নওগাঁয় বদলে যাচ্ছে নৃগোষ্ঠীর জীবনমান

প্রকাশ : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আব্বাস আলী, নওগাঁ

সরকারের নানামুখী কর্মপরিকল্পনায় নওগাঁয় সমতল ভূমির ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর জীবনমানের উন্নয়ন হচ্ছে। প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে গবাদিপশু-গরু, ভেড়া ও হাঁস বিতরণ করা হয়েছে। এতে সুফল পেতে শুরু করেছে তারা। অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বীর পাশাপাশি বদলে যাচ্ছে তাদের জীবনমান। এছাড়া শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ পাওয়ায় বাড়ছে শিক্ষার হার। তবে এখনও অনেকে এই তালিকায় নাম না থাকায় পাচ্ছেন না সুবিধা। উত্তরের বরেন্দ্র ভূমির জেলা নওগাঁ। এ জেলায় ২৯টি জাতীসত্তার প্রায় ৩ লাখ বিভিন্ন ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীদের বসবাস। হতদরিদ্র এসব ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীরা জীবন-জীবিকার জন্য ভাগ্যবদলে নারী-পুরুষ উভয়ে কাজ করেন মাঠে ঘাটে। তাদের জীবনমান উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নেওয়া হয়েছে বিশেষ প্রকল্প। এসব প্রকল্পের মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বীর পাশাপাশি বদলে যাচ্ছে তাদের জীবনমান। শিক্ষা উপকরণ ও উপবৃত্তি পাওয়ায় অনেকটা ঝড়েপড়া রোধ হয়েছে। জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্যমতে- জেলার ১১টি উপজেলার মধ্যে আত্রাই উপজেলায় কোনো ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী না থাকায় বাকি ১০টি উপজেলায় সমতল ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীদের জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্প চালু রয়েছে। ২০২০ সালের মে মাস থেকে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় জেলায় ২৩ হাজার ১২৬ জন গবাদিপশু হিসেবে- বকনা গরু, ষাঁড়, ভেড়া, ছাগল, হাঁস ও মুরগি এবং দানাদার খাবারসহ গৃহনির্মাণ উপকরণ পাবে। এরই মধ্যে ৫০ শতাংশ বিতরণ হয়েছে। ১ হাজার ৩৭২টি পরিবার একটি করে বকনা, সঙ্গে ৯০ দিনের ২২৫ কেজি দানাদার খাবার এবং গৃহনির্মাণ উপকরণ দেওয়া হয়েছে। ৪ হাজার ৫৩৪টি পরিবার দুইটি করে ভেড়া, ২৭ কেজি দানাদার খাবার এবং গৃহনির্মাণ উপকরণ পেয়েছে। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের শিক্ষা শাখা ও রাজস্ব শাখা সূত্রে জানা যায়, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ২৮৫টি বাইসাইকেল, গৃহনির্মাণ ২৬৩ জন এবং ৯৫০ জনকে উপবৃত্তি প্রদান করা হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থ বছরে ৫৬৫টি বাইসাইকেল, ২৫২ কে গৃহনির্মাণ এবং ২ হাজার ১৪ জনকে উপবৃত্তি প্রদান করা হয়েছে। ২০২০-২১ অর্থ বছরে ২৬০টি বাই সাইকেল, গৃহনির্মাণ ৩৪৪টি, শিক্ষা উপবৃত্তি ২ হাজার ৯ জন এবং ৭৫৬ জনকে শিক্ষা উপকরণ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষ্যে ৪৩১টি গৃহপ্রদান করা হয়েছে। নওগাঁ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো: মহির উদ্দীন বলেন- সমতল ভূমিতে বসবাসরত ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীরা এরই মধ্যে উপকৃত হতে শুরু করেছে। অনেকের বকনা থেকে এখন বাচ্চা হয়েছে এবং দুধ পাচ্ছে। দুধ বিক্রিও করছে। এতে তারা আর্থসামাজিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে।

যাদের গবাদিপশু দেওয়া হয়েছে, তারা যত্ন সহকারে লালন-পালন করছে। নওগাঁ-১ আসনের সাংসদ খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন- দেশকে সমৃদ্ধশালী উন্নত বাংলাদেশ গড়তে হলে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী বিশেষ করে ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীদের সমপর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। তাদের সমপর্যায়ে নিয়ে আসতে হলে প্রথম লেখাপড়া করতে হবে। এ জন্য তাদের শিক্ষা উপবৃত্তি ও উপকরণ থেকে শুরু করে জীবনমান উন্নয়নে গবাদিপশু ও গৃহ প্রদান করা হয়েছে। সমতল ভূমির ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীদের জন্য সরকার পৃথক সেল তৈরি করেছে। যেখান থেকে তাদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করা হচ্ছে।