ঢাকা ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

শেরপুরে নার্গিস বেগমের পুষ্টিবাগান

শেরপুরে নার্গিস বেগমের পুষ্টিবাগান

শেরপুরে নার্গিস বেগম নামে এক কৃষানি তার বাড়ির পরিত্যক্ত দুই শতক জমিতে গড়ে তুলেছেন পুষ্টি বাগান। এতে তার পরিবারের সদস্যদের পুষ্টি খাদ্য নিয়ে ভাবতে হচ্ছে না। বাজার থকেও পয়সা দিয়ে কিটনাশকযুক্ত পুষ্টি সবজিও কিনতে হচ্ছে না। তিনি তার বাগানে বিষমুক্ত জৈব সার ব্যবহার করে পুঁইশাক, লালশাক, কলমিশাক, ডাঁটাশাকসহ বিভিন্ন ধরনের সবজির আবাদ করেছেন। এসব সবজি চাষের জন্য ইতিমধ্যে তিনি প্রশিক্ষণ নিয়েছন। জানা গেছে, শেরপুর সদর উপজেলার কামারিয়া ইউনিয়নের সূর্যদী গ্রামের কৃষাণী নার্গিস বেগম সম্প্রতি সরকারের ‘স্মার্ট নিউট্রিশন মডেল গ্রাম’ (মডেল পুষ্টি গ্রাম) শীর্ষক প্রকল্পের উদ্যোগে প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেকে বদলে ফেলেছেন। তিনি গত সোমবার শেরপুর জেলা কৃষি বিভাগের হলরুমে অনুষ্ঠিত ‘কৃষি বিষয়ক বাজার সম্পর্কীয় অংশিজনদের নিয়ে কর্মশালায়’ উপকারভোগী হিসেবে তার বক্তব্যে জানায় তার পুষ্টিবাগানের গল্প। জানা গেছে, প্রান্তিক মানুষের জন্য পুষ্টিসমৃদ্ধ বৈচিত্র্যপূর্ণ খাবারের সহজলভ্যতা নিশ্চিতে জাতীয় পুষ্টি পরিকল্পনার আওতায় জেলা পুষ্টি পরিকল্পনার বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে তিনটি গ্রামকে মডেল হিসেবে ধরে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। জেলা ও উপজেলা পুষ্টি সমন্বয় কমিটির উদ্যোগটি বাস্তবায়নে একসঙ্গে কাজ করছে সরকারের কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ, প্রাণিসম্পদ, মৎস্য, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা, স্থানীয় সরকারসহ ২২টি সরকারি সংস্থা। সহযোগিতা দিচ্ছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশন ও উন্নয়ন সংঘ। নার্গিসের মতো সূর্যদীর আরো ১১৯ জন নারী-পুরুষ এ প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। সূর্যদীসহ পাশের দুই গ্রাম ডোবারচর ও চরকারচর নিয়ে পরীক্ষামূলক এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রতিটি গ্রাম থেকে ১২০ জন করে ৩৬০টি পরিবার যুক্ত হয়েছে এ প্রকল্পে। নার্গিস বেগম জানায়, দুই বছর আগে স্বামী হারিয়েছেন। মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার পর একমাত্র ছেলেকে নিয়েই তাঁর সংসার। কৃষিজমি থেকে আসা ফসল, গরু-ছাগল আর হাঁস-মুরগি লালন-পালন করে একাই সংসারের হাল ধরেছেন তিনি। বাড়ির আঙিনার পরিত্যক্ত দুই শতকসহ চার শতাংশ জমিতে করেছেন সবজি বাগান। এ বাগানে সার-ওষুধ ব্যবহার না করে পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ শাকসবজি উৎপাদনে বিশেষ প্রশিক্ষণ পেয়েছেন তারা। গরু-ছাগল কিংবা হাঁস-মুরগির ঘর এখন নিয়মিত জীবাণুমুক্ত ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখছেন। এর আগে হাঁস-মুরগি পাললেও এত কিছু জানতেন না তিনি। সরকারের ‘স্মার্ট নিউট্রিশন মডেল গ্রাম (মডেল পুষ্টিগ্রাম)’ শীর্ষক প্রকল্পের উদ্যোগে প্রশিক্ষণ পেয়ে নিজেকে বদলে ফেলেছেন তিনি। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে অন্যতম অংশীদার শেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক হুয়ামুন কবীর জানান, সবার জন্য পুষ্টি নিশ্চিতে সরকার বহু খাতভিত্তিক অংশগ্রহণের মাধ্যমে কাজ করছে। এরই অংশ হিসেবে মডেল পুষ্টিগ্রাম প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত