ঢাকা ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

গরমে কদর বেড়েছে তালপাখার

গরমে কদর বেড়েছে তালপাখার

পাখাগ্রাম হিসেবে পরিচিত নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার ভালাইন গ্রাম। এ গ্রামের প্রায় অর্ধশত পরিবার তালগাছের ডাল থেকে পাখা তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছে। পাখা তৈরি করে অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন তারা। পাখার চাহিদা বেশি থাকায় ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে। বছরে এ গ্রাম থেকে প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকার পাখা বিক্রি হয়। তবে সম্ভাবনাময় এ শিল্পকে এগিয়ে নিতে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে উৎপাদন বাড়ার পাশাপাশি অর্থনীতিতে আরো এগিয়ে যাবে। পাশাপাশি আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে বলে মনে করছেন কারিগররা। জেলার মহাদেবপুর উপজেলার উত্তরগ্রাম ইউনিয়নের ভালাইন গ্রাম। ১৯৮০ সাল থেকে তালগাছের ডাল থেকে হাতপাখা তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছে এ গ্রামের মানুষ। পাখা তৈরিকে তারা এখন প্রধান পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে। সময়ের পরিক্রমায় এ গ্রামটি এখন পাখাগ্রাম হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। এ গ্রামের প্রায় অর্ধশতাধিক দরিদ্র পরিবার পাখা তৈরির সঙ্গে জড়িত। হাতপাখা তৈরির প্রধান উপকরণ তালগাছের ডাল। আর এসব ডাল সংগ্রহ হয় জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে। প্রতিটি ডাল কিনতে খরচ হয় ৭-৮ টাকা। প্রথমে ডালগুলোকে ভালোমতো সাইজ করে কেটে রোদে শুকাতে হয়। তারপর আবারো পানিতে ভিজিয়ে রোদে হালকা শুকিয়ে কাঁচি দিয়ে কেটে পাখার রূপ দেওয়া হয়। আর এসব কাজ করেন বাড়ির পুরুষরা। তারপর নারী কারিগররা রং মিশ্রিত বাঁশের কাঠি ও সুই-সুতা দিয়ে বেঁধে পাখার পূর্ণাঙ্গ রূপ দেয়। এভাবে কয়েক হাত ঘুরে তৈরি হয় একটি পাখা। প্রতিটি পাখা তৈরিতে খরচ পড়ে ১৪ টাকা। যা পাইকারিতে বিক্রি হয় ১৯-২০ টাকা। আর খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হয় ৩০-৩৫ টাকা। বছরে এ গ্রাম থেকে পাইকারি পর্যায়ে বিক্রি হয় সাড়ে ৫ কোটি টাকার পাখা। মহাদেবপুর উপজেলার উত্তরগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আবু হাছান বলেন- এ গ্রামের অধিকাংশ পরিবার পাখা তৈরি করেই তারা জীবন জীবিকা নির্বাহ করে। তবে তাদের জীবনমান তেমন উন্নত হচ্ছে না। পাখা তৈরি করতে গিয়ে তারা অর্থ সংকটে পড়ে। বিভিন্ন সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে এসব কাজ করে। অফসিজনে পাখা তৈরি করে সিজনে (মৌসুম) বিক্রি করবে সেটা তাদের পক্ষে সম্ভব হয় না। ঋণগ্রস্ত হওয়ার কারণে পাখা তৈরির পরই বিক্রি করতে হয়। এতে কাঙ্ক্ষিত দাম পাওয়া থেকে তারা বঞ্চিত হয়। তবে স্বল্পসুদে ঋণ ও সরকারি পৃষ্টপোষকতা পেলে আরো বেশি পরিমাণ পাখা উৎপাদনের পাশাপাশি তাদের জীবনযাত্রার মান আরো উন্নত হবে। নওগাঁ বিসিক শিল্প নগরীর উপব্যবস্থাপক শামীম আক্তার মামুন বলেন- ইতোমধ্যে ওই গ্রামের কয়েকজনকে ঋণ দেওয়া হয়েছে। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের আওতায় বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণসহ স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা রয়েছে। যাদের ঋণ প্রয়োজন তারা যোগাযোগ করবেন। তাদের প্রজেক্ট আমরা পরিদর্শন করব। যাদের প্রশিক্ষণ এবং ঋণ প্রয়োজন অফিসে যোগাযোগ করা হলে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত