তরমুজের ভালো ফলন পেয়েও ক্ষতির আশঙ্কায় চাষিরা

প্রকাশ : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় মালচিং পদ্ধতিতে মৌসুম ছাড়া বারি-১ ও বারি-২ জাতের উদ্ভাবিত তরমুজ চাষ করে গত ৩ বছর ধরে ভালো ফলন পাচ্ছে কুমিরমারা গ্রামের তরমুজ চাষিরা। তবে এ বছর ফলন ভালো হলেও ক্ষতির আশঙ্কা করছেন এই চাষিরা। তারা প্রথমে সরল জমিতে তৈরি করেন মাচা। সেই মাচায় এখন থোকায় থোকায় ঝুলছে বিভিন্ন রঙের তরমুজ। তরমুজগুলো ঢেকে দিয়েছেন নেটের ব্যাগ দিয়ে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রাথমিক প্রদর্শনী উৎপাদন হিসেবে উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের কুমিরমারা গ্রামে ২০২১ সালে শুরু করা হয় মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ। প্রথমে জাকির গাজী, ওমর ফারুক ও হান্নান গাজী নামে তিন কৃষক মালচিং পদ্ধতিতে মৌসুমি তরমুজ চাষ শুরু করেন। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, তাদের জমিতে ছোট ছোট মাচায় ঝুলছে নানান আকৃতির তরমুজ। বিভিন্ন পেশা থেকে ফিরে এসে তরমুজ চাষে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন তারা। বর্ষা মৌসুমেও যে এত যত্ন সহকারে তরমুজ চাষ করা যায় তার অন্যতম নজির দেখিয়েছেন এই কৃষকরা। সচরাচর গ্রীষ্মকালে তরমুজের ব্যাপক আবাদ হলেও দেশে বর্ষাকালীন সময়ে তরমুজের আবাদ করে বিগত দুই বছরে আশানুরূপ ফলন পেয়েছেন তারা। তবে এ বছর তাদের সেই ফলন পরিপক্বতা পাওয়ার আগেই অতি বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতা হয়ে তরমুজের গাছগুলো মরে যাচ্ছে। তরমুজ চাষি দুলাল হোসেন বলেন, আমরা নীলগঞ্জের চাষিরা এই পদ্ধতিতে প্রথম প্রায় ১০০ শতাংশ জমিতে মৌসুম ছাড়া তরমুজ চাষ করি। এখন প্রতি বছরই আমরা মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ করছি। আমাদের এই ইউনিয়নে সর্বমোট ১২টি স্লুইস গেট রয়েছে কিন্তু তার মধ্যে আটটি স্লুইসের গেট নষ্ট তাই পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা নেই।

এই নিয়ে আমরা কৃষকরা একাধিকবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছি গেটগুলো সংস্কার করার জন্য। কিন্তু কেউ দৃষ্টিপাত করে না। এইবার আমরা কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকার বেশি তরমুজ বিক্রি করতে পারতাম কিন্তু এখন খরচও উঠবে না। নীলগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাবুল মিয়া জানান, একদিকে অতি বৃষ্টি অন্যদিকে স্লুইস গেটের সমস্যা যার কারণে কৃষকের ফসল নষ্ট হচ্ছে। স্লুইস গেটগুলোকে সংস্করণ করার জন্য আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কথা বলেছি। হয়তো কিছুদিনের মধ্যে ঠিক করে দেয়া হবে। কলাপাড়া উপজেলা কৃষি অফিসার এআরএম সাইফুল্লাহ বলেন, আমরা প্রতিনিয়তই তাদেরকে তদারকি করে আসছি, তরমুজ গাছগুলো ছোট থাকলে এই জলাবদ্ধতায় কোনো সমস্যা হতো না। কিন্তু এখন তরমুজের বয়স ২১ থেকে ৩০ দিন, এই মুহূর্তে তরমুজগুলো অপরিপক্ক তাই ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা বেশি রয়েছে।