইলিশ মাছের সংখ্যা। মুন্সীগঞ্জ মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, গবেষণা বলছে বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যার দূষণ নদীর নিচ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। এখন মেঘনার মোহনা পর্যন্ত এ দূষণ পৌঁছে গেছে। দূষণের কারণে সাগর থেকে ইলিশ মাছ নদীতে আসছে না। তাছাড়া নদীতে যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ফলে প্রতিনিয়তই দূষণ বাড়ছে যার কারণে এ মৌসুমে সাগরে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়লেও পদ্মা নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা মিলছে না।

জেলেদের দাবি পদ্মা নদীর গভীরতা কমেছে, পদ্মা নদী দিয়ে অবাধে বালুবাহী বাল্কহেড চলছে ও পদ্মা নদীর মুখে ভাষানচরে নাব্য সংকটের কারণে ইলিশ পদ্মা, মেঘনায় আসতে বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে। তবে মৎস্য কর্মকর্তারা বলছে নদী দূষণ, প্রতিকূল আবহাওয়া, নদীর আয়াতন বেড়ে যাওয়ায় জেলেরা নদীতে জাল ফেলতে না পারায় মাছ পাচ্ছে না। মাওয়া মৎস্য আড়তের সাধারণ সম্পাদক হামিদুল ইসলাল বলেন, কয়েক বছর আগে মাওয়া ঘাটে প্রতিদিন ২ থেকে ৩ কোটি টাকার ইলিশ বিক্রি হতো। কয়েক বছর ধরেই এরকম বাজার আর পাচ্ছি না। পদ্মা নদীতে নাব্য সংকট দেখা দিয়েছে। অনিয়ন্ত্রিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলেও ইলিশ ধরার ক্ষেত্রে বাধা হচ্ছে।

ইলিশ আমাদের জাতীয় সম্পদ। একে রক্ষা করা উচিত। লৌহজং উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম বলেন, পদ্মা নদীতে ইলিশ মাছ নেই বিষয়টা এ রকম না। অন্যান্য বছর যে পরিমাণ মাছ পাওয়া যায়, এখনও ওই পরিমাণ ইলিশ আছে। এই সময়টিতে পানির পরিমাণ বেশি ও প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে জেলেরা জাল ফেলতে পারছে না। এজন্য মাছ ধরা পড়ছে না। এছাড়া নদীর আয়তন বেড়ে গেছে। জেলেরা প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে জাল ফেলতে না পারায় ইলিশের দেখা মিলছে না। মুন্সীগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এটিএম তৌফিক মাহমুদ বলেন, গবেষণা বলছে বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যা নদীর দূষণ নদীর নিচে নেমে মেঘনার মোহনা পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। দূষণের কারণে সাগর থেকে ইলিশ মাছ নদীতে উঠে আসছে না। তাছাড়া নদীতে যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। যত বেশি যানবাহন নদীতে চলাচল বাড়বে ততবেশি দূষণও বাড়বে, এই দূষণের কারণেই মূলত পদ্মা নদীতে ইলিশের সংখ্যা কম। তাছাড়া নদীর নাব্য ও চর পরাও একটা কারণ হতে পারে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত