কেশবপুরে বেড়েছে সাপের উপদ্রব শিশুসহ চারজনের মৃত্যু

প্রকাশ : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মশিয়ার রহমান, কেশবপুর (যশোর)

যশোরের কেশবপুরে বেড়েছে সাপের উপদ্রব। শিশুসহ চারজনের সাপের কামড়ে মৃত্যু হয়েছে। সাপের আতঙ্কে ভুগছেন গ্রামের সাধারণ মানুষ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি সাপে কামড়ানো রোগীর চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে অ্যান্টিভেট রয়েছে। সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, চলতি মাসের প্রথম দিনের রাতে উপজেলার ব্রম্মকাটি গ্রামের শহিদুল ইসলামের স্ত্রী আসমা বেগম ও তার আড়াই বছর বয়সি মেয়ে নুসরাত জাহান ফাহিমাকে নিয়ে ঘরের মেঝেতে শুয়ে ছিলেন। মেয়েটি ঘুমিয়ে গেলে তিনি প্রয়োজনীয় কাজে বাইরে যান। পরে ঘরে ফিরে দেখেন শিশু মেয়েটির মুখের ডান পাশে ক্ষত চিহ্ন এবং মুখ দিয়ে লালা বের হয়েছে। এছাড়া শিশুটিকে নিস্তেজ ও শরীর নীলবর্ণ দেখে তিনি চিৎকার শুরু করলে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসেন। ততক্ষণে শিশুটি মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ে। এলাকার কাউন্সিলর আবদুল হালিম বলেন, শিশু মেয়েটির মুখে ছোট ক্ষত চিহ্ন দেখে ধারণা করা হয়, রাতে ঘুমের মধ্যে সাপের কামড়ে তার মৃত্যু হয়েছে।

এর আগে গত ২৮ আগস্ট উপজেলার সরাপপুর গ্রামের রামপ্রসাদ মল্লিকের একমাত্র ছেলে নবম শ্রেণির ছাত্র দিপু মল্লিক (১৫), গত ১২ আগস্ট কোমরপোল গ্রামের মৃত শাহাদাত হোসেনের ছেলে চপ বিক্রেতা বাবলু সরদার (৩৫) ও গত ২৪ জুলাই গৌরিঘোনা গ্রামের কার্তিক চক্রবর্তীর মেয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী মোহনা চক্রবর্তী মিতু (১২) বিষধর সাপের কামড়ে মারা যায়। তাদের প্রত্যেককে হাসপাতালে না এনে এলাকার ওঝা দিয়ে বিষ নামানোর জন্য ঝাড়ফুঁক করানো হয়। ওঝা বিষ নামাতে ব্যর্থ হলে হাসপাতালে আনার পথে তাদের মৃত্যু হয়।

মজিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির পলাশ বলেন, সাপে কাটা রোগীদের সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিতে হবে। হাসপাতালে না এনে ওঝা দিয়ে ঝাড়ফুঁক করানোই তাদের মৃত্যুর অন্যতম কারণ। এ জন্য মানুষের সচেতন হওয়া দরকার।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আলমগীর হোসেন বলেন, হাসপাতালে সাপের কামড়ানো রোগীর চিকিৎসার জন্য অ্যান্টিভেনম রয়েছে। তবে অভিভাবকরা সাপে কাটা রোগীদের দ্রুত হাসপাতালে না এনে ওঝা দিয়ে ঝাড়ফুঁক করাতে গিয়ে তাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছেন। সাপে কাটা রোগীদের সঙ্গে সঙ্গে তিনি হাসপাতালে আনার পরামর্শ দেন। তা না হলে, এ মৃত্যু রোধ করা যাবে না বলে তিনি মন্তব্য করেন।