ঢাকা ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আশ্বিনা আমের মণ ১৫ হাজার তবুও লোকসানে চাষিরা

আশ্বিনা আমের মণ ১৫ হাজার তবুও লোকসানে চাষিরা

সম্প্রতি জিআই সনদ (ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের স্বীকৃতি) প্রাপ্ত আশ্বিনা আমের মণ বিক্রি হচ্ছে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকায়। তবে চাষিদের দাবি, এতেও উৎপাদন খরচ উঠছে না। গতকাল সোমবার সকাল ৮টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাটের পাইকারি আম বাজারে দেখা যায়, মাত্র ১০ থেকে ১৫ ভ্যান আম নেমেছে। তবুও তেমন ক্রেতা নেই। কারণ, দাম বেশ কড়া। তাই ভ্যানে আম সাজিয়ে বসে আছেন চাষিরা। ভোলাহাট উপজেলা থেকে কানসাটে আম বিক্রি করতে এসেছিলেন মো. বাচ্চু আলি। তিনি বলেন, আমার এ বছর প্রায় ৭০০ মণ আশ্বিনা আম ছিল। দুই মাস আগে ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করেছিলাম ২০০ মণ আম। এতে উৎপাদন খরচ উঠছিল না আমার। তাই আমগুলো ক্ষোভে রেখে দিয়েছিলাম। এখন এগুলোই বাজারে বিক্রি করছি। তবে এ দামে বিক্রি করেও উৎপাদন খরচ উঠছে না আমার। শফিকুল নামে এক চাষি বলেন, দুই দিন আগেও আশ্বিনা আম বিক্রি করলাম ১৫ হাজার টাকা মণ। তবে আজকে দাম একটু কম। তবে সব থেকে ভালো আম বিক্রি হচ্ছে ১৫ হাজার টাকা মণ। গোমস্তাপুর উপজেলা থেকে কানসাটে আম বিক্রি করতে এসেছিলেন মো. হফিজুর রহমান। তিনি বলেন, এখন আমের মৌসুম প্রায় শেষ পর্যায়ে। এ সময় আমের দাম থাকার কথা ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা মণ। কিন্তু হচ্ছে না। আমের তেমন দাম নেই। এ দামে আম বিক্রি করে খরচ উঠবে না আমাদের। হামিদুর নামে আরো এক আম চাষি বলেন, এখন আমের দাম ভালো কিন্তু আম তো নেই। আম না থাকলে দাম দিয়ে কী করব আমরা। এবার আমার ৩ লাখ টাকার বেশি লোকসান হবে। কারণ, গত বছরের তুলনায় বেড়েছে কীটনাশকের দাম। কিন্তু আমের দাম তো বাড়েনি। বরং গতবারের চেয়ে এবার আমের দাম অনেক কম। এতে লোকসান হচ্ছে আমাদের। শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, কৃষক আশ্বিনা আমে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই বিভিন্ন বারোমাসি আম চাষ দিন দিন বাড়ছে। তবে আশা করা যাচ্ছে আগামী বছর থেকে এমনটা আর হবে না। বর্তমানে আমের দাম ভালো আছে। নাবি জাতের আম যারা চাষ করেছেন তারা এখন ভালো দাম পাচ্ছেন। কানসাট আম বাজারের পাশেই আড়ত আছে মো. মামুন আলীর। তিনি বলেন, এখন আম অনেক কম আসছে। তাই আড়তদার ব্যাবসা গুটিয়ে নিচ্ছেন। আম যেমন কমেছে তেমনি কমেছে ব্যবসাও। যেহেতু আমের দাম বেশি, তাই ব্যবসায় পুঁজি বেশি লাগছে। তিন দিন আগে আমের ব্যবসা শেষ করেছেন আড়তদার শরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, সারা সিজনে প্রায় ২ কোটি টাকায় আমের ব্যাবসা করেছি। কিন্তু সমস্য হচ্ছে এখন হিসেব করতে গিয়ে প্রায় দেড় লাখ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। এজন্য দ্রুত আমের ব্যবসা ছেড়ে দোকান দেব ভাবছি। আর আম তো প্রায় শেষ। রায়হান আলী ফেনী থেকে কানসাটে এসেছেন আম কিনতে। সেখানে দোকান আছে তার। তিনি জানালেন, আশ্বিনা আম কিনবেন না। কারণ, এই আম একটু টক তাই তিনি নাবি জাতের আম খুঁজছেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত