এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা চলাকালে প্রশ্নফাঁস ও গুজব ঠেকাতে সারা দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে সরকার। তবে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অবাধে চলছে মানিকগঞ্জের সব কোচিং সেন্টার। গত ১৭ আগস্ট শুরু হয়েছে এইচএসসি পরীক্ষা। প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতে ১৪ আগস্ট থেকে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। রাজধানীর সেগুনবাগিচার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে গত ৮ আগস্ট শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি এ ঘোষণা দেন। এ উদ্যোগকে অনেকে স্বাগত জানালেও বাস্তবতা ভিন্ন। মানিকগঞ্জে বন্ধ হয়নি কোচিং বাণিজ্য। সরেজমিনে শহরের গঙ্গাধর পট্টির প্রফেসর হাউজিং সোসাইটি, সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ ও মহিলা কলেজ এলাকা, নগর ভবনের রিজার্ভ ট্যাংকি এলাকা, সরকারি ৮৮ প্রাইমারি বিদ্যালয় এলাকা, গার্লস স্কুল এলাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় প্রকাশ্যে কোচিং সেন্টার পরিচালনা করতে দেখা গেছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, কিছু অসাধু শিক্ষক নিয়মের তোয়াক্কা না করে জড়িয়ে পড়ছেন কোচিং বাণিজ্যে। এইচএসসি পরীক্ষা চললেও সকালে অথবা রাতে ভিন্ন কৌশলে ক্লাস নিচ্ছেন তারা। বিভিন্ন উপজেলা এবং শহরে রাত ৮টা থেকে ৯টার পরও ব্যাগভর্তি বই নিয়ে শিক্ষার্থীদের আনাগোনা চোখে পড়ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, নির্দিষ্ট শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট বা কোচিং না করলে পরীক্ষায় নম্বর কম অথবা ফেলের শঙ্কা থাকে। ইউনিক আইসিটি লার্নিং সেন্টারের পরিচালক মো. সিয়াম বিশ্বাস বলেন, সকলেই কোচিং চলমান রেখেছে আমি কেন বন্ধ রাখবো। আমার চেয়ে বড় বড় যারা আছে তারাই নির্দেশনা মানছে না আমি তো ছোট। স¤্রাট কোচিং সেন্টারের পরিচালক বলেন, আমাদের ঘর ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল দিতে হয় এজন্য খোলা রেখেছি। তাছাড়া এতদিন বন্ধ রাখলে ছাত্রছাত্রী কমে যাবে। সরকার আমাদের কথা না ভেবেই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। সরকারি দেবেন্দ্র কলেজের ইংরেজি শিক্ষক পড়াচ্ছেন তার নিজের মতো করে। তিনি বলেন, কোচিং বন্ধের কথা শুনেছি কিন্তু নিজ চোখে দেখিনি। নগরীতে ঘুরে বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় নিজস্ব পরিবহনেও শিক্ষার্থীদের আনা-নেওয়া করতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) শুক্লা সরকার বলেন, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী আমাদের ম্যাজিস্ট্রেটদের বলা আছে তারা সকাল ও বিকেলে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছে। সূত্র বলছে, প্রতিবছরই এ ধরনের নির্দেশনা দেয়া হলেও তা বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয় না। যার কারণে কোচিং সেন্টারগুলো নির্দেশনা অমান্য করে নিয়মিত তাদের ব্যবসা পরিচালনা করে যাচ্ছে। ফলে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সুযোগ থেকেই যাচ্ছে। কারণ এসব কোচিংয়ে দেশের বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষকরা ক্লাস নেন। তারা কখনো কখনো কোচিংয়ের সুনাম ধরে রাখতে প্রশ্নপত্র ফাঁসের মতো জঘন্য কাজেও লিপ্ত হচ্ছেন।