বাজারে আসছে শিমের নতুন জাত ‘রূপভান’

প্রকাশ : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি

ঈশ্বরদীর মুলাডুলিতে শিমের নতুন জাত ‘রূপভানের’ ফুলে ভরে গেছে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। যেদিকে তাকানো যায় শুধু এ ফুলের দৃশ্যই চোখে পড়ে। এরই মধ্যে শিমের নতুন জাত ‘রূপভান’ বাজারে আসতে শুরু করেছে। ফুল বাছাই আর গাছের পরিচর্যায় মহাব্যস্ত ঈশ্বরদীর শিম চাষিরা। শিম শীতকালীন সবজি হলেও আগাম জাতের শিম চাষ ও তা থেকে ফলন প্রাপ্তি শুরু হয়েছে ঈশ্বরদীতে। আসছে শীত, তাই দেশের প্রধান শিম উৎপাদনকারী এলাকা হিসেবে পরিচিত ঈশ্বরদীর মুলাডুলিতে এখন চলছে শিম চাষের জোর প্রস্তুতি। কৃষকরা এখন মহাব্যস্ত। খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে ঈশ্বরদীর মুলাডুলিসহ পার্শ্ববর্তী প্রায় ২৫ গ্রামের মানুষ প্রেটিন সমৃদ্ধ এই সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। শীতকালীন সবজি ফসল হলেও শিম চাষের উপযুক্ত সময় হওয়ায় ঈশ্বরদীর প্রায় ৩ হাজার শিম চাষি এখন তাদের নিজ জমি ও খাজনা করা জমিতে রোপণ করা শিম গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এখন মুলাডুলির যেদিকে তাকানো যায় শুধুই শিম ফুলের সমারহ চোখে পড়ে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে মুলাডুলির বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। ঈশ্বরদীতে শিম চাষের সঙ্গে প্রায় ১১ হাজার পরিবার সরাসরি জড়িত। শিম চাষের কারণে কয়েকশ’ বেকার তরুণ এখন স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছে। মুলাডুলির বিভিন্ন গ্রামে কয়েক বছর আগেও যেখানে পাকা বাড়ি-ঘর তেমন একটা খুঁজে পাওয়া যেত না, সেই মুলাডুলিতেই এখন শুধুমাত্র শিম চাষের জন্য পাকা ঘর-বাড়ি তৈরির পাল্লা চলছে। মুলাডুলি ছাড়াও ফরিদপুর, আটঘোড়িয়া, শেখপাড়া, রামনাথপুর, রাজাপুর, হাজারীপাড়া, পারখিদিরপুর, দুবলাচারা, পতিরাজপুর, গোপালপুর, মাঝগ্রামসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার প্রায় শতকরা ৯০ ভাগ মানুষ এখন শিম চাষের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। এ এলাকার ৯৫ ভাগ জমিতে শিম চাষ হওয়ার কারণে মুলাডুলিতে গড়ে উঠেছে দেশের শিম বিপণনের প্রধানকেন্দ্র। শিম উৎপাদনের সময় এই মুলাডুলি থেকেই প্রতিদিন ৮০ থেকে ১০০ ট্রাক শিম ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো করা হয়। ক্রেতা-বিক্রেতার পদভারে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মুখরিত থাকে মুলাডুলির শিম বাজার। মুলাডুলির অন্যতম বড় শিমচাষি আমিনুর রহমান (শিম বাবু) জানান, বর্তমানের শিম চাষের পুরো মৌসুম চলছে। শিমের নতুন জাত ‘রূপভান’ বাজারে উঠছে জানিয়ে তিনি বলেন, আগাম আবাদের কারণে রূপভান নামের এই শিম বাজারে ব্যাপক চাহিদা এবং দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিদিন প্রায় ৪ থেকে ৫ মণ শিম বাজারে আসছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ব্যাপকভাবে এই শিম বাজারজাত করা হবে। এদিকে ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিতা রানী সরকার জানান, কৃষকরা এখন মাচা ও ফুল বাছাইয়ের কাজে ব্যস্ত রয়েছে। আগাম জাতের কিছু নতুন শিম বাজারে আসতে শুরু করেছে। কৃষকরা দামও পাচ্ছে ভালো। কৃষি বিভাগ শিম চাষিদের সার্বিক সহযোগিতা করছে জানিয়ে তিনি বলেন, গতবারের চেয়ে এ বছর ফলন ভালো হবে বলেও জানান তিনি।