ঢাকা ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

পলিথিন-প্লাস্টিকে বাজার হারাচ্ছে পাটজাত দ্রব্য

দামে হতাশায় কৃষক
পলিথিন-প্লাস্টিকে বাজার হারাচ্ছে পাটজাত দ্রব্য

এক সময়ের বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরি ফসল পাট গাজীপুরের কালিয়াকৈরে এখনো কিছুটা মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে সেই সোনালি আশ। কিন্তু নিষিদ্ধ পলিথিন-প্লাস্টিকে বাজার সয়লাবে বিনিষ্টের পথে পাটজাত দ্রব্য। এছাড়াও সিন্ডিকেটের কবলে নায্যমূল্য না পেয়ে পাট চাষে অনীহা প্রকাশ করেছেন কৃষকরা। তবে পরিবেশ বিপন্নকারী পলিথিন-প্লাস্টিক অপসারণ ও পাটজাত দ্রব্যের ব্যবহার বৃদ্ধি না হলে পাটের অস্তিত্ববিলীন হবে বলেও জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এলাকাবাসী ও পাটচাষি সূত্রে জানা গেছে, কৃষিনির্ভর এই বাংলাদেশ। এদেশের বর্তমান অর্থকরি ফসল পাট, চা ও তামাক। অথচ এক সময় প্রধান অর্থকরি ফসল ছিল পাট। এ পাট বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন হতো। যার কারণে পাটকে সোনালি আশও বলা হতো। সেই ধারাবাহিকতায় কালিয়াকৈর উপজেলার আনাচে-কানাচে ব্যাপক পাট উৎপাদন হতো। মাঠে মাঠে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকত সেই সোনালি আশ। আবার উৎসবমুখর পরিবেশে পাট সংগ্রহ করতেন কৃষকরা। সর্বত্র পাটের তৈরি বস্তা, চট, ব্যাগ, রশি, পাট খড়ির বেড়াসহ বিভিন্ন পাটজাত দ্রব্যের ব্যবহার ছিল। কিন্তু কালের বিবর্তন ও সিন্ডিকেটের কবলে পরিবেশ বিপন্নকারী নিষিদ্ধ পলিথিন-প্লাস্টিকে বাজার সয়লাব। এ কারণে বিনিষ্ট হয়ে যাচ্ছে পরিবেশবান্ধব পাটজাত দ্রব্যের ব্যবহার। আর পরিবেশের ক্ষতি করে প্রশাসনের নাকের ডগা দিয়ে ফায়দা লুটে নিচ্ছে অসাধু পলিথিন-প্লাস্টিক সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা। ফলে পাটজাত দ্রব্যের তেমন ব্যবহার না হওয়া ও নায্যমূল্য না পাওয়ায় দিন দিন প্রায় পাট চাষ উঠে যাচ্ছে। এরপরেও উপজেলার ঢালজোড়া, দেওয়ার বাজার, মহরাবহ, সাবাজপুর, গোসাত্রা, ডুবাইলসহ বিভিন্ন নিচু এলাকায় এখনো কিছু পাট চাষ করেন কৃষক। এর ধারাবাহিকায় এ উপজেলায় ২২২ একর পাট চাষ করা হয়েছে। যা কৃষি অফিসের চাহিদা অনুপাতে আশানুরোপভাবে হচ্ছে না পাটচাষ। একেবারে বিলীন হওয়ার পথেও এখনো কিছুটা মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে, সেই সোনালি আশ। নানা প্রতিকুলতার মধ্যেও কিছু কিছু পাটচাষ হলেও কাঙ্ক্ষিত মূল্য না পেয়ে হতাশায় চাষিরা। সরকারি বরাদ্দ না থাকায় ও খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় পাট চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষক।

কিন্তু এ বছর নায্যমূল্য না পেয়ে পাট চাষে অনীহা প্রকাশ করছে কৃষক ও কৃষানি। তবে অভিযানের মাধ্যমে বাজারে সয়লাব পরিবেশ বিপন্নকারী নিষিদ্ধ পলিথিন-প্লাস্টিক অপসারণ ও পাটজাত দ্রব্যের ব্যবহার বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন কৃষকরা। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, এখনো নিচু এলাকায় কিছু কিছু পাট চাষ হচ্ছে। তবে বরাদ্দ না থাকা, পানির অভাবসহ নানা সমস্যার কারণে পাটচাষ কমে যাচ্ছে। অর্থকরি ফসল পাট হারিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ বলেন, পাটজাত দ্রব্য ব্যবহারে জনসচেনতা বাড়াতে হবে। তবে পলিথিন-প্লাস্টিক বন্ধের আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। এছাড়া পাট চাষের জন্য সহযোগিতা চেয়ে কেউ আবেদন করলে কৃষি অফিসের মাধ্যমে সেটা ব্যবস্থা করা হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত