ঢ্যাঁড়স চাষে লাভবান কৃষক

খাদ্য তালিকায় ঢ্যাঁড়স একটি জনপ্রিয় সবজি। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি ও সি রয়েছে। এছাড়া পর্যাপ্ত আয়োডিন, ভিটামিন এ এবং বিভিন্ন খনিজ পদার্থ রয়েছে। তথ্যমতে ঢ্যাঁড়স নিয়মিত খেলে গলাফোলা রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। এটি মানুষের হজমশক্তি বাড়াতেও সহায়তা করে থাকে। ফলে অন্যান্য সবজির পাশাপাশি স্থানীয় বাজারে ঢ্যাঁড়সের ব্যাপক চাহিদা। বাজারের চাহিদা এবং ভালো ফলন হওয়ায় ঢ্যাঁড়স চাষাবাদে আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের। অন্যান্য সবজির মতো চাষাবাদে বড় কোনো জমিতে ঢ্যাঁড়স চাষ নজরে না আসলেও চাহিদা অনুযায়ী কমবেশি ছোট ছোট ক্ষেত চোখে পড়ার মতো। অধিকাংশ কৃষকরা বিভিন্ন সবজিক্ষেতের চারপাশে ঢ্যাঁড়স চাষ করছেন। ঢ্যাঁড়স চাষে সার কীটনাশক ছাড়া তেমন কোনো খরচ হয় না। অনুকূল আবহাওয়া থাকায় ভালো ফলন পেয়ে লাভজনক এই সবজির চাষাবাদ দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে ময়মনসিংহের নান্দাইলে। এ উপজেলার গ্রামাঞ্চলে কৃষিজমি ছাড়াও বাড়ির আঙিনায় ঢ্যাঁড়স চাষ করছেন কৃষকরা। এছাড়াও শহরে বাসাবাড়ির আঙিনা কিংবা বাসার ছাদে ঢ্যাঁড়সের চাষ চোখে পড়ে। শারীরিক উপকারিতা গুণাবলির অধিকারী এই সবজি চাষাবাদ করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন অনেকেই। বর্তমান বাজারে ঢ্যাঁড়সের ভালো দর পেয়ে ঢ্যাঁড়স ক্ষেত সঠিকভাবে পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। সরজমিনে নান্দাইল উপজেলার আচারগাঁও ইউনিয়নের সুতারাটিয়া গ্রামের কৃষক আলী আজগর জানান, তিনি ১৫ শতক জমিতে ঢ্যাঁড়স চাষ করেছেন। এতে তার সব মিলিয়ে ৮ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সন্তোষজনক ফলন পাবার আশায় সঠিক সময়ে সঠিকভাবে ঢ্যাঁড়স ক্ষেত পরিচর্যা করছেন। প্রায় দেড় মাস আগে ঢ্যাঁড়সের বীজ বপন করেছেন। বর্তমানে প্রতিটি গাছে চার থেকে পাঁচটি করে ঢ্যাঁড়স ধরেছে। বাজারদর ভালো থাকায় অল্প অল্প ঢ্যাঁড়স তুলে বাজারে বিক্রি করতেও পারছেন। গাছগুলো বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফলন বাড়বে। তিন মাসের এই ফসল। ১৫ শতক জমি থেকে ঢ্যাঁড়স বিক্রি করে সব খরচ বাদে ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন বলে আশা করছেন। ওই ইউনিয়নের গইছখালী গ্রামের কৃষক বাবুল মিয়া জানান, তিনি ১০ শতক জমিতে ঢ্যাঁড়স চাষ করেছেন। আবহাওয়া ভালো থাকায় ঢ্যাঁড়সের সন্তোষজনক ফলন হয়েছে। বৃষ্টির সিজেন থাকলে তেমন ফলন হয় না। এই মৌসুমে ভালো ফলন হচ্ছে এবং বাজারেও বেশ চাহিদা রয়েছে। বর্তমান বাজারে প্রতি কেজি ঢ্যাঁড়স ৪০ থেকে ৫০ টাকা ধরে বিক্রি করা যাচ্ছে। কয়েকদিন আগে ৬০ থেকে ৭০ টাকা প্রতি কেজি ঢ্যাঁড়স বিক্রি করেছেন। নান্দাইল উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান জানান, এ উপজেলায় প্রায় ৮০ হেক্টর জমিতে ঢ্যাঁড়স চাষ করছেন কৃষকরা। অনুকূল আবহাওয়া থাকায় এখানকার মাটিতে বাম্পার ফলন হয়।