ঢাকা ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নড়াইলে ভোঁদড় দিয়ে মাছ শিকার!

নড়াইলে ভোঁদড় দিয়ে মাছ শিকার!

মাছ তাড়া করে শিকার করতে পছন্দ করে বিলুপ্তপ্রায় জলজ প্রাণী ভোঁদড়। তাদের এ আচরণকে কাজে লাগিয়ে মাছ ধরার কাজে ব্যবহার করছে নড়াইলের ৪০ জেলে পরিবার। নড়াইল সদর উপজেলার কলোড়া ইউনিয়নের গোয়াইলবাড়ী গ্রামে অন্তত ২০০ জেলে পরিবারের বসবাস। এর মধ্যে ৪০টি পরিবারের পাশাপাশি উপজেলার রতডাঙ্গা ও পংকবিলা গ্রামের আরো কয়েকটি পরিবার এভাবে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করছে। জানা যায়, ভোঁদড় পানিতে মাছ শিকার করে খেতে পছন্দ করে। এজন্য তাদের ব্যবহার করে মাছ শিকারের কৌশল হিসেবে প্রতিটি জেলে নৌকার এক প্রান্তে খাঁচা রাখেন। মাছ ধরার সময় খাঁচার ডালা খুলে দেওয়া হয়। জেলেরা নৌকায় বাঁধা জাল নদীতে ফেলে ভোঁদড় ছেড়ে দেন। যাতে পালিয়ে না যায় এজন্য ভোঁদড়ের গলায় রশি বাঁধা থাকে। নৌকা নদীর তীরে আসতে থাকে আর ভোঁদড়ের তাড়া খেয়ে মাছ জেলেদের জালে এসে ধরা পড়ে। এভাবেই মাছ শিকার করে আসছেন তারা।

তারা আরো জানান, প্রতিটি ভোঁদড় বছরে সাত থেকে আটবার বাচ্চা দেয়। গড়ে ১০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে এরা। পূর্ণ বয়স্ক একটি ভোঁদড় ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। গোয়াইলবাড়ী গ্রামের জেলে নিমাই বিশ্বাস বলেন, ‘ভোঁদড় দিয়ে মাছ শিকার করেই আমাদের জীবন চলছে। যে পরিমাণ মাছ পাই, তা দিয়ে মোটামুটি চলে যায়। তবে নদীতে পানি বেশি থাকলে সুন্দরবন পর্যন্ত চলে যাই মাছ ধরতে।’

উন্নয়নকর্মী সাহেদ আলী শান্ত বলেন, আগের মতো তেমন আর ভোঁদড় দেখা যায় না। ২০১২ সালের ১২ জুলাই বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা বিষয়ে একটি আইন পাস হয়েছে। এ আইন পাসের ১৮০ দিনের মধ্যে কোনো ব্যক্তির কাছে সংগৃহীত ও সংরক্ষিত কোনো বন্যপ্রাণী থাকলে সেগুলো নিবন্ধন করার বিধান রয়েছে। তবে এগুলো সংরক্ষণে তেমন জোর দেওয়া হয়নি। নড়াইল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এইচএম বদরুজ্জামান বলেন, ভোঁদড় দিয়ে জেলেদের মাছ ধরা পেশা হলেও বিলুপ্তপ্রায় এ প্রাণী সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। কিন্তু এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের আলাদা কোনো নীতিমালা বা বরাদ্দ না থাকায় কোনো কিছু করা সম্ভব হচ্ছে না।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত