ঢাকা ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নওগাঁয় আউশ ধান কাটাই মাড়াইয়ে ব্যস্ত কৃষক

ফলন ভালো হওয়ায় খুশি চাষিরা
নওগাঁয় আউশ ধান কাটাই মাড়াইয়ে ব্যস্ত কৃষক

উত্তরের জেলা নওগাঁয় আউশ ধান কাটাই-মাড়াইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। মাঠের ফসল ঘরে উঠাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। এ বছর আবহাওয়া ভালো থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে। এতে খুশি চাষিরা। তবে বাজারে নতুন এ ধানের দাম কিছুটা কম। প্রতি মন ধান ১ হাজার ২০০ টাকা হলে খরচ বাদে লাভের মুখ দেখবেন বলে জানিয়েছেন চাষিরা। আউশ ধানের আবাদকে বলা হয় আপৎকালীন ফসল। মৌসুমের শুরুতে অনাবৃষ্টির কারণে কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়তে হলেও পরে বৃষ্টিতে আবাদের জন্য সুবিধা হয়েছে। নওগাঁর মাঠে মাঠে এখন দোল খাচ্ছে কৃষকের সেই আপৎকালীন সোনালি ধান। আউশ ধান কাটাই-মাড়াই শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে ১০ শতাংশ ধান কাটাই-মাড়াই শেষ হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় খুশি চাষিরা। কৃষক জানান, এ বছর শ্রমিকের মজুরি, জ্বালানি তেল, সার ও কীটনাশকের দাম বেড়েছে। এ কারণে আউশের আবাদ করতে বিগত বছরের তুলনায় প্রায় ২ হাজার টাকা উৎপাদন খরচ বেড়েছে। এতে জমি রোপণ থেকে শুরু করে ধান কৃষকের ঘরে উঠানো পর্যন্ত খরচ হচ্ছে বিঘাপ্রতি প্রায় ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা। বিঘাপ্রতি ফলন হচ্ছে ১৭ থেকে ২০ মন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হওয়ার পাশাপাশি ধান কেটে ঘরে তুলছেন চাষিরা। বাজারে প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকা মন দরে। তবে প্রতি মণ ধান ১ হাজার ২০০ টাকা হলে উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে লাভ থাকবে বলে জানিয়েছেন চাষিরা।

প্রতি বিঘা জমিতে পানি সেচে খচর গুনতে হয় ২ হাজার টাকা। নিয়মিত বৃষ্টি হওয়ায় এ বছর বিঘাতে খরচ কমেছে অন্তত ১ হাজার টাকা। সে হিসাবে ৫৮ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে পানি সেচে খরচ কমেছে প্রায় ৪৩ কোটি ৬৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। জেলায় যে পরিমাণ আউশের আবাদ হয়েছে তা থেকে প্রায় ২ লাখ ৬৮ হাজার ২৪০ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হবে, যার বাজার মূল্য প্রায় ৮০৪ কোটি ৭২ লাখ টাকা। আউশ চাষে কৃষকদের উদ্বৃদ্ধ করতে বীজ ও সার প্রনোদনা দেওয়া হয়েছে। জেলার সাপাহার উপজেলার দীঘির হাট গ্রাম থেকে জেলার মহাদেবপুর উপজেলায় ১৫ জন শ্রমিক ধান কাটার জন্য আসছেন। তাদের মধ্যে দ্বিপেন চন্দ্র বর্মন বলেন, প্রতি বিঘা জমিতে ২ হাজার থেকে ২হাজার ৫০০ টাকা চুক্তিতে ধান কাটছেন। আবার কোথাও প্রতি মনে ৬ থেকে ৭ কেজি হিসেবে মজুরি নেওয়া হচ্ছে। এ বছর ধানের ফলন ভালো হয়েছে। কৃষকও খুশি। মহাদেবপুর উপজেলার দারশা গ্রামের কৃষক রেজাউল ইসলাম বলেন, প্রতি বিঘা জমিতে ধানের চারা লাগানো থেকে শুরু করে ঘরে উঠানো পর্যন্ত প্রায় ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ হয়। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বিঘাতে ১৭ থেকে ১৯ মন হারে ফলন হয়েছে। প্রতি মন ধান বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকা। ধানের দাম তুলনামূলক কম। তবে লাভ না হলেও লোকসান হয়নি। নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ বছর জেলায় ৬৭ হাজার ৬৫ হেক্টর জমিতে আউশ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে অনাবৃষ্টির কারণে এর বিপরীতে ৫৮ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় এবং রোপা আমনে সেই ঘাটতি পুশিয়ে যাবে। ইতোমধ্যে ধান কাটাই-মাড়াই শুরু হয়েছে। ব্রি-৪৮ ও ব্রি-৯৮ জাতের ধানে ভালো ফলন হচ্ছে। গড়ে ৩ দশমিক শূন্য ৫ মেট্রিক টন চাল এবং ৪ দশমিক ৫ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হচ্ছে, যা বিগত বছরের তুলনায় বেশি। এছাড়া রোপা আমন থেকেও বাম্পার ফলনের আশা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত