দিনে ৭ হাজার লিটার দুধ বিক্রি হয় চুলকাঠি বাজারে

প্রকাশ : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

বাগেরহাটের খুলনা-মোংলা মহাসড়কের পাশের চুলকাঠি বাজার এলাকায় প্রতিদিন ভোরে বসে দুধের হাট। শত বছরের ঐতিহ্যবাহী এই হাটে দূর-দূরান্ত থেকে আসেন ক্রেতারা। বাগেরহাট ছাড়াও খুলনা, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতা আসায় এ হাটে প্রতিদিন ৬ থেকে ৭ হাজার লিটার দুধ বিক্রি হয়। স্থানীয় হাকিমপুর, রণবিজয়পুর, ভরসাপুর, চুলকাঠি, খানপুর, সোনাতুনিয়া গ্রামের দুই শতাধিক দুগ্ধ খামারি এই হাটে দুধ বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। খামারে উৎপাদিত দুধ এখান থেকে চলে যায় বিভিন্ন জেলা-উপজেলায়। কেউ দুধ কেনেন মিষ্টির দোকানের জন্য, কেউবা হোটেলের জন্য। আবার কেউ বাড়িতে খাওয়ার জন্যও দুধ কেনেন এখান থেকে। ভেজালমুক্ত ও দামে সাশ্রয়ী হওয়ায় দূর-দূরান্ত থেকে আসেন ক্রেতারা। সরেজমিন দেখা যায়, কেউ হেঁটে, কেউ মোটরসাইকেলে, কেউ ভ্যানে, কেউ আবার গাড়িতে নানা ধরনের পাত্রে দুধ নিয়ে আসছেন হাটে। পাইকারদের ছাড়াও স্থানীয় ব্যক্তিদের মধ্যে কয়েক ঘণ্টায় বিক্রি হয়ে যায় খামারিদের দুধ। ক্রেতারা জানান, স্বল্প দামে ভেজালমুক্ত দুধ কিনতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন ঐতিহ্যবাহী এই হাটে। তবে বর্তমানে জোগান কম হওয়ায় দুধের দাম বেড়েছে লিটারপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা। আগে ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা লিটার, এখন হয়েছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রভাব পড়ছে মিষ্টির দোকান এবং হোটেল ব্যবসায়ীদের ওপর। কিছুটা বাধ্য হয়ে বাড়াতে হচ্ছে মিষ্টি এবং দুগ্ধজাতীয় খাবারের দাম। নিরঞ্জন সাহা নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, পাকিস্তান আমল থেকে এখানে দুধের হাট বসে। দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন আসেন দুধ কিনতে। মিলন দাস নামে একজন বিক্রেতা বলেন, ‘নিজেদের গরু থেকে সংগৃহীত দুধ নিয়ে প্রতিদিন এখানে আসি। এই দুধ বিক্রির অর্থেই চলে সংসার। নয়ন শেখ নামের অপর এক বিক্রেতা বলেন, ‘তিনটি গাভি থেকে প্রতিদিন প্রায় ৩০ লিটার দুধ বিক্রি করি। এই দুধ বিক্রির ওপরে নির্ভরশীল পরিবার।’ বাজার কমিটির সভাপতি মুরারী কৃষ্ণ বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি এই হাটে দুধ বিক্রি হয়। প্রতিদিন প্রায় ৬ থেকে ৭ হাজার লিটার দুধ বিক্রি হয়। ক্রেতা-বিক্রেতারা এসে নিজেদের সুবিধামতো বেচাকেনা করেন। তবে মহাসড়কের পাশ থেকে পার্শ্ববর্তী কোনো স্থানে হাটটি যদি স্থানান্তর করা হয়, তাহলে ক্রেতা-বিক্রেতা সবাই দুর্ঘটনা থেকে ঝুঁকিমুক্ত থাকবেন।’ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাশেদুজ্জামান বলেন, ‘দুধের হাট ঝুঁকিমুক্ত করতে বাজার কমিটির লোকজনের সঙ্গে কথা বলা হবে। তারা যেখানে উপযুক্ত মনে করেন, সেখানে হাটটি স্থানান্তরের ব্যবস্থা নেয়া হবে।’