ঢাকা ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মোরেলগঞ্জে বেড়েই চলছে কিশোর গ্যাংয়ের উপদ্রব

মোরেলগঞ্জে বেড়েই চলছে কিশোর গ্যাংয়ের উপদ্রব

সাম্প্রতিক সময়ে ‘কিশোর গ্যাং’ নতুন এক আতঙ্কের নাম। দেশের অন্যান্য স্থানের মতো বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জেও এর উপদ্রব বেড়েছে। কিশোর অপরাধীরা ‘গ্যাং’ বা গ্রুপ সৃষ্টি করে বিভিন্ন অপরাধ করে বেড়াচ্ছে। জড়িয়ে পড়ছে মারামারি, মাদক ব্যবহার, ইভটিজিংসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের পরও থামছে না কিশোর অপরাধ। এই কিশোররা প্রচলিত সমাজের মধ্যে নিজেদের মতো করে নতুন এক সমাজ গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। কিশোর অপরাধীরা আবার বিভিন্ন গ্যাংয়ের মাধ্যমে তথাকথিত ‘রাজনৈতিক বড় ভাইদের’ আস্কারা পেয়ে অপরাধ করে বেড়াচ্ছে। প্রশাসন এ অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার পরও কিশোর গ্যাংয়ের অপরাধীদের কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না। সারা দেশের ন্যায় বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলাতেও বেড়েছে কিশোর গ্যাংয়ের উপদ্রব। কিশোর গ্যাংয়ের কবল থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সচেতন অভিভাবক মহল। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, মোরেলগঞ্জ পৌর শহরের ভাইজোড়া কাঁঠালতলা ব্রিজ সংলগ্ন এলাকার একটি মুদি দোকানের সামনে কিশোরদের আড্ডাবাজি চলছে। রাস্তার সঙ্গে ওই দোকান হওয়ায় চলাচলরত স্কুলছাত্রীদের ইভটিজিংয়ের শিকার হতে হচ্ছে। এমনকি বিভিন্ন সময় এরা অভিভাবকদেরও নানা ধরনের হুমকি দিয়ে আসছে। শিশু-কিশোরদের অপরাধ প্রবণতা কমানোর জন্য আইনের প্রয়োগের পাশাপাশি পারিবারের অনেক দায়িত্ব রয়েছে উল্লেখ করে বাগেরহাট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট সিদ্দিকুর রহমান বলেন, কোনো মানুষই অপরাধী হয়ে জন্ম নেয় না। বিভিন্ন পরিস্থিতে শিশু-কিশোররা অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। আমরা অপরাধী শিশু-কিশোরদের আসামি বলি না। তাদের সুষ্ঠু জীবনে ফেরার জন্য পরামর্শ দেই। বাবা-মাসহ পরিবারের অভিভাবকদের শিশুদের সঙ্গে বন্ধুসুলভ আচারণ করতে হবে। কোনো শিশু-কিশোর যদি ছোট অপরাধ করে ফেলে, তবে তাকে বোঝাতে হবে। শিশু-কিশোররা যদি পরিবারের বড় সদস্যদের কাছ থেকে বন্ধুসুলভ ব্যবহার পায়, তাহলে কিশোর অপরাধ কমবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। শিশুদের অপরাধ প্রবণতা কমাতে করণীয় বিষয়ে বাগেরহাটের প্রবেশন কর্মকর্তা বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহারের ফলে শিশু-কিশোররা অপরাধের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। বাবা-মায়ের দাম্পত্যকলহ, বাবা-মায়ের অবহেলা, হতাশা এবং সামাজিক-পারিবারিক বন্ধনের অভাবও শিশুদের মধ্যে অপরাধ প্রবণতার জন্ম দেয়। অনেক সময় পারিবারিক দারিদ্রতাকে পুঁজি করে স্বার্থান্বেষী মহল শিশুদের আইনবিরোধী কাজে ব্যবহার করে। শিশুদের অপরাধ প্রবণতা কমাতে সামাজিক, ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার বিস্তারের সঙ্গে এবং অপ-সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে হবে। শিশুদের সুস্থ বিকাশের জন্য খেলাধুলার সুযোগ করে দেওয়ার সুপারিশ করেন তিনি। এ বিষয়ে মোরেলগঞ্জ থানায় অফিসার ইনচার্জ মো. সাইদুর রহমান বলেন, ইভটিজিংসহ সব ধরনের অপরাধ নির্মূলে প্রশাসন বদ্ধপরিকর। বিশেষ করে কিশোরদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমরা সব ধরনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। সচেতনতামূলক সেমিনারের আয়োজন করছি। এর পরেও যদি কিশোর গ্যাংয়ের উপদ্রব থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত