নওগাঁয় বরেন্দ্র অঞ্চলে গম-ভুট্টার চাষ বাড়াতে বিশেষ উদ্যোগ

প্রকাশ : ২৫ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আব্বাস আলী, নওগাঁ

উত্তরের বরেন্দ্র ভূমির জেলা নওগাঁ। জেলার ঠাঠা বরেন্দ্র অঞ্চল হিসেবে খ্যাত পোরশা, সাপাহার ও নিয়ামতপুর উপজেলা এবং ধামইরহাট ও পত্নীতলার উপজেলার আংশিক। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে এখানে প্রলম্বিত হচ্ছে খরা। এই পরিস্থিতিতে আশা দেখাচ্ছে আধুনিক চাষের কৌশল বেড প্ল্যান্টিং। তাতে সবদিক দিয়েই মিলবে লাভ। গবেষকরা বলছে, সংরক্ষণশীল এই কৃষি পদ্ধতিতে গম ও ভুট্টা চাষ করা যায়। এই পদ্ধতিতে চাষে সেচ, সার এবং চাষের খরচ বাঁচবে কৃষকের। রক্ষা পায় মাটির স্বাস্থ্য, সুরক্ষিত থাকে পরিবেশ। দেশে বেড প্ল্যান্টিং ছড়িয়ে দিতে কাজ করছেন গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও রাজশাহী অঞ্চল প্রধান ড. মো. ইলিয়াছ হোসেন। ২০০৪ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত সাত বছর সংরক্ষণশীল কৃষি পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করেছেন তিনি। প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ এবং বৈশ্বিক উষ্ণতা হ্রাস করা ছিল এই গবেষণার মূল উদ্দেশ্য। তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কার্যালয়ের হল রুমে জেলার পোরশা, সাপাহার ও নিয়ামতপুর উপজেলার ৬০ জন কৃষকদের আধুনিক পদ্ধতিতে উন্নত জাতের গম ও ভুট্টার উৎপাদন ও সম্প্রসারণ র্শীষক কৃষক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ২০১৫ সালের এপ্রিলে আন্তর্জাতিক কৃষি বিজ্ঞান সাময়িকীতে এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। তাতে দেখা গেছে. এই প্রযুক্তিতে চাষের খরচ কমে যায় ৬০ শতাংশ। ২৫ থেকে ৪০ শতাংশ সেচের পানি সাশ্রয় হয়। খেতে নাড়া বা খড় থাকায় ১০ থেকে ২০ শতাংশ ইউরিয়া এবং ৭ থেকে ৯ শতাংশ পটাশ সার সাশ্রয় হয়। চাষ কম লাগায় জ্বালানি সাশ্রয় হয় প্রায় ৪০ শতাংশ। টেকসই এই প্রযুক্তিতে কার্বন নিঃসরণ কম হয় প্রায় ৪৪ শতাংশ। ২০১১ সালের পর এই প্রযুক্তি কৃষকের মাঝে ছড়িয়ে দিতে কাজ করছেন গবেষক ড. ইলিয়াছ হোসেন। তিনি বলেন, এ অঞ্চল খরা প্রবণ। এই অঞ্চলে সেচের পানির ঘাটতি রয়েছে। কেবল পানির অভাবে আমন মৌসুমে ৭৫ হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি পড়ে থাকে। এই জমি চাষের আওতায় আনা সম্ভব হলে অতিরিক্ত প্রায় ৩০ টন ফসল ফলানো সম্ভব। এসব জমি গম-ভুট্টা চাষের বিশেষ উপযোগী। সংরক্ষণশীল কৃষি প্রযুক্তিতে চাষাবাদ করা গেলে ব্যাপক পরিমান গম-ভুট্টা উৎপাদন সম্ভব। কর্মশালায় অংশ নেওয়া সাপাহার উপজেলার কৃষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের এলাকায় ধান চাষ হয়না বললেই চলে। খরা হওয়ার কারনে অনেক জমি অনাবাদি পড়ে থাকে। এখানে প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেক কিছুই জানতে পারলাম। আমি গম ও ভুট্টার আবাদ শুরু করব এবার। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাজশাহী অঞ্চল এর অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ শামছুল ওয়াদুদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ।