ঢাকা ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কেঁচো সার উৎপাদনে স্বাবলম্বী নাজমা-ফজলু দম্পতি

কেঁচো সার উৎপাদনে স্বাবলম্বী নাজমা-ফজলু দম্পতি

পঞ্চগড়ে কেঁচো সার উৎপাদন করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন নাজমা-ফজলুল দম্পতি। অভাব-দারিদ্রতা কাটিয়ে অর্থ সচ্ছলতায় ফিরেছেন তারা। তাদের দেখাদেখি আশপাশে অনেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে এ সার উৎপাদন করে বাড়তি আয়ের পথ তৈরি করেছেন অনেকে। প্রথমদিকে এ সারের পরিচিতি না পেলেও নিজের জমিতে প্রয়োগের মধ্য দিয়ে স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে বেড়েছে কেঁচো সারের চাহিদা।

জেলার সদর উপজেলার কামাত কাজলদীঘি ইউনিয়নের ঘটবর এলাকায় সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, কেঁচো সার উৎপাদনে সফল কৃষক এ গ্রামের ফজলুল হক। তার স্ত্রী নাজমা বেগমসহ পাঁচ বছর আগে সমন্বিত খামার ব্যবস্থাপনা কৃষক সমিতি লিমিটেডের উদ্যোগে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের মাধ্যমে কেঁচো সার উৎপাদনের উপর প্রশিক্ষণ নেন। প্রশিক্ষণ নিয়ে বাড়িতে এসে চারটি রিং স্লাব দিয়ে ছোট পরিসরে শুরু করেন কেঁচো সার উৎপাদন কার্যক্রম। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে পরিধি। এখন চারটি রিং স্লাব থেকে ৪০টিতে উৎপাদন হচ্ছে এই জৈব সার।

সার পদ্ধতিতে দেখা যায়, প্রতিটি রিংয়ে ১০০ কেজি গোবর, বিভিন্ন শাকসবজির উচ্ছিষ্টাংশ ও কলাগাছের টুকরো মিশ্রণ করে দুই কেজি কেঁচো দেয়া হয়েছে। চটের বস্তা দিয়ে রিংগুলো ঢেকে দেয়া হয়েছে। এভাবে এক মাস ঢেকে রাখার পর তৈরি হয় ভার্মি পোস্ট বা কেঁচো সার।

কৃষক ফজলুল হক বলেন, আমি সামান্য একজন ক্ষুদ্র চাষি। তিন-চার বিঘা জমি আবাদ করি। কৃষি অফিসে নিয়মিত যাওয়া আসা করার কারণে সেখানে কেঁচো সারের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারি।

এ সার চাষ করতে আগ্রহী হয়ে প্রথমে চারটি রিং স্লাব দিয়ে কাজ শুরু করি। এখন আমার ৪০টি রিং স্লাবে সার উৎপাদন হচ্ছে। প্রতিটি রিং স্লাব থেকে ৯০-১০০ কেজি কেঁচো সার উৎপাদন করা যায়। প্রতি কেজি ১০ টাকা দরে বিক্রি করি।

সারের পাশাপাশি কেঁচোও বিক্রি করা হয়। প্রতি কেজি কেঁচো বিক্রি করেন ১ হাজার ২০০ টাকা। এতে করে প্রতি মাসে সার ও কেঁচো বিক্রি করে ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা হাতে আসছে। এখন বিভিন্ন এলাকা থেকে কৃষকরা এসে এখান থেকে সার কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন বাজারে গিয়েও এ সার বিক্রি করা হচ্ছে। স্ত্রী নাজমা খাতুন বলেন, আমি ঘটবর সমন্বিত খামার ব্যবস্থাপনা কৃষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক। এ সংগঠনের উদ্যোগে কৃষি অফিস থেকে আমরা প্রশিক্ষণ নিয়ে কেঁচো সার উৎপাদনে কাজ শুরু করি। এ সংগঠনের সদস্যরাও উদ্বুদ্ধ হয়ে তারাও এ সার উৎপাদন করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। আর আমি ও আমার স্বামী মিলে কাজ করে অভাব দৈন্যতা পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে বেশ স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছি। এখন ভালো চলছি, ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ চালাতে পারছি। এ সার যেমন দামেও সস্তা আর কোনো ক্ষতিকর দিক না থাকায় এ সার ব্যবহার করলে মাটিকে রাখে সতেজ, তাজা ও উর্বরতা বৃদ্ধি করে। দিন দিন কৃষকদের কাছে এ সারের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত