ঢাকা ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যা

স্বামী ও শাশুড়িসহ আটক পাঁচ
গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যা

পিরোজপুরে ভাণ্ডারিয়ায় সাদিয়া আক্তার মুক্তা (১৮) নামে এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগে স্বামী ও শাশুড়িসহ পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ। সে ভাণ্ডারিয়া পৌর শহরের টিএন্ডটি সড়কের মুনিম জোমাদ্দারের স্ত্রী। স্থানীয় ও ভাণ্ডারিয়া থানাসূত্রে জানা গেছে, ভাণ্ডারিয়া পৌর শহরের টিএন্ডটি সড়কের মামুন জোমাদ্দারের ছেলে মুনিম জোমাদ্দার বছর খানেক আগে ভাণ্ডারিয়া শ্রীপুর গ্রামের মজিবুর রহমান মুন্সির মেয়ে মুক্তাকে বিয়ে করে। কয়েক দিন আগে পারিবারিক কলহের কারণে মুক্তাকে তার স্বামী মারধর করে। এ ঘটনার পর মুক্তা বাবার বাড়ি চলে যায়। গত শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে মুনিম মুক্তাকে আনতে গেলে তাদের মধ্য কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে মুনিম মুক্তাকে ঘুষি মারে, এ সময় মুক্তার মা এসে মুনিকে চরথাপ্পড় দেয়। এতে মুনিম ক্ষিপ্ত হয়ে মুক্তাকে ডাক্তার দেখানোর কথা বলে নিয়ে আসে। পরে স্বামীর ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তা বাইরে বের হলে তাকে নিয়ে ভাণ্ডারিয়ার চেঁচরী রামপুর ব্রিজের কাছে নির্জন বেড়িবাঁধে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকেই মুনিমের বেশ কয়েকজন বন্ধুবান্ধব উপস্থিত হয়। তাদের সহযোগিতায় হিজাব পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার পরে বেড়িবাঁধের পাশে মৃতদেহ ফেলে রাখে। বাড়িতে এস ঘটনাটি মুনিম তার মা ছবি আক্তারকে জানালে ছবি আক্তার সেখানে মৃতদেহ দেখতে যায় এবং সেখান থেকে ছেলের সহয়তায় অটোরিকশায় মৃতদেহ এনে ভাণ্ডারিয়ার কানুয়া গ্রামের একটি ইটভাটার পাশে নদীর ক্যানেলে কচুরিপানার মধ্যে মরদেহ লুকিয়ে রেখে বাড়ি চলেন যান। পরে মুনিম তার শাশুড়িকে ফোন করে বিকাল ৩টার দিকে জানায় তার মেয়েকে সে হত্যা করেছে। এদিকে মৃতদেহের ব্যাপারে গভীর রাতে অজ্ঞাত নম্বর থেকে ভাণ্ডারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার ফোনে একটি কল আসে। সংবাদ পেয়ে ভাণ্ডারিয়া থানা পুলিশ রাত পৌনে ৪টায় সেখানে যায় এবং মৃতদেহ উদ্ধার করে গতকাল শনিবার সকালে থানায় নিয়ে আসে। এরপর তদন্তে নামে পুলিশ। প্রথমে মুনিমের মা ছবি আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।

জিজ্ঞাসাবাদ করার এক পর্যায়ে হত্যার কথা স্বীকার করেন তিনি। পরে তার দেওয়া স্বীকারোক্তি ও তথ্য অনুযায়ী শনিবার সকালে নদীর ক্যানেলে কচুরি পানার নিচ থেকে মুক্তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত থাকায় পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে মুক্তার স্বামী মুনিম, শাকিব খন্দকার, মারুফ ও সিয়াম খান সজিবকে আটক করে। ভাণ্ডারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশিকুজ্জামান জানান, রাতে অজ্ঞাত নামা একটি ফোন থেকে হত্যা ঘটনা জানতে পারি সঙ্গে সঙ্গে আমিসহ থানা অফিসার পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের নিয়ে ঘটনা স্থলে যাই। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মুক্তার বাবা মজিবুর রহমান মুন্সি বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত