দেশ-বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে দক্ষিণ চট্টগ্রামের পেয়ারা

প্রকাশ : ৩০ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  গোলাম কাদের, পটিয়া (চট্টগ্রাম)

বাংলার আপেল নামে খ্যাত দক্ষিণ চট্টগ্রামের পেয়ারা স্বাদে-গুণে ভরপুর। প্রকৃতিগত কারণে পেয়ারার স্বাদ সুমিষ্ট ও ঘ্রাণ মোহনীয় এবং দেখতে খুব সুন্দর। ভিটামিন-সিতে ভরা ও পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এ পেয়ারা। মৌসুমে কাকডাকা ভোর থেকে শুরু হয় পেয়ারা চাষি ও শ্রমিকদের কর্মব্যস্ততা। শত শত শ্রমিক কয়েক মাইল পথ পাড়ি দিয়ে পাহাড় ও পাহাড়ের পাদদেশের বাগান থেকে বিশেষভাবে লালসালুতে মুড়িয়ে কাঁধে করে পেয়ারা নিয়ে বাজারে আসে। এরপর লালসালুর পুঁটলিতে বাঁধা অবস্থায় থরে থরে সাজানো হয় পেয়ারার সারি। তা দেখে ক্রেতা-বিক্রেতারা সহজেই আকৃষ্ট হন। চলে দরদাম-বেচাকেনা। দেশের বিভিন্ন স্থানে পেয়ারা কেজি দরে বিক্রি হলেও এখানে পাইকাররা কেনে শ’ হিসাবে আর তারা বিক্রি করে ডজন হিসেবে। মৌসুমের শুরুতে প্রতি ডজন পেয়ারা ১০০-১৫০ টাকায় বিক্রি হয়। দক্ষিণ চট্টগ্রামে পাহাড় ও পাহাড়ের পাদদেশে উৎপাদিত স্বাস্থ্যসম্মত পেয়ারা প্রতিবছর মৌসুম শুরু হলে দক্ষিণ চট্টগ্রামের হাট-বাজারগুলোতে পাইকারি ও খুচরা পেয়ারা বিক্রেতাদের আনাগোনা বেড়ে যায়। জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে টানা চার মাস ধরে বাগানে উৎপাদিত পেয়ারা পাওয়া যায়। এই মৌসুমে পেয়ারা বহন ও বিক্রির সঙ্গে ১০-১৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। প্রচুর বৃষ্টিপাতে পাহাড় ও পাহাড়ের পাদদেশে জমা হওয়া নতুন পলিমাটিতে পেয়ারার চাষ হয়। এই পলি খুব উর্বর। ফলে পেয়ারা চারার গোড়ায় কোনো ধরনের রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হয় না। গাছে কোনো ধরনের কীটনাশকও ছিটানোর প্রয়োজন হয় না। এ কারণে জৈব সারে উৎপাদিত (অর্গানিক) পেয়ারা বা স্বাস্থ্যসম্মত পেয়ারা বলা হয়। চাষিরা ডাঁটা ও পাতাসহ এই পেয়ারা সংগ্রহ করে থাকেন। তাই ফরমালিন ও রাসায়নিক দ্রব্য মেশানো ছাড়াই চার-পাঁচ দিন অনায়াসে সংরক্ষণ করা যায়। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়, মৌসুমে পেয়ারা বাগানগুলোতে হেক্টরপ্রতি গড়ে ১৫-১৬ টন করে পেয়ারা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। মৌসুমে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশ ঘেঁষে গড়ে ওঠা দোহাজারী, বাগিচাহাট, খানহাট, কাঞ্চননগর, চক্রশালা, হামিশমুর, বাদামতল, রৌশনহাট ও পটিয়া কমলমুন্সীরহাট, দারোগা হাট, হাইদগাঁও সাতগাউছিয়া মাজার গেট, পানবাজার, ভট্টাচার্য্য হাট, এলাকায় রীতিমতো বসে পাইকারি পেয়ারার হাট।