মধুপুরে নিষিদ্ধ জালের থাবায় হুমকির মুখে মাছ ও জীববৈচিত্র্য

প্রকাশ : ২৮ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলকামা সিকদার, মধুপুর (টাঙ্গাইল)

টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার খাল, বিল, নদী নালা, ডোবা জলাশয়ে দেশীয় মাছের উপর ভয়াল থাবা মেরেছে নিষিদ্ধ চায়না জাল। বিল, নদী-নালায় চলছে নিষিদ্ধ এ জাল দিয়ে মাছ নিধনের মহোৎসব। ফলে নদী, খাল-বিল ও ডোবা জলাশয়ের মাছ মাছের ডিম ও জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে। এসব জালে গিলে খাচ্ছে দেশি প্রজাতি মাছের বংশ বিস্তার। গোষ্ঠীমারা জালের ভয়াল থাবায় জলাশয় থেকে হারিয়ে যাচ্ছে দেশি প্রজাতির সুস্বাদু মাছ। জীববৈচিত্র্য পড়ছে ধ্বংসের মুখে, মাছ খাদ্য হারাচ্ছে আশঙ্কাজনক হারে। স্থানীয়দের দাবি এসব নিষিদ্ধ জালে মাছ ধরা, বিপণন, ক্রয়-বিক্রয় বন্ধের মাধ্যমে দেশি প্রজাতির মাছ রক্ষার পাশাপাশি জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এগিয়ে আসতে হবে। প্রশাসনের নজরদারি বাড়াতে হবে। মৎস্য বিভাগের মনিটরিং জোরদার করার দাবি স্থানীয়দের। অপ্রতিরোদ্ধ নিষিদ্ধ জালের মাছখেকোদের বন্ধ করতে না পারলে দেশি মাছের ঐতিহ্য অচিরেই হারিয়ে যাবে- এমনটাই ধারণা স্থানীয়দের। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, মধুপুরের গোলাবাড়ী থেকে শুরু করে চাপড়ী বাজার পর্যন্ত বংশাই নদীর পুরো এলাকাজুড়ে রয়েছে এ চায়না নিষিদ্ধ জাল, এছাড়া হাওদা বিল, কামাইদা বিল, গোজা খাল, ক্ষীর নদী, ডাহা বিলসহ বিভিন্ন এলাকায় নিষিদ্ধ চায়না জালে দেদারছে মাছ নিধন চলছে। চায়না জালে রেণু পোনা ডিমওয়ালা থেকে শুরু করে ছোট-বড় সব ধরনের মাছ জালে আটকা পড়ছে। ছোট বড় প্রায় সব জলাশয়ে এসব নিষিদ্ধ জাল দিয়ে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে রাত-দিন মাছ নিধন চলছে। পানির উপর থেকে তাকালে এসব জাল দেখার কোনো সাধ্য নেই। বুঝা যাবে না পানিতে জাল পাতা আছে। পানি প্রবাহের পুরো অংশজুড়ে পাতা থাকে এসব জাল। স্রোতের প্রবাহে যা ভেসে যাবে, সব জালের ফাঁদে আটকা পড়বে। ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই মাছ কিংবা জলজ প্রাণীর। এসব জাল একবার পানিতে স্থাপন করলে পুরো বছরজুড়ে মাছ নিধন চলে। দিনে দুই তিনবার আটকে পড়া মাছগুলো আহরণ করলেই চলে। এ জালকে এলাকাবাসী যাদুর জাল বা ইঞ্জিন জালও বলে থাকেন। সব প্রজাতির মাছ অনায়াসেই এ চায়না জাল আটকা পড়ে। শুধু মাছই নয় কাঁকড়া, কুচিয়া, কচ্ছপ, সাপ, শামুকসহ বিভিন্ন জলজ প্রাণীও এ জালে আটকা পড়ে, যার ফলে জলজ উদ্ভিদ ও জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে। মধুপুর ঊপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম বলেন, নদীতে পানি আসতে শুরু করায় অবৈধ চায়না জালের ব্যবহার বাড়ছে। অবৈধ জাল বন্ধে বিভিন্ন স্থানে প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এছাড়া বেশ কয়েকটি স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এ জাল নিধন ও জরিমানাও করা হচ্ছে। এছাড়া স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে, যাতে নদী-নালা, খাল-বিলে অবৈধ চায়না জাল ব্যবহার না করা হয়। এসব নিষিদ্ধ জাল নিধনের জন্য অভিযান পরিচালনা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান। এজন্য তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন।