ঢাকা ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মনোহরগঞ্জে ঝুঁকিপূর্ণ সেতুতে ছয় গ্রামের মানুষের চলাচল

মনোহরগঞ্জে ঝুঁকিপূর্ণ সেতুতে ছয় গ্রামের মানুষের চলাচল

দীর্ঘ ১২ বছর ধরে ভেঙে পড়ে আছে মনোহরগঞ্জ উপজেলার সরসপুর ইউনিয়নের কিছমত খালের ওপর নির্মিত ব্রিজটি। কুমিল্লা-নোয়াখালী দুই জেলার সীমানায় মনোহরগঞ্জ উপজেলার লক্ষণপুর-জনতা বাজার গুরুত্বপূর্ণ এই ব্রিজ দিয়ে প্রতিদিনই আতঙ্ক নিয়ে চলাচল করে ছোট-বড় যানবাহন। স্থানীয়দের জন্য এটি এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে ছয় গ্রামের প্রায় ১৪ হাজার মানুষ। স্কুলশিক্ষার্থী, শিশু-নারী, বৃদ্ধ ও অসুস্থ ব্যক্তিরা মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। বর্তমানে মাঝারি বা ছোট যানবাহন উঠলেই থরথর করে কেঁপে ওঠে, যে কোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার মধ্যেই চলছে কৃষকের জমির ধান নেয়া, শিক্ষার্থীরা যাচ্ছে বিদ্যালয়ে। ব্রিজটি নতুন নির্মাণ ও দ্রুত মেরামতে কর্তৃপক্ষের কোনো উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ রয়েছে স্থানীয়দের। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার জনতা বাজার থেকে লক্ষণপুর সংযোগ সড়কের সরসপুর ইউনিয়ন দক্ষিণ সরসপুর এলাকায় কিছমত খালের ওপর ১৯৯৪-৯৫ সালে ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। প্রায় ১২ বছর ধরে ব্রিজের অধিকাংশ স্থানের ভেঙে যায় রেলিং। এছাড়াও ৫ বছরেরও অধিক সময় ধরে ব্রিজটি মাঝখানের একটি অংশ ভেঙে যায়। জনতা বাজার সোলাইমান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল্লাহ আল মামুন যুগান্তরকে বলেন, সেতুর মাঝখানের অংশ ভেঙে পড়ে আছে। মানুষের যাতায়াতে কষ্ট হচ্ছে। স্কুল-মাদ্রাসার ছোট ছোট শিশুদের জন্য বেশি ঝুঁকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই সেতুটি দ্রুত মেরামত করা প্রয়োজন মনে করি। স্থানীয় কৃষক বরকত আলী জানান, এলাকার বেশির ভাগ মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। তাদের উৎপাদিত পণ্য নিয়ে এই সেতু দিয়ে বাজারে যেতে হয়। সেতুর দুরবস্থায় তারা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। শিক্ষার্থী কামরুল হাসান, শারমিন আক্তার ও তরিকুল ইসলাম বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ সেতু পার হয়ে স্কুলে আসা-যাওয়া করতে ভয় লাগে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনতা বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, কুমিল্লা ৯ আসনের এটিএম আলমগীর সাহেব এমপি ১৯৯৫ সালে এ ব্রিজটি নির্মাণ করেন। ব্রিজ হওয়ার পর থেকে রিকশা, ট্রাক ও পণ্যবাহী যানবাহন প্রতিনিয়তই সেতুটি দিয়ে চলাচল করত। প্রায় ১২ বছর আগেই ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। এর পর থেকে কোনো এমপি-মন্ত্রী, চেয়ারম্যান মেম্বার এ ব্রিজটি সংস্কার করার উদ্যোগ নেয়নি। এতে করে দিন দিন ব্রিজটি আরো নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। বর্তমানে সাধারণ রিকশা ও অটোরিকশা ছাড়া অন্য কোনো ভারী যানবাহন চলাচল করতে পারে না। কয়েকদিন আগে রিকশা নিয়ে ব্রিজ পারাপারের সময় পড়ে গিয়ে কয়েকজন আহত হয়েছেন। সরসপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান বলেন, উপজেলা এলজিইডি কর্মকর্তা ভাঙা অংশটুকু সংস্কার করার আশ্বাস দিয়েছিলেন এবং নতুন একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য দরপত্র পাঠিয়েছেন বলে তারা জানিয়ে। মনোহরগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী শাহ আলম বলেন, ব্রিজটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ শুনে পরিদর্শন করেছি। ব্রিজটি পুনর্নির্মাণের জন্য চাহিদাপত্র পাঠিয়েছি। বরাদ্দ পেলে কাজ শুরু করা যাবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত