পাবনায় আগাম জাতের শিম চাষ করে লাভবান হচ্ছে কৃষকরা। এক বিঘা জমিতে আগাম শিমের আবাদে সব খরচ বাদ দিয়ে ৯০ হাজার টাকা লাভ হয়। ফলে অনেক কৃষক আগাম শিমের আবাদ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। এর মধ্যেই হাট-বাজারে উঠেছে আগাম জাতের শিম। প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা থেকে ২০০ টাকা। ভালো দাম পাওয়ায় বেশ খুশি শিম চাষিরা। পাবনার শিম গ্রাম নামে পরিচিত মুলাডুলি গ্রামের শিম চাষি রহমত আলী জানান, প্রতি বিঘা জমিতে আগাম শিমের আবাদ করতে খরচ হয় প্রায় ৩০-৩৫ হাজার টাকা। অন্য ফসলের চেয়ে শিমের আবাদে খরচ বেশি। আবহাওয়া ভালো থাকলে ফলন ভালো হয়। ফলন ভালো হলে প্রতি বিঘা জমির শিম ১ লাখ ২০ হাজার থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা বিক্রি হয়।
বাজারে প্রথম যে শিমগুলো উঠে সেগুলোর দাম বেশি থাকে। প্রথম অবস্থায় ২০০ টাকা কেজি বা তার চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হয়। জানা গেছে, শিম শীতকালীন সবজি হলেও ৮ থেকে ১০ বছর ধরে আগাম জাতের শিমের আবাদ হচ্ছে। ভাদ্র মাসের শুরুর দিকে শিমের ফলন শুরু হয়। প্রতি বছরই চাষিদের লাভ হয়। আগাম শিমের বাজারে চাহিদা বেশি থাকে দামও ভালো পাওয়া যায়। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘অটো শিম’। তবে এ শিম উৎপাদনে চাষিদের খুবই পরিশ্রম করতে হয়। এ শিমের ক্ষেতে পোকার আক্রমণ বেশি হয়। এ ছাড়া অতি বৃষ্টি ও অতি খরার কারণে শিমের ফলন বিপর্যয়ের সম্ভাবনা থাকায় চাষিরা বাজারে তোলছে নতুন এসব শিম। পাবনা কৃষি অফিসের একটি সূত্র জানায়, গত বছর শিমের আবাদ হয় ১ হাজার ৫৪৬ হেক্টর জমিতে। এবার শিমের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে ১ হাজার ৯৩৫ হেক্টর জমি। এর মধ্যে মুলাডুলি ইউনিয়নেই ৮৫০ হেক্টর জমিতে শিম চাষ হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, অটো জাতের শিম গাছ এরই মধ্যে মাচায় উঠে ফুলে ফুলে ভরে গেছে। শিম গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন মুলাডুলি ইউনিয়নের কৃষকরা। পাবনার কৃষি কর্মকর্তা জালাল উদ্দিন জানান, জ্যৈষ্ঠমাসের শুরুতেই আগাম জাতের শিমের আবাদ শুরু হয়েছিল। এখন বাজারে শিম উঠতে শুরু হয়েছে। দেশের সবচেয়ে বেশি শিমের আবাদ হয় পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায়। দেশের হাটবাজারে আগাম জাতের যে শিম পাওয়া যায় সেগুলো পাবনা জেলায় উৎপাদন হয়। সার ও কীটনাশক কম ব্যবহার করে কীভাবে আগাম শিম উৎপাদন করা যায়, সে বিষয়ে কৃষকদের নানা পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।