ঢাকা ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

শিক্ষার্থীদের বই পড়তে উৎসাহিত করেন ইউএনও

শিক্ষার্থীদের বই পড়তে উৎসাহিত করেন ইউএনও

জ্ঞানের শিখা বাড়াতে আলমারির বই পড়তে শিক্ষার্থীদের জন্য নিজের কার্যালয়ের দ্বার খোলা রেখেছেন পঞ্চগড়ের আটোয়ারীর ইউএনও। নিয়েছেন ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগ। অফিস আলমারীতে সজ্জিত বিভিন্ন সংগৃহিত বই পড়তে উৎসাহিত করছেন শিক্ষার্থীদের। এমনই এক চিত্র দেখা গেছে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে। স্কুলের শিক্ষার্থীরা এসে পছন্দের বই বাছাই করে খাতায় নাম লিখে নিয়ে যাচ্ছে বাড়িতে। কেউ ইউএনও’র কার্যালয়ে বসেই পড়ছে বই। শিক্ষার্থীদের বই পড়ার আগ্রহ বাড়াতে এমনই উদ্যোগ নিয়েছেন আটোয়ারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুশফিকুল আলিম হালিম। সপ্তাহে সোমবার ও বৃহস্পতিবার নিজের অফিসটিকে শিক্ষার্থীদের জন্য বই পাঠের পাঠশালা হিসেবে রূপ দিয়েছেন। গত সোমবার ইউএনও’র আলমারির টাকে সাজানো বইগুচ্ছ দেখছিলেন একটি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী। তারা বই চোখ বুলিয়ে পাতা উল্টে উল্টে পছন্দের বই বের করে খাতায় নাম লিপিবদ্ধ করে বাসায় নিয়ে যাচ্ছিল। পরের সপ্তাহে ওই বই পড়া শিক্ষার্থীর কাছ পাঠ মূল্যায়ন শুনেন ইউএনও। বই পাঠের পাশাপাশি পড়াশোনা করে কীভাবে ক্যারিয়ার গড়া যায়, সেসব বিষয় নিয়ে নানান অভিজ্ঞতা ও পরামর্শ শেয়ার করছেন তিনি। বই নিতে আসা আটোয়ারী পাইলট সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী মাহজাবিন মোবাশ্বেরা মাম্পিসহ প্রজ্ঞা, ঐশ্বী, ঝিনুক রাণী, প্রজ্ঞা পাল, বিন্দু রাণী, মুসফিকা জানায়, ইউএনও স্যারের কার্যালয়ে বই পড়তে খুব ভালো লাগছে। স্যারের সাথে আমরা সহজেই কথা বলতে পারছি। তিনি আমাদের আমাদের ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার গড়ার পরামর্শও দিচ্ছেন। এখানে অনেক ভালো ভালো বই আছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুশফিকুল আলিম হালিম জানান, জেলার প্রত্যন্ত উপজেলা হচ্ছে আটোয়ারী। প্রত্যন্ত এলাকায় লাইব্রেরি থাকলেও সেটি পুরোনো ও জরাজীর্ণ। নতুন লাইব্রেরির কাজ শুরু হয়েছে। আমি এ উপজেলায় যোগদানের পর থেকেই এখানকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিদর্শন করতে গেলে শিক্ষার্থীদের যে বই পড়ার আগ্রহ রয়েছে, তা বুঝতে পারি। তাই শিক্ষার্থীদের কীভাবে বই পাঠে আরো উদ্বুদ্ধ করা যায়, তাদের বই পাঠে মনোনীবেশ করা যায়। সেদিক চিন্তা করে দেখলাম আমার অফিসের আলমারিতে তো বেশ কিছু বই রয়েছে, তা তো তেমন কেউ পড়ে না। বিশেষ করে বইগুলো যদি কেউ না পড়ে তা সুসজ্জিত করে সাজিয়ে রেখে লাভ কী। তাই বইগুলো শিক্ষার্থীদের পড়তে দেয়া যায়। এ চিন্তা থেকেই উদ্যোগটি নেয়া। আটোয়ারী উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান জানান, আমরা যখন স্কুলে পড়তাম তখন একজন ইউএনও’র সাথে কথা বলতে পারব, এটা চিন্তাতেই আসত না। এখনকার ছেলেমেয়েরা ইউএনও অফিসে নির্দ্বিধায় যাচ্ছে, তার সাথে কথা বলছে- এটাও একটা পড়াশোনার অংশ। তারা নানা কিছু শিখছে। জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম জানান, এই উদ্যোগ জ্ঞানকেন্দ্রিক প্রভাব ফেলবে। তেঁতুলিয়া উপজেলাতে পাঠ্যক্রম শিক্ষার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের অন্যান্য বই পড়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। অন্যান্য উপজেলাতেও এই উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত