ঢাকা ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ইলিশের বাড়ি চাঁদপুরে ইলিশ নেই আমদানির তুলনায় দাম কমেনি

ইলিশের বাড়ি চাঁদপুরে ইলিশ নেই আমদানির তুলনায় দাম কমেনি

চাঁদপুর নৌ-সীমানার পদ্মা-মেঘনা নদীতে রুপালি ইলিশের দেখা না মিললেও ইলিশের বাড়ি চাঁদপুরে সাগরের বড়-বড় ইলিশে এখন চাঁদপুরে ইলিশের রাজধানীখ্যাত অর্ধ শতাধিক আড়ত সরগরম হয়ে উঠেছে। দীর্ঘ কয়েক সপ্তাহ আড়তগুলো নিরব থাকার পর আবার ব্যবসায়ী, ক্রেতা-বিক্রেতা ও শ্রমিকদের আসা যাওয়ায় ব্যাপক জমজমাট হয়ে উঠেছে।

গত কয়েকদিন ধরে সাগর থেকে ৪-৫টি ইলিশের ট্রলার চাঁদপুর মৎস্য আড়তের পাশেই মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে আসছে। প্রতিটি ট্রলারে ১০০ থেকে ১৫০ মণ ইলিশ আসছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত বছর ইলিশের এ সময়কার মৌসুমে আরো বেশি ইলিশ ও চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার ইলিশ আমদানি ছিল। এ বছর সে তুলনায় অনেক কম ইলিশ আমদানি হচ্ছে। তবে এভাবে পুরো মৌসুমে আমদানি থাকলে ব্যবসায়ীরা তাদের বিগত লোকসান কাটিয়ে লাভের মুখ দেখবে। আর যদি কয়েকদিন পর ইলিশ আমদানি আবার কমে যায় তবে ব্যবসায়ীদের হতাশার মধ্যে পড়ে লোকসান গুনতে হবে। সাগরের আমদানি করা ইলিশে চাঁদপুর মৎস্য আড়ত এখন সরগরম। যে কারণে পাইকারি আড়তদার ও খুচরা বিক্রেতারা ব্যস্ততম সময় পার করছেন। বড় ট্রলার ও ট্রাকে করে সকাল থেকেই সাগরে আহরিত ইলিশ আসছে শহরের বড় স্টেশন মাছঘাটে। তবে ইলিশের দাম আগের চাইতে কিছুটা কমেছে। চাঁদপুরের পদ্মা মেঘনার এ নদীতে রুপালি ইলিশ কম পাওয়া গেলেও চাঁদপুর ইলিশের আড়ত এখন ইলিশ আমদানিতে ভরপুর আড়তগুলো।

গত সোমবার দুপুরে চাঁদপুরের সবচেয়ে বড় ইলিশের পাইকারি বাজার ঘুরে এমন দৃশ্যই চোখে পড়ে। সাগরের ইলিশগুলো অধিকাংশ ট্রলারে করে ঘাটে আসছে এবং নোয়াখালী জেলার হাতিয়া অঞ্চলের ইলিশগুলো আসছে সড়ক পথে ট্রাকে করে চাঁদপুর আড়তে। মাছঘাটের প্রায় ৫০টির অধিক আড়ত। প্রত্যেক আড়তের সামনে বড় বড় সাইজের ইলিশের স্তূপ। গত ৩-৪ বছর এত বড় সাইজের ইলিশ আমদানি হয়নি চাঁদপুরের আড়তগুলোতে বলে ব্যবসায়ীরা জানান। এবছর সর্বোচ্চ বড় সাইজের ইলিশ বেশি আমদানি হচ্ছে। বিশেষ করে ২ কেজি থেকে ৩ কেজি ওজনের ইলিশ বেশি আসছে। ছোট সাইজের ইলিশ খুবই কম দেখা মিলে।

মেসার্স ভাই ভাই ফিসারিজের বিক্রেতা শাহাদাত হোসেন বলেন, চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার ইলিশের চাহিদাই সবচেয়ে বেশি ক্রেতার কাছে। কিন্তু যে পরিমাণ আমদানি হয়, তা চাহিদার তুলনা খুবই কম বলে জানান ব্যবসায়ীরা। জেলেরা যে পরিমাণ ইলিশ পাচ্ছে, তা খুব চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। ৭০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি সাইজের লোকাল ইলিশ প্রতি কেজি ২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সাগরের ৭০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ইলিশ প্রতি কেজি ১৪০০ টাকা, এক কেজি এবং এক কেজি ওপরের সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ১৭০০ টাকা ধরে।

মাছঘাটে অনলাইনে এবং খুচরা ইলিশ বিক্রি করেন মো. মাছুদ। তিনি বলেন, আমাদের কাছে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সবচাইতে বেশি পদ্মা-মেঘনার রূপালী ইলিশের অর্ডার বেশি আসে। কিন্তু গত ৪ বছর লোকাল ইলিশের আমদানি খুবই কম। চাহিদা থাকলেও আমরা ক্রেতাদের সে চাহিদা অনুযায়ী ইলিশ মাছ দিতে পারছি না। আগে ফেসবুক পেজের মাধ্যমে বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী রুপালি ইলিশ বিক্রি করতে দেখা গেছে। এখন তারা পদ্মা-মেঘনার ইলিশ না থাকায় হতাশ হয়ে পড়েছেন। তারা এখন ব্যবসা করে না বললেই চলে। চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির সভাপতি আব্দুল বারি জমাদার বলেন, এ বছর প্রাকৃতিক কারণে ইলিশ আমদানি কম। কেননা এ সময় প্রচুর বৃষ্টি হওয়ার কথা। এ বছর তেমন বৃষ্টি হয়নি। এ বছর ২ মাস পার হয়ে গেছে ইলিশের ভরা মৌসুম। এতদিন আমরা ইলিশশূন্য অবস্থায় ছিলাম। বিগত বছর প্রতিদিন ইলিশ মৌসুমে ৭০০ থেকে ৮০০ মণ ইলিশ আমদানি হতো। সেই তুলনায় এ বছর কম আমদানি হচ্ছে। এখন গড়ে ৪০০ মণের মতো ইলিশ দক্ষিণ অঞ্চল থেকে আসছে। এভাবে আমদানি হলে ব্যবসায়ীরা কিছুটা হলেও পোষাতে পারবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত