ঢাকা ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

শব্দদূষণে অতিষ্ঠ নওগাঁ পৌরবাসী

শব্দদূষণে অতিষ্ঠ নওগাঁ পৌরবাসী

নওগাঁয় বেড়েছে শব্দদূষণ। প্রতিদিন ভোর থেকে শুরু করে চলে মধ্যরাত পর্যন্ত। শব্দের কারণে মানুষের মনমানষিকতা খিটখিটে হয়ে যাচ্ছে। অল্পতে রেগে যাচ্ছে মানুষ। বিশেষ করে কোমলমতি শিশু ও বাচ্চারা আরো বিরক্ত হচ্ছে। তাদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন অভিভাবকরা। জানা গেছে, নওগাঁ শহরে ও পাড়া মহল্লায় প্রতিদিন ভোর থেকে শুরু হয় যানবাহন চলাচল। চলে মধ্যরাত পর্যন্ত। হাজার হাজার ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, অটোরিকশা (সিএনজি), ভ্যান, সাইকেল, মোটরসাইকেল ও মাইক্রো চলাচল করে। এসব যানবাহন চলাচলে হর্নের শব্দে শব্দদূষণ হচ্ছে। একই সঙ্গে প্রতিদিনই মাইকিং করা হচ্ছে- যেখানে সুখবর, হারানো, বিভিন্ন রাজনৈতিক সমাবেশ, আতব চাল, পুরোনো পত্রিকা বিক্রি, ভাঙারি বিক্রি, বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি ও প্রচারে। এছাড়াও বিভিন্ন ক্লিনিকে পরিচিত বাড়াতে অমুক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বসছেন অমুক ক্লিনিকে প্রতিনিয়ত প্রচার করা হচ্ছ। কিছু কিছু মোটরসাইকেল হাইড্রোলিক হর্ণ ও আলাদা সাইলেন্সার ব্যবহার করে। যা থেকেও বিকট শব্দ হয়। শব্দদূষণ মানুষের শারীরিক ও মানষিক বিকাশে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। প্রতিনিয়ত এসব শব্দে অতিষ্ঠ পৌরবাসী। শুধু এসবের হর্ণই নয়- নির্মাণকাজে ব্যবহৃত মেশিন, ইটভাঙা মেশিন, টাইলস কাটা, গ্রিল, দা-বঁটিতে ধার দেওয়ার কাজে ও জেনারেটরের শব্দেও কান ঝালাপালা অবস্থা। দিন দিন শব্দ যেন আরো জোরালো হয়ে উঠছে। বিশেজ্ঞরা বলছেন- একজন মানুষ সাধারণত ৪০ ডেসিবল শব্দে কথা বলে। যা কানের জন্য সুস্থ মাত্রার শব্দ। কিন্তু এর বেশি হলেই ক্ষতিকর। যদি লম্বা সময় ধরে কেউ ৭০ ডেসিবলের উপরে শব্দের মধ্যে থাকে, তাহলে শ্রবণশক্তি ক্রমশ কমে যেতে থাকে। অতিরিক্ত শব্দ মস্তিস্কে প্রভাব ফেলবে। শব্দ উচ্চ রক্তচাপ তৈরি করে। মস্তিস্কে স্ট্রোকের সবচেয়ে বড় কারণই হলো উচ্চ রক্তচাপ। শহরের মুক্তির মোড়ের চর্মকার গোপাল বলেন, অকারণে বিকট শব্দে হর্ণ বাজানো হচ্ছে। যা কানে লাগে। কান ফেটে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়। বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। শব্দে আস্মিক ঘুম ভেঙে যায়। কাজে মনযোগ বসে না। আমার কানের সমস্যা তো হয়ই, পথচারিদেরও সমস্যা হয়। শব্দের দরকার আছে। কিন্তু এতো জোরে দরকার তো নেই।

শহরের মাস্টারপাড়া মহল্লাবাসিন্দা গৃহবধূ জুথি। তিনি বলেন, ৫ বছরের বাচ্চা আরশ একটি বেসরকারি স্কুলে পড়ে। প্রতিদিন সকাল ৮টার দিকে স্কুলে নিয়ে যেতে হয়। বাসা থেকে সামান্য একটু দুরে হওয়ায় বাচ্চার হাত ধরে হেঁটেই আসা-যাওয়া করা হয়। মাঝেমধ্যে বিকট শব্দ ও হর্ণে ভয়ে কানে হাত দিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে। নওগাঁ জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. আশিষ কুমার বলেন, অতিরিক্ত শব্দের কারণে শ্রবণ ক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে। যা সব বয়সিদের জন্য হুমকিস্বরূপ। এছাড়া অতিরিক্ত শব্দ পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত