পঞ্চগড়ে স্কুলে কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম

* পরীক্ষার আগেই চূড়ান্ত প্রার্থীদের নাম ফাঁস। * মোবাইল ডিভাইস নিয়ে লিখিত পরীক্ষা। * পরীক্ষায় অংশ নিতে আগ্রহ হারাচ্ছে প্রার্থীরা।

প্রকাশ : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  এসকে দোয়েল, পঞ্চগড়

পঞ্চগড়ে মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে বিভিন্ন পদে লোক নিয়োগে অনিয়ম ও অর্থ-বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। টাকা ছাড়া কোনো নিয়োগ হচ্ছে না। সাধারণ নৈশপ্রহরী, আয়া ও অফিস সহায়ক পদে নিয়োগে চলছে মোটা অঙ্কের অর্থবাণিজ্য। এসব নিয়োগে বেশিরভাগ নিয়োগ পাচ্ছে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির স্বজনদের মধ্যে কেউ। অনিয়মভাবেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে নিয়োগ পরীক্ষা- এমনই অভিযোগ উঠেছে সম্প্রতি নিয়োগ হওয়া বিদ্যালয়গুলোতে। অভিযোগ ও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, জেলায় বিভিন্ন উপজেলায় বেশ কয়েকটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক, অফিস সহায়ক, আয়া, পরিচ্ছন্নতা কর্মী, নিরাপত্তা কর্মী ও কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর পদে লোক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এসব পদে নিয়োগে করা হয়েছে বিপুল অঙ্কের অর্থবাণিজ্য। এ কারণে মেধাবীরা চাকরি পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ তাদের। তাদের অভিযোগ, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আবেদনের পর থেকেই শুরু হয় দর কষাকষি। সবার কাছ থেকে অগ্রিম অর্থ নেয়া হয়। পরে যার বেশি অর্থ হয় তাকেই নির্বাচন করে নামে মাত্র নিয়োগ পরীক্ষা আয়োজন করা হয়। গত কয়েকদিন আগে জেলার সদর উপজেলার হাড়িভাষা ইউনিয়নের সাহেব বাজার এলাকার পাহাড়তলি উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঁচটি পদে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাঁচটি পদের নিয়োগ পরীক্ষার পূর্বে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। একইসঙ্গে নিয়োগ পরীক্ষার আগেই চূড়ান্ত প্রার্থীদের নাম শোনা যায় স্থানীয়দের মুখে মুখে। নিয়োগ দেওয়ার নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ম্যানেজিং কমিটি ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ মে পত্রিকায় পাঁচটি পদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে সহকারী প্রধান শিক্ষক, আয়া, পরিচ্ছন্নতা কর্মী, নিরাপত্তা কর্মী, কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর পদে একজন করে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলা হয়। সে মতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ৫৩ জন চাকরি প্রার্থী চাকরির জন্য লিখিত আবেদন করেন। চাকরি প্রার্থীদের অভিযোগ, গত কিছু দিন আগে এই বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক, নৈশ্য প্রহরী ও আয়াসহ তিনটি পদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এতে অফিস সহায়ক পদে আটজন, নৈশ্যপ্রহরী তিনজন ও আয়া পদে চারজন প্রার্থী আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে আসেন আবু সালাম ও হৃদয়সহ চাকরি প্রার্থীরা। পরীক্ষা শুরু হলে অফিস সহায়ক পদের লিখিত পরীক্ষা চলাকালে দুইজন পরীক্ষার্থী প্যান্টের পকেট থেকে মুঠোফোন বের করে খাতায় লেখার সময় হৃদয় ও আবু সালাম দায়িত্বরত শিক্ষককে বিষয়টি অবহিত করেন। কিন্তু এতে নীরব থাকেন দায়িত্বরত ওই শিক্ষক। চাকরি প্রত্যাশী আবু সালামের অভিযোগ, পরীক্ষার আগে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমার কাছে ৫ লাখ টাকা নিয়েছে। পরীক্ষা দিতে গিয়ে দেখি দুইজন পরীক্ষার্থী ফোন বের করে দেখে দেখে লিখছে। আমরা বার বার অভিযোগ করে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে ঘুষের বিনিময়ে সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আমরা পুনরায় নিয়োগ পরীক্ষার দাবি জানাচ্ছি। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শাহীন আক্তার বলেন, বিষয়গুলো শুনেছি। তবে এ ধরনের কোনো অভিযোগ নিয়ে আমার কাছে আসেনি। অভিযোগ আসলে অবশ্যই বিধিমোতাবেক তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।