ঢাকা ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মাধবপুরে পাঁচ চা বাগান

বাগান বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা

বাগান বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা

হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার পাঁচটি চা বাগানের ভবিষ্যৎ নিয়ে বাগান ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ হতাশার মধ্যে পড়েছেন। করোনাকালীন সময়ের পর থেকে গত ৪ বছর ধরে লোকসান টানতে হচ্ছে বাগানগুলোকে। দিনে দিনে লোকসানের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। গত ৪ বছরে শ্রমিকের মজুরি, গ্যাস, বিদ্যুৎ, আবাসন খরচ ও ওষুধসহ বিভিন্ন উৎপাদন খরচ কয়েক গুণ বেড়েছে। কিন্তু সে অনুযায়ী চায়ের চাহিদা ও বাজার দর বৃদ্ধি পায়নি। এ অবস্থায় পাঁচটি চা বাগানের ব্যাংক দেনার পরিমাণ বেড়ে গেছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এখন ঋণের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে মাধবপুর উপজেলার পাঁচটি চা বাগান লোকসানের মধ্যে পড়ে যে কোনো সময় বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। মাধবপুর উপজেলার পাঁচটি চা বাগানের মধ্যে তেলিয়াপাড়া ও জগদীশপুর ৫১ শতাংশ মালিকানা নিয়ে ন্যাশনাল টি কোম্পানি ১২টি চা বাগানের মধ্যে এ দুটি চা বাগানও পরিচালনা করছেন। সুরমা, নোয়াপাড়া ও বৈকন্ঠপুর চা বাগান ব্যক্তি মালিকানাধীন। নোয়াপাড়া চা বাগানের ডেপুটি ম্যানেজার সোহাগ মাহামুদ বলেন, ব্রিটিশ ফিনলে কোম্পানি থেকে তৎকালিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুর্শেদ খান বাগানটি ক্রয় করে পরিচালনা করে আসছেন। বাগানে কারখানা বর্ধিতকরণসহ নতুন বাগান সৃজন করে চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধি করে। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে চা বাগানে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিশেষ করে খরার কারণে উৎপাদন কমে যাওয়ায় তাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। বৈকণ্ঠপুর চা বাগানের ব্যবস্থাপক সামসুল ইসলাম জানান, বৈকন্ঠপুর চাবাগানটি একটি ছোট বাগান, শ্রমিক সংখ্যা প্রায় ৪০০। আমানত শাহ গ্রুপ ৫/৬ বছর আগে বাগানটির মালিকানা ক্রয় করে বাগানে উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মোটা অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ওই বাগানে লাভের মুখ দেখেনি। বছর বছর লোকসানের বোঝা টানতে টানতে এক সময় বাগানটি বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জগদীশপুর চা বাগানের একটি সূত্র জানায়, ন্যাশনাল টি কোম্পানির মালিকানাধীন জগদীশপুর চা বাগানের অবস্থাও তেমন ভালো নয়। চা বাগানের ভেতরে গত কয়েক বছর ধরে চায়ের গাছ মরে যাওয়ায় চায়ের উৎপাদন অনেক কমে গেছে। চায়ের গুণগত মানও তেমন ভালো নয়। নতুন করে পতিত জায়গায় ছোট চা গাছ লাগানোর পর পরিচর্যার অভাবে সৃজিত নতুন বাগান সফল হয়নি। শ্রমিকের মজুরি ১৫০ টাকা থেকে বেড়ে ১৭০ টাকা হওয়ায় বাগান কর্তৃপক্ষকে এখন অতিরিক্ত টাকা দিতে হচ্ছে। একদিকে সব মিলে বেড়েছে উৎপাদন খরচ। কমেছে চায়ের উৎপাদন ও বাজার দর। এ কারণে গত ৮ থেকে ১০ বছর ধরে লাভের মুখ দেখতে পারছে না বাগান কর্তৃপক্ষ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত